এম এ আজিজ স্টেডিয়াম(যেটা আগের নাম) বর্তমান নাম জেলা স্টেডিয়াম চট্টগ্রাম। যেটি চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের একমাত্র মাঠ। যেখানে অনেকগুলো ইভেন্ট আয়োজিত হয়। শুধু তাই নয়, অনেক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ইভেন্টও আয়োজন করা হয় এই মাঠে। তাছাড়া দেশে ঢাকার পরে একমাত্র চট্টগ্রামে নিয়মিত ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, ভলিবল, হ্যান্ডবল থেকে শুরু করে অনেকগুলো লিগ আয়োজন করা হয়। অথচ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ হুট করে প্রথমে দশ বছরের জণ্য বলা হলেও পরে ২৫ বছরের জন্য এই স্টেডিয়ামটি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে বরাদ্দ দেয়। যা নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন। চট্টগ্রামের সাবেক এবং বর্তমান ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া সংগঠক, কোচ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং ক্রীড়ামোদী মানুষ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ে। সমাবেশ, মানব বন্ধন সহ নানা কর্মসুচি পালিত হয়। এরই মধ্যে এএফসির দুটি টুর্নামেন্ট আয়োজনের জণ্য বাফুফে এবং এএফসির কর্মকর্তারা স্টেডিয়াম পরিদর্শন করে গেছেন। আর সে টুর্নামেন্টের জন্য স্টেডিয়ামের বেশ কিছু সংস্কার কাজের সুপারিশ করা হয় এএফসির পক্ষ থেকে। সে সব সংস্কার কাজও শীঘ্রই শুরু করতে চায় বাফুফে। তবে যেহেতু স্টেডিয়ামের স্থায়ী বরাদ্দের বিরোধিতা করছে চট্টগ্রামের মানুষ তাই শংকা দেখা দিয়েছে বফুফে কি তাহলে স্থায়ী বরাদ্দের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে ?
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক মনজুর আলম মঞ্জু। যিনি চট্টগ্রামেরই মানুষ। তিনি আবার বাফুফের ন্যাশনাল টিমস কমিটি সহ একাধিক কমিটির সদস্য। তার সাথে বাফুফে সভাপতিরও একটি সু সম্পর্ক রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়াটা উচিত। বাফুফে সভাপতি তাবিত আউয়ালও তাতে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মঞ্জু। কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকদের সাথে এক অনানুষ্টানিক আলোচনায় মঞ্জু জানিয়েছিলেন বাফুফে সভাপতির সাথে তার কথা হয়েছে। তিনি আলোচনার মাধ্যমে একটি সুন্দর সমাধানের দিকে যেতে চান। বাফুফে সভাপতি গত মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়োর সাথে লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছেন। সেদিনই মনজুর আলম এবং বাফুফে সহ সভাপতি ফাহাদ মোহাম্মদ আহমেদ করিম (তিনিও চট্টগ্রামের মানুষ) এর সাথে বাফুফে সভাপতির কথা হয়েছে। তারা সভাপতিকে চট্টগ্রামে আসতে অনুরোধ জানান। আর তিনি রাজিও হয়েছে বলে জানান মঞ্জু। যদি খুব বেশি ব্যস্ততা না থাকে তাহলে আগামী রোববার চট্টগ্রাম আসতে পারেন বাফুফে সভাপতি তাবিত আউয়াল। তিনি চট্টগ্রামের দায়িত্বশীল ব্যক্তি সহ ক্রীড়া সংগঠকদের সাথে আলোচনা করে কিভাবে একটি সুন্দর সমাধানে পৌছা যায় সে লক্ষ্যে কাজ করবেন বলেও জানা গেছে। যেহেতু এএফসি দুটি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষনা করেছে। আর সে দুটি টুর্নামেন্টের জন্য চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামকে ভেন্যু হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে তাই এই দুটি টুর্নামেন্ট কিভাবে সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়েও আলোচনা করবেন বাফুফে সভাপতি। মনজুর আলম জানিয়েছেন বাফুফে চাইছেনা কোন ধরনের বিতর্কে জড়াতে। যেহেতু বাফুফে এবং চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা, দু পক্ষই কাজ করছে দেশের খেলাধুলার উন্নয়নে তাই দুপক্ষের মাঝে বৈরী সম্পর্ক সৃষ্টি করে খেলাধুলার যে উন্নতি হবেনা সেটা বেশ ভালই জানা দুপক্ষের। তাই চট্টগ্রামের সংগঠকরাও চাইছে আলোচনার মাধ্যমে এবং সন্তোসজনক সমাধান হোক। চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে অতীতেও এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ, এস এ গেমস ফুটবল সহ নানা আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছে। আর এটি বিশ্বের ৮২ তম টেস্ট ভেন্যু। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয় এই মাঠে। তাই এই মাঠ নিয়ে টানা হেচড়া করাটা কারো জন্য মঙ্গলজনক হবেনা বলে মনে করছেন চট্টগ্রামের সংগঠকরা। এই স্টেডিয়ামটি এককভাবে ফুটবল ফেডারেশনকে দিয়ে দিলে চট্টগ্রামের স্থানীয় ফুটবল লীগ সমুহও ব্যাহত হবে। কাজেই তাতে যে ফুটবলেও ক্ষতি হবে সেটা বুঝতে পারছেন চট্টগ্রামের ফুটবল সংগঠকরা। যেহেতু স্টেডিয়ামের সংস্কার করতে বড় অংকের অর্থ ব্যয় হবে সেহেতু সংস্কার শেষে বাফুফে এবং চট্টগ্রাম জেরা ক্রীড়া সংষ্থার মদ্যে একটি চুক্তি হতে পারে। যখন বাফুফের দরকার হবে তখন মাঠ দিতে হবে । অবশ্য এ কাজটা অতীতেও হয়ে আসছে। কাজেই সমঝোতার মাদ্যমে সবকিছুই করা সম্ভব বলে মনে করছে চট্টগ্রামের ক্রীড়া সংগঠকরা। তাইতো চট্টগ্রামের সংগঠকরা এখন বাফুফে সভাপতির আগমনের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি এসে আলোচনার মাধ্যমে একটি সুন্দর সমাধান বের করে দেবেন। যাতে এই স্টেডিয়াম নিয়ে আর কোন কর্মসুচি পালন করতে নাহয়।