বান্দরবান হাসপাতালে আইসিইউ ব্যবস্থাসহ আধুনিক সুযোগ–সুবিধা যুক্ত করতে নির্মিত নতুন ভবনটি এখনো চালু হয়নি। প্রশাসনিক জটিলতায় হাসপাতালের নতুন ভবনে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালু না হওয়ায় রোগীরা শয্যা সংকটসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা পাচ্ছেন না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন দূরদুরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা গরীব অসহায় রোগীরা।
সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, পিছিয়ে পড়া বান্দরবান জেলার তিন লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবার কেন্দ্রস্থল হলো বান্দরবান জেলা হাসপাতাল। সেবার মান বাড়াতে ও চিকিৎসা ব্যবস্থাকে অত্যাধুনিক করতে একশ শয্যার হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত করে আধুনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে সরকার। ২০১৯ সালে ৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রকৌশলের অর্থায়নে দশতলা নতুন আধুনিক ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে ভবনের শতভাগ কাজ শেষ হলেও প্রশাসনিক জটিলতায় আজও চালু করা যায়নি। হাসপাতালের নতুন এ ভবনে ১০টি আইসিইউ বেড, ৫টি সিসিইউ বেড, ২০টি আইসোলেশন বেড, সার্জারি ইউনিট, গাইনি ওয়ার্ড ও বিভিন্ন জটিল রোগের আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম বসানো হবে।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী রুপা বড়ুয়া ও সুজিত অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে আইসিইউ এবং সিসিইউ না থাকায় সামান্য সমস্যায়ও রোগীদের চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। হাসপাতালের পুরনো ভবনে পর্যাপ্ত পরিমাণ কেবিন এবং শয্যাও নেই। অথচ নতুন ভবন নির্মাণের পরও চালু করা হচ্ছে না সীমাবদ্ধতার অজুহাতে। নতুন এই ভবনে কবে নাগাদ কার্যক্রম চালু করা হবে সেটি এখন বান্দরবাসীর প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা দ্রুত নতুন ভবনে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালুর দাবি জানান।
এদিকে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকা, জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার অজুহাতে নির্মাণের পাঁচ বছর পরও নতুন ভবনে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু না করায় রোগীরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
বান্দরবান বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আমির হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নে নির্মিত ২৫০ শয্যার হাসপাতালের নতুন ভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে এগারো নভেম্বর। এখন হাসপাতালটি ভবনটি যেকোনো মুহূর্তেই চালু করা সম্ভব।
বান্দরবান গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, হাসপাতালের নতুন ভবনের কাজ প্রায় শেষ। বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ায় দ্রুত বৈদ্যুতিক কাজগুলো শেষ করে ভবনটি স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হাসপাতালের ২৫০ শয্যার এ ভবনে আধুনিক অনেক সুযোগ সুবিধা রয়েছে। বিশেষত দশ তলা ভবনে রোগী, দর্শনার্থী ও চিকিৎসকদের জন্য আলাদা আলাদা রোগভিত্তিক ওয়ার্ড, ৪টি আধুনিক লিফট, ১০টি আইসিইউ বেড, ৫টি সিসিইউ বেড, ২০টি আইসোলেশন বেড, সার্জারি ওয়ার্ড থাকবে। এছাড়াও আধুনিক জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকবে সার্বক্ষণিক।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. শাহীন হোসেন চৌধুরী বলেন, হাসপাতালের নতুন ভবনে অবকাঠামোগত কাজগুলো শেষ হয়েছে। এখন প্রশাসনিক অনুমোদন ও জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলেই খুব দ্রুত আধুনিক চিকিৎসা সুবিধার ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হবে। এটি চালু হলে সেবার মান অনেক বেড়ে যাবে। স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসা সেবায় পিছিয়ে পড়া বান্দরবানবাসী আরও এগিয়ে যাবে।












