বান্দরবান ছেড়ে যাচ্ছেন পর্যটকেরা

ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

বান্দরবান প্রতিনিধি | বুধবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২২ at ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ

ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞায় বান্দরবান ছেড়ে যাচ্ছেন বেড়াতে আসা পর্যটকেরা। জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সন্ত্রাসী বিরোধী যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে পর্যটকদের নিরাপত্তায় রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার দর্শনীয় স্থান ভ্রমণে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়।

প্রশাসন ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানায়, রুমা ও রোয়াংছড়ি দুটি উপজেলায় পর্যটকবাহী সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। উপজেলা সড়কগুলোর প্রবেশমুখে যানবাহন থামিয়ে দেয়ায় নীলগিরি ও থানচি উপজেলা ভ্রমণেও যেতে পারছেন না পর্যটকেরা। এতে বিপাকে পড়েছেন ভ্রমণে আসা শতশত পর্যটক। তবে উপজেলাগুলোতে অবস্থানরত পর্যটকেরা ইতিমধ্যে রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলা ছেড়ে চলে গেছেন। এদিকে পৌর শহরের বাহিরের কোনো পর্যটন স্পটে ভ্রমণে যেতে না পারায় বান্দরবান জেলা শহরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টে অবস্থানরত পর্যটকেরাও বান্দরবান ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞায় রোয়াংছড়ি উপজেলার দেবতাকুম, শীলবান্ধা ঝর্ণা, শিপ্পি পাহাড়, রুমা উপজেলার রহস্যময় বগা লেক, রাইক্ষ্যংপুকুর লেক, ক্যাওক্রাডং, তাজিংডং, জাদীপাই ঝর্ণা, তিনাপ সাইতার, রিজুক ঝর্ণাসহ আশপাশের দর্শণীয় স্থানগুলোতে সাময়িকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন না পর্যটকরা।

হোটেল হিলটনের ম্যানেজার আক্কাস উদ্দিন বলেন, রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার খবরে অনেকে অগ্রীম বুকিং বাতিল করেছেন। হোটেলে অবস্থানরত পর্যটকদের দুটি গাড়ি মঙ্গলবার সকালে নীলগিরিও যেতে দেয়া হয়নি। বান্দরবান পৌর শহরের বাইরে কোনো পর্যটন স্পটে ভ্রমণে যেতে না পারায় পর্যটকরা বান্দরবান ছেড়ে যাচ্ছেন। এতে পর্যটকদের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও।

ট্যুরিস্ট গাড়ির চালক মোহাম্মদ হাসান বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক ট্যুরিস্ট গাড়িগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। সকালে কয়েকটি গাড়ি নীলগিরি যাবার পথে মিলনছড়ি পুলিশ চেকপোস্টে আটকে দেয়া হয়। সবগুলো সড়কে চেকপোস্ট থাকায় পৌর শহরের বাইরে কোনো স্পটেই পর্যটকদের নিয়ে গাড়িগুলো যেতে পারছে না।
আইনশৃক্সখলা বাহিনীর তথ্যমতে, বান্দরবান জেলার রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী রাঙামাটির বড়তলি, বিলাইছড়ি, সাইজাম পাড়াসহ আশপাশের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে সশস্ত্র সস্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাসনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) প্রশিক্ষণের তথ্যের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। গত ১২ অক্টোবর থেকে জঙ্গী ও সন্ত্রাস বিরোধী সাঁড়াশি অভিযান চলছে। অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। হতাহতের ঘটনাও শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন সূত্রে। তবে নিরাপত্তা দায়িত্ব সূত্র থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, যৌথ বাহিনীর সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে সীমান্তবর্তী দুর্গম অঞ্চলগুলোতে। তাই পর্যককদের নিরাপত্তায় রুমা ও রোয়াংছড়ি দুটি উপজেলায় ভ্রমণে সাময়িক নিষেধ করা হচ্ছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ বলবৎ থাকবে। তবে রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলা বাজার স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীদের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশেখ রাসেল বেঁচে থাকলে আমরা মানবিক একজন নেতা পেতাম
পরবর্তী নিবন্ধরাজনীতি? বড্ড বিষাক্ত : গ্রেটা থুনবার্গ