বারবার দুর্ঘটনা, দুর্ভোগ আর কতদিন

বোয়ালখালী প্রতিনিধি | সোমবার , ৮ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ

ঘড়ির কাঁটা সকাল ৯টা পেরিয়েছে। কালুরঘাট সেতুর পশ্চিম পাড়ে গাড়ির দীর্ঘ লাইন। শত-শত পথচারীর জটলা ঠেলে পায়ে হেঁটে ব্রিজের উপর উঠতেই দেখা গেল নিরাপত্তা রেলিংয়ের সাথে কাৎ হয়ে ঝুলে আছে একটি ওষুধ কোমপানির ভ্যান। জানা গেল, কিছুক্ষণ আগে বোয়ালখালীমুখী এ ভ্যানটি রেলিংয়ের সাথে কাৎ হয়ে আটকে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এসময় দেখা গেল লক্ষী দে নামে কর্মজীবী এক নারী চিৎকার ও চেঁচামেচি করছেন। নগরীর সিএন্ডবি এলাকায় বেসরকারি একটি কোমপানিতে কর্মরত ওই নারীকে সকাল সাড়ে ৯ টার মধ্যেই কর্মস্থলে পৌঁছাতে হবে। কিন্তু সেতুর এ জ্যামের কারণে আটকে রয়েছেন তিনি। পরে পায়ে হেঁটে হাফিয়ে হাফিয়ে সেতু পার হচ্ছিলেন। এ সময় প্রায় কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি নিজে-নিজেই বলে যাচ্ছিলেন- ‘মরার সেতুটি ভেঙে গেলেই নিস্তার পেতাম আমরা’। শুধু লক্ষী নয়, গতকাল রোববার সকালে কালুরঘাট সেতুর উপর ভ্যানটি বিকল হওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে শত-শত কর্মজীবী নারী-পুরুষ ও অফিসগামী মানুষকে। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই জানান, সকালে কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সেতু পার হতে গিয়ে দেখেন একটি ভ্যান বিকল হয়েছে। আর সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে আছে। মুহূর্তেই শত-শত গাড়ির জট লেগে যায় উভয় পাড়ে। এমনকি দোহাজারী থেকে ছেড়ে আসা শহরমুখী যাত্রীবাহী ট্রেনটিও আটকে থাকে অনেকক্ষণ। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বিকল ভ্যানটি সরিয়ে নিলেও যান চলাচল স্বাভাবিক হতে আরো কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। এতে হঠাৎ করে নিত্য যাতায়াতরত কর্মজীবী মানুষকে পড়তে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগে। কেউ কেউ নৌকা বা সামপানে করে নদী পাড়ি দেন। স্থানীয় গোমদন্ডী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আরেফা খানম বলেন, চাকরি বাঁচাতে গিয়ে বাধ্য হয়ে আমার মত অনেককেই নৌকাযোগে পার হয়ে কর্মস্থলে পৌঁছাতে হয়েছে। সেলিম মাহমুদ নামের অপর এক শিক্ষক বলেন, আমি বাইক নিয়ে সকাল সাড়ে ৯ টা হতে দীর্ঘ এক ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিলাম সেতুর পশ্চিম পাড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে পরে নতুন ব্রিজ হয়ে বিকল্প পথে কর্মস্থল বোয়ালখালীতে পৌঁছেছি। এ সময় তিনি জানতে চান ‘এই দুর্ভোগে আর কতদিন ? ব্রিজের টোল অফিসে দায়িত্বরত জাহাঙ্গীর আলম নামের এক কর্মচারী বলেন, আমাদের লোকজনের সহায়তায় ভ্যানটি সরিয়ে প্রায় সাড়ে ১০টা নাগাদ সেতুতে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৩০ খৃষ্টাব্দে কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিতব্য ও বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ জরাজীর্ণ সেতুটিতে কোনো না কোনো কারণে প্রতিদিনই যানজট লেগে থাকে। আর এতে করে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয় সেতু ব্যবহারকারী কয়েক লক্ষ মানুষকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজনজীবনে বহুমুখী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে : ড. মইনুল
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশবাড়িয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী আরিফুলকে আওয়ামী লীগের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি