বার্ন ইউনিটের নির্মাণ কাজ শীঘ্রই

গোঁয়াছি বাগানে প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী । দুই বছরের মধ্যে ভবন নির্মাণ শেষ করতে চায় চীন । চমেক হাসপাতালে চাপ কমাতে সেবা বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৭ জুলাই, ২০২৪ at ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের গোঁয়াছি বাগান এলাকায় ১৫০ বেডের বিশেষায়িত ‘বাংলাদেশচায়না ফ্রেন্ডশিপ বার্ন ইউনিট চট্টগ্রাম’ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শিগগিরই শুরু হবে। আমরা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছি। এটি যেহেতু একনেকে পাস হয়ে গেছে, আর কোনো সমস্যা নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে যাচ্ছেন। তিনি দেশে ফিরলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কাজটা করানোর ইচ্ছে আছে আমার। এ মাসেই কিংবা যত দ্রুত সম্ভব এটা করানোর চেষ্টা করব।

গতকাল শনিবার সকাল ৮টার দিকে বার্ন ইউনিট প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের পর তিনি এসব কথা বলেন। পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী চমেক হাসপাতালের কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চীনের প্রতিশ্রুতি হচ্ছে, দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে তারা ভবন নির্মাণের কাজটা শেষ করবে। জনবল, যন্ত্রপাতি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমি যেভাবে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট একদিনে পুরোপুরি চালু করতে পেরেছিলাম, এক্ষেত্রেও আমার টার্গেট সেটিই।

সভায় চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন হাসপাতালের বিষয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এছাড়া হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরাও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে তাদের কাজের প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন।

সবার কথা শুনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ আমাকে ডাক্তার বানিয়েছে। আমি চট্টগ্রাম মেডিকেলকে আমার সেকেন্ড হোম মনে করি। এখানে হাসপাতালের পরিচালক ও কলেজের অধ্যক্ষ আছেন। আমি একটি অনুরোধ করবো, আপনারা আমাকে একটি তালিকা করে দেন। কোনটা কাজটা আগে করতে হবে, কোনটা পরে। ঢাকার পরে চট্টগ্রামের অবস্থান। অথচ আমাকে এখন শুনতে হচ্ছে, এই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে এমআরআই মেশিন নষ্ট। এটি একজন ডাক্তার হিসেবেও আমার শুনতে খারাপ লাগছে। আজকে (গতকাল) আমি এখানে ইউরোলজি ওয়ার্ডে গিয়ে রোগীর চাপ দেখেছি। কঙবাজার, রাঙামাটি, নোয়াখালী থেকে রোগী এখানে আসছে। এখন এক্ষেত্রে যদি সেবা বিকেন্দ্রীকরণ করা যায়, তবে এই চাপটা আর থাকবে না। আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কিন্তু সেটিই।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও দেশে চিকিৎসা নেন। আমি মাননীয় সংসদ সদস্যদের বলেছি, আপনারা যার যার এলাকার স্থানীয় হাসপাতালে গিয়ে যদি নিয়মিত চেকআপ করান, তবে মানুষের মধ্যে দেশের হাসপাতালের প্রতি আস্থা বাড়বে। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান উন্নত হবে। মানুষ চিকিৎসার জন্য আর বিদেশে যাবে না।

ডাক্তারদের উদ্দেশ্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমি একটি সরকারি হাসপাতালে বিকেল ৫ পরিদর্শনে গিয়ে কাউকে পাইনি। আমার কাছে এ রকম প্রমাণ আছে। আপনাদের প্রতি অনুরোধ করব, আপনারা আমাকে সার্ভিস দেন। আপনাদের জন্য যা দরকার করব। আপনাদের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে মিটিং করেছি। পার্লামেন্টে এটি নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিশ্রম করে যাচ্ছি। চিকিৎসকদের সুরক্ষা, চিকিৎসকদের মানসম্মান এটা আমার টপ প্রায়োরিটি। আমার চিকিৎসকদের ভালোভাবে রাখতে পারলে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে তারা থাকবে। আমি যদি তাদের বাসস্থান ঠিক রাখতে না পারি, তাহলে কোনোদিন তাদের থেকে সার্ভিস আশা করতে পারি না। তাদের জন্য চিকিৎসার সব সাপোর্ট দিতে হবে। তাহলে ঢাকা শহরে রোগীর চাপ কমে যাবে। আমি আপনাদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে যাব না। যেটুকু পারব সেটুকুই বলব। একদিনে বা রাতারাতি সবকিছু সমাধান করতে পারবো না। আপনারা আমাকে সহযোগিতা করলে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।

সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন, চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপবিত্র আশুরা ১৭ জুলাই
পরবর্তী নিবন্ধব্রিজ আছে, নেই সংযোগ সড়ক