বাবা, অনেক কিছু বলিনি কখনো–
বলাও হয়নি, হয়তো জানতেও পারোনি।
শৈশবের খাতায় তুমি ছিলে এক নিষ্ঠুর সময়রেখা–
যে ঘুম ভেঙে দিত সকালবেলা,
বারণ করত মাঠে ছুটতে, আর বোঝাতে চাইতো
‘ভবিষ্যত’ নামে এক অদৃশ্য ভয়ের কথা।
তুমি কখনো গল্প বলোনি, কাঁধে হাত রাখোনি,
আমার ডায়েরির পাতায় তোমার কোন কবিতা ছিল না।
তবু–পিছনে তাকালে দেখি– সব গল্পেই তুমি আছো।
হাতের কাছে ছিলে, তবু একটা দূরত্ব ছিল বরাবর–
কঠিন মুখ, হিসেবি গলা,
অভিমান জমতো আমার ছোট ছোট প্রশ্নে।
আজ বুঝি, তোমার নীরবতাই ছিল ভালোবাসার ভাষা,
আর তোমার অনুপস্থিতি– ছিল দায়িত্বের ছায়া।
তুমি হয়তো জানো না,
তোমার কাঁধে মাথা রাখতে চেয়েছিলাম একদিন–
শুধু একবার, নিঃশব্দে, কোনো কৈফিয়ত ছাড়াই।
সে কথা আর কখনো বলা হলো না,
বলতেও পারি না আজ–
তুমি যেখানেই থাকো, শুধু এইটুকু জেনে রেখো–
আমি ভালবাসি, তোমার মতো করে, নিঃশব্দে,
শান্ত হ্রদের স্নিগ্ধ, স্বচ্ছ জলের গভীরতায়।