চীনের অর্থায়নে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের গোঁয়াছি বাগান এলাকায় বিশেষায়িত বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের কাজ অবশেষে শুরু হচ্ছে। প্রায় এক একর জমিতে নির্মিত হবে ১৫০ শয্যার বার্ন ইউনিট। আগামী ২০২৪ সালের প্রথম দিকে কাজ শুরুর আশা করা হচ্ছে। চুক্তির ২২ মাসের মধ্যে হাসপাতাল তৈরির কাজ শেষ হলে সেই হিসাবে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে হাসপাতালটির কার্যক্রম শুরু করতে পারবে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল সকালে চীন সরকারের একটি প্রতিনিধি দল হাসপাতাল এলাকা পরিদর্শন করেন। চীনা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প এ বার্ন ইউনিট। কয়েকদিন আগেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এটা নিয়ে কথা হয়েছে। যত দ্রুত এ বার্ন ইউনিটের কাজ শুরু করা যায়। দুই থেকে তিন মাসের মতো লাগবে। ইতোমধ্যে তারা তাদের যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র নিয়ে আসবে। আগামী সপ্তাহেও জরুরি সভা আছে। কাজ শুরুর ২২ মাসের মধ্যে হাসপাতাল তৈরি হবে। আশা করছি দেড় বছরের মধ্যে ভালো কিছু হবে।
এদিকে চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের স্থান পরিদর্শনের আগে ৪ সদস্যের চীনা প্রতিনিধি দল ও অধ্যাপক সামন্ত লাল সেন চমেক হাসপাতালে আয়োজিত বার্ন ইউনিট সংক্রান্ত সভায় যোগ দেন।
উল্লেখ্য, সরকারের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ আলাদা অবকাঠামোতে চট্টগ্রামে বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করে চীন সরকার। এরপর চীনা প্রতিনিধি দল গত ২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর চমেক হাসপাতাল এলাকায় সম্ভাব্য স্থান পরিদর্শন করেন। এরপরের কয়েক বছরে চীনা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চমেক হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের কয়েক দফা বৈঠক হলেও বার্ন ইউনিটের নির্মাণ কার্যক্রম স্থান নির্বাচন জটিলতায় আটকে ছিল। পরবর্তীতে গত ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে চমেক হাসপাতালের গোঁয়াছি বাগান এলাকায় স্থান নির্বাচন করে চমেক হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের জানায় চীন সরকার। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে চট্টগ্রামে এসে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন, ভবনের নকশা অনুযায়ী পরিমাপ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো যাচাই করে চীনা প্রতিনিধিদল। সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ এ বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। হাসপাতাল চীনা সরকার তৈরি করলেও এটি পরিচালনার জন্য জনবল নিয়োগ করবে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান জানান, চীন সরকার বার্ন ইউনিটের অবকাঠামো নির্মাণ, যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র দিবে। জনবল এবং অন্যান্য ওষুধপত্র আমাদের।