বারইয়ারহাট সড়কে লক্কর ঝক্কর বাসে ভোগান্তি

ভাড়া বেশি, সেবা কম

মীরসরাই প্রতিনিধি | শনিবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২২ at ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম থেকে বারইয়াহাট সড়কের লক্কর-ঝক্কর বাসগুলোর মান ও যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়টি বর্তমানে জনমুখে আলোচিত বিষয়।
বিভিন্ন পেশা-শ্রেণীর ভুক্তভোগী যাত্রীদের অভিযোগ চট্টগ্রাম থেকে মীরসরাই উপজেলা অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের এই রুটে চয়েস, উত্তরাই স্থানীয় বাহন। কিন্তু নিন্মমানের যাত্রী সেবা, সংকীর্ণ আসন, ভাঙাচোরা আবর্জনাময় সিট, ফ্যানের হুক আছে ফ্যান নেই, চলার সময় বিকট শব্দ সহ লক্কর-ঝক্কর গাড়িগুলো চলছে এই রুটে। অথচ ভাড়া নিচ্ছে আন্তঃজেলা অন্যান্য বাস থেকেও অনেক বেশী। ১০০ টাকা দিয়ে বিরতিহীন আন্তঃজেলা বাসে চড়ে যাতায়াত করা যায় অনায়াশেই, কিন্তু এই গাড়িগুলো উল্টো ১৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে নিন্মমানের যাত্রীসেবা দিচ্ছে। নিন্মমানের এসব গাড়ীতে প্রতিদিন মানুষ ভোগান্তির কবলে। ভুক্তভোগি বারইয়াহাটের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম (৪৮) বলেন, অনেক সময় নানা কারনে বাধ্য হয়ে চয়েস বাসে করে আসা যাওয়া করি। অথচ সিটগুলো এতো চিপাচাপা যে কিছুক্ষণের মধ্যেই হাঁটুতে ব্যাথা হয়ে যায়। সুস্থ মানুষই যেন অসুস্থ হতে বাধ্য।

আবার লক্কর-ঝক্কর বড়ির কারনে প্রতিটি বাসের পুরো বাস জুড়েই শব্দে বেসামাল হয় চলন্ত অবস্থায়। অথচ ঢাকা বা ফেনী-নোয়াখালীর আন্ত:জেলা বাসের তুলনায় ভাড়া নিচ্ছে বেশী। ভুক্তভোগী অপর যাত্রী ব্যাংক কর্মকর্তা হাসান সাইফ উদ্দিন বলেন, কয়েকদিন আগে চয়েস বাসে ভোগান্তি নিয়ে একটি রম্যছড়া লিখার পর সেটি ভাইরাল হয়েছে। এতেই বোঝা যায় মানুষ কতোটা দুর্দশায় পড়ে যাতায়াত করছে। তিনি আরো বলেন, বারইয়াহাটে বাসগুলো পুরো মহাসড়কের অর্ধেক দখল করে রাখে এতে সাধারণ মানুষের চলাচলের বিঘ্ন ঘটে।

এ বিষয়ে চয়েস বাস শ্রমিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ আবু নাছের পিন্টু বলেন, বাসের হেলপার কন্টাকট্রারদের সাথে সবসময় নানা অভিযোগে ঝগড়া হয়ে থাকে। আমরা মালিকদের বিষয়গুলো জানিয়েও কোন প্রতিকার পায়না। অবশেষে এই রুটের প্রায় ১৩০০ শ্রমিকের মধ্যে আমাদের সংগঠনের ৩শত শ্রমিকের স্বাক্ষরসহ সভাপতি বিমল চন্দ্র নাথ ও সেক্রেটারী অলি আহমদ প্যানেল মালিক সমিতির কাছে একটি লিখিত পত্র দিয়েছি। এতে যাত্রীদের সকল দাবির বিষয়ে বাসের মান্নোনয়নের কি উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। নচেৎ শ্রমিকরাই যাত্রীদের সাথে একাত্ম হয়ে আন্দোলনের কর্মসূটি দিবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে চয়েস বাস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, আমরাও বাসগুলোর মানোন্নয়ন নিয়ে কিছু বাসের মালিকদের নিয়ে প্রতিকূলতায় পড়ি। কারন সকল বাসের মালিকের সামর্থ্য তো আর এক নয়। তবুও আমরা শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে শীঘ্রই বসবো। ইতিমধ্যে বাসভাড়া কমানোরও প্রস্তাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। তবুও সভার মাধ্যমে সেবার মানোন্নয়ন উদ্যোগ শীঘ্রই নেয়া হবে বলে জানান তিনি। আবার মহাসড়কে লাইন ধরে পার্কিং করে রাখার বিকল্প ব্যবস্থাও শীঘ্রই করা হবে জানান তিনি। এইসব বিষয়ে মীরসরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুর রহমান বলেন, চয়েস বাসের মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ সকলের নাকি কিছু বাধ্যবাধকতার বিষয় আছে। তবুও ইতিমধ্যে সবাই বাসগুলোর মানোন্নয়ন সহ যাত্রীসেবার মানোন্নয়নের উদ্যোগ নিবে বলে প্রশাসনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএক দশক পর পলোগ্রাউন্ডে আসছেন শেখ হাসিনা
পরবর্তী নিবন্ধছেলের মৃত্যুর খবরে মারা গেলেন মা