‌‌‌‌’বাবা হয়ে তুমি আমার সাথে এ কেম‌ন আচরণ করলে?’

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:৪৩ অপরাহ্ণ

নিজের মেয়েকে ‌জোরপূর্বক ধর্ষণের অ‌ভিযোগে বাবার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বাবার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফেরদৌস আরা। এ সময় আদালত অভিযুক্তকে ফাঁসিতে ঝু‌লিয়ে শাস্তি কার্যকরের নির্দেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি না‌সির মোল্লা ঝালকা‌ঠি জেলার কাঠা‌লিয়া ধানাধীন শৌলজালিয়া গ্রামের মৃত জ‌লিল মোল্লার ছেলে। তবে তি‌নি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থানাধীন পতেঙ্গা হাউ‌জিং কলোনির বাসিন্দা।

ভিক‌টিমের বয়স ১৩ বছর। জানা যায়, ভিক‌টিমের মাকে আসামি প্রথমে বিয়ে কর‌ছিল পরে তাদের সংসার ভেঙে গেলে ভিক‌টিমের মা অন্যত্র বিয়ে করেন।

ট্রাইব্যুনালের বি‌শেষ পিপি নাসের বলেন, বাবা মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনা অনাকা‌ঙ্খিত, আমার এই ঘটনা প্রমাণ ক‌রতে সক্ষম হয়েছি, অ‌ভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃ্ত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।

এভা‌বে ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলার অ‌ভিযোগ প্রমা‌ণিত করতে পারলে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ হিসাসে ভালো লাগে।

ট্রাইব্যুনালের বি‌শেষ পি‌পি খন্দকার আ‌রিফুল ইসলাম বলেন, আমরা রাস্ট্রপ‌ক্ষ সন্তুষ্ট। তবে এই রায়টা সমাজের জন্যেএকটা বার্তা বয়ে আনবে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে পতেঙ্গা ভাড়া বাসায় ঘটনার‌ দিন মা ঘরে না থাকার সুবাধে মেয়েকে নিজ রুমে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় ভিক‌টিম তার বাবাকে প্রশ্ন করে বলে, ” তু‌মি আমার বাবা হয়ে আমার সাথে এমন কেম‌ন আচরণ করলে?

তখন অভিযুক্ত পিতা বলে, কে তোর বাবা, আমি যে তোর বাবা তার গ্যারান্টি কি? তোর প্রকৃত পিতা কে? তা তোর মা-ই জানে’

পরে ভিকটিম নিরুপায় হয়ে ভিক‌টিম তার খালাকে বিস্তা‌রিত ঘটনা খুলে বলে। পরে বাবা‌র বিরুদ্ধে প‌তেঙ্গা থানায় এজাহার দায়ের করে ভিকটিম। পরে তদ‌ন্ত শেষে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শে‌ষে বাবার বিরুদ্ধে অ‌ভিযোগ প্রমা‌ণিত হওয়াই বাবার বিরু‌দ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশের আদেশ দেন আদালত।

আদালত সূত্র জানায়, রায়ের দিন ভিক‌টিম আসামির বাবা নয় বলে দাবি করে। এবং তার বিরু‌দ্ধ দেওয়া রায়‌টি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা কর‌ছিল।

যদিও এর আগে আদালত ডিএনএ টেস্ট করে প্রমাণ করে যে ভিক‌টিমই তার মেয়ে। রায়ে আদালত মন্তব্য করে, পিতা তার মেয়ের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা। ঐ জায়গাটা য‌দি এরকম হয় মেয়েরা কোনভাবে নিরাপদ নয়। আদালতে এরকম জঘন্য ঘটনার ছাড় নাই।

এই অপরাধের উপযুক্ত শা‌স্তি না হলে সমাজে খারাপ ম্যাসেজ যাবে। অতএব এরকম অপরা‌ধ যাতে পুনরায় না ঘটে। রায় প্রচার শেষে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন বিচারক নিজেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভুয়া কাগজে দলিল রেজিস্ট্রেশন, হাটহাজারীর সাব-রেজিস্ট্রার কা রা গা রে
পরবর্তী নিবন্ধভারতকে ২৫৭ রানের টার্গেট টাইগারদের