রাঙামাটি–চট্টগ্রাম মহাসড়কের মগাছড়ি এলাকায় সড়কের এক পাশে মাটি ধসে পড়েছে। এতে করে এ সড়কটিতে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তবে সড়কের সম্ভাব্য ধস ঠেকাতে সাময়িকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ সড়কের উপরে বালির বস্তা ও ধসপ্রবণ স্থানে ত্রিপল দিয়ে ডেকে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। স্থায়ী ধারক দেয়াল নির্মাণ হলে সড়কটি টেকসই হবে বলে জানিয়েছে সওজ।
সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি জেলা রাঙামাটির সড়কে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে মগাছড়ি ছড়ায় পানির স্রোতে রাঙামাটি–চট্টগ্রাম সড়কের মগাছড়ি এলাকায় সড়কের পাশে ২০ মিটার অংশ ধসে যায়। তবে ধসে পড়া স্থানে ৩০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল বা ধারক দেয়াল নির্মাণের কাজ চলছে।
সওজ রাঙামাটি বিভাগ সূত্র জানায়, মগাছড়ি ছড়ার পাশে ঝুঁকিপূর্ণ সড়কের ৩০ মিটার অংশে রিটেইনিং ওয়ালের নির্মাণকাজের জন্য মাটি কাটার কাজ শুরু হয়। সড়কের পাশে মাটি কাটার ফলে ঝুঁকি তৈরি হওয়ায় বৃষ্টিপাতের সময়ে ২০ মিটার অংশে মাটি ছড়ার অংশে ধসে পড়ে। সাময়িকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ সড়কের ধস ঠেকাতে বালি ও ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়।
সওজ সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১৭ সালের জুনে রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় লন্ডভন্ড হয়ে যায় পাহাড়ি সড়কগুলো। পরবর্তীতে ২০২০ সালের অক্টোবরে রাঙামাটি–চট্টগ্রাম মহাসড়ক, রাঙামাটি–বান্দরবান, রাঙামাটি–মহালছড়ি (খাগড়াছড়ি) ও বগাছড়ি–নানিয়ারচর এ চারটি সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আরসিসি (রিইনফোর্সড সিমেন্ট কংক্রিট) রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পটির অধীনে চারটি সড়কে ১৫১ স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে রাঙামাটি–চট্টগ্রাম সড়কে ৪৯টি, রাঙামাটি–বান্দরবান সড়কে ৪০ ও রাঙামাটি–মহালছড়ি–নানিয়ারচর সড়কে ৬২টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়। রাঙামাটি–চট্টগ্রাম সড়কের ৪৯টি স্থানের মধ্যে একটি হলো মগাছড়ির ধসে পড়া জায়গাটি।
স্থানীয়রা বলছেন, সড়কের পাশে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ায় এই বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটির পাহাড়ি সড়কগুলোতে তেমন ভূমি বা পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেনি। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কারণে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বৃষ্টিপাতের ফলে ছোট–বড় মাটি ধসে পড়ছে। রাঙামাটি–চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের মগাছড়ি এলাকায় ২০ মিটার অংশে মাটি ধসে পড়ায় ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সওজ রাঙামাটি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা দৈনিক আজাদীকে বলেন, রাঙামাটি–চট্টগ্রাম মহাসড়কের মগাছড়ির সড়কের পাশের মাটি ধসে পড়া স্থানে আমাদের আগে থেকেই রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের জন্য মাটিকাটার কাজ করা হচ্ছিল। যে কারণে সাম্প্রতিক সময়ের বৃষ্টিপাতে সড়কের ২০ মিটার অংশের মাটি ধসে পড়ে। আমরা তাৎক্ষণিক সেখানে বালির ভরা, ত্রিপল দিয়ে ডেকে দিয়েছি। লাল পতাকা দিয়ে সতর্কতা চিহ্ন দেয়া হয়েছে। ধসে পড়া অংশে ৩০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ হচ্ছে, নির্মাণকাজ শেষে এই স্থানটিও টেকসই হবে।