বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে ১৬ বছর বয়সী এক মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে সড়ক নির্মাণ কাজের শ্রমিক। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা অন্য নির্মাণ শ্রমিকদের সহায়তায় জামাল হোসেন (৩২) নামের ঐ শ্রমিককে ধরে মাথার চুল কেটে, মুখে কালি মেখে ও গলায় জুতার মালা পরিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এদিকে রাঙামাটি জেলা শহরের ভেদভেদী এলাকায় ৩ বছরের এক শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে আপন দাদার বিরুদ্ধে। পুলিশ অভিযুক্ত দাদা সুভাষ কুমার চাকমা ওরফে জাগুলুক্কেকে (৬০) আটক করেছে। অন্যদিকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ একজনকে আটক করেছে।
বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে খেয়াং সম্প্রদায়ের ১৬ বছর বয়সী এক মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে সড়ক নির্মাণ কাজের শ্রমিক। গতকাল মঙ্গলবার ধর্ষক মো. জামাল হোসেনকে ধরে স্থানীয়দের কাছে সোপর্দ করে অন্য নির্মাণ শ্রমিকরা। স্থানীয়রা তার মাথার চুল কেটে, মুখে কালি মেখে ও গলায় জুতার মালা পরিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দেয়। অভিযুক্ত জামাল হোসেন বরিশাল জেলার নজরুল ইসলামের ছেলে এবং রোয়াংছড়ি–রুমা সড়ক নির্মাণ কাজে নিয়োজিত শ্রমিক।
স্থানীয়রা জানায়, মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরী সবসময় পাড়ার এ মাথা ও মাথা উদ্দেশ্যহীন ঘোরাঘুরি করে। গত সোমবার সন্ধ্যায় সড়ক সংস্কার কাজে নিয়োজিত শ্রমিক জামাল খামতাং পাড়ার পাশে কবরস্থান এলাকায় একা পেয়ে তাকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে ধর্ষণ করে। তার চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন গিয়ে ওই ভুক্তভোগী কিশোরীকে উদ্ধার করে। এ ঘটনা জানাজানি হলে পাড়ার লোকজন অভিযুক্ত জামাল হোসেনকে রাতভর খোঁজাখুঁজি করলেও সন্ধান পায়নি। তবে পরদিন মঙ্গলবার সকালে রাস্তার কাজে নিয়োজিত অন্য শ্রমিকরা তাকে আটক করে পাড়াবাসীর কাছে তুলে দেয়। পাড়াবাসী অভিযুক্ত জামাল হোসেনকে একটি স্কুলে আটকে রেখে ও মুখে কালি মেখে রোয়াংছড়ি থানার পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। রোয়াংছড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে জামাল।
রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহ্লাঅং মার্মা বলেন, ভুক্তভোগী মেয়েটি মানসিক ভারসাম্যহীন। ধর্ষণের ঘটনাটি শোনামাত্র পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে জামাল হোসেনকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে এর আগে পাড়াবাসী প্রাথমিক শাস্তিমূলক ধর্ষকের মাথার চুল কেটে, মুখে কালি মেখে ও গলায় জুতার মালা পরিয়ে ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকায় ঘোরায়। উদ্দেশ্য– এটা দেখে অন্যরা যাতে শিক্ষা পায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল করিম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে। ভুক্তভোগী এবং পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভুক্তভোগীর পরিবারের কেউ মামলা করলে মামলা নেওয়া হবে।
রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, রাঙামাটি জেলা শহরের ভেদভেদী এলাকায় ৩ বছরের এক শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে আপন দাদার বিরুদ্ধে। গত সোমবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিশুটির মা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দাদা সুভাষ কুমার চাকমা ওরফে জাগুলুক্কেকে (৬০) গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আটক করেছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী শিশুর মা জানান, গত রোববার রাতে তার মেয়ে দাদা এবং দাদির সঙ্গে ঘুমায়। পরদিন সোমবার সকালে শাশুড়ি মেয়ে এবং তার দাদাকে বিছানায় রেখে কাজে বের হয়। সকাল ৭টার দিকে মেয়ের কান্নার শব্দ শুনে আমি ছুটে যাই। মেয়ে বিছানা থেকে উঠে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে, দাদা তাকে স্পর্শকাতর জায়গায় স্পর্শ করেছে। আমি এটার কারণ জানতে চাইলে শ্বশুর আমার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করে। এক পর্যায়ে আমাদের মধ্যে হাতাহাতির মতো অবস্থা হয়।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. শওকত আকবর খান বলেন, যৌন নিপীড়নের শিকার শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
রাঙামাটির কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহেদ উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, দীঘিনালায় এক গৃহবধুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ অভিযুক্ত প্রতিবেশী আব্দুর রহমানকে(৩৫) গ্রেফতার করেছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে দীঘিনালা উপজেলার কবাখালী ইউপির উত্তর মিলনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, গৃহবধূ দীঘিনালার উত্তর মিলনপুরে শ্বশুর বাড়িতে গৃহস্থালি কাজ করছিল। এ সময় পাশ্ববর্তী আব্দুর রহমান ঘরে ঢুকে ঐ গৃহবধুকে জড়িয়ে ধরে। এ সময় গৃহবধুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আব্দুর রহমানকে আটক করে পুলিশকে সংবাদ দেয়। দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: জাকারিয়া জানান, ঘটনার খবর পেয়ে দীঘিনালা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ভিকটিম ও অভিযুক্তকে থানা হেফাজতে নেয়। এ ঘটনায় গৃহবধূ বাদী হয়ে দীঘিনালা থানার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০২০) এর ১০ ধারা রুজু করেছে। মামলা রজু হওয়ার পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।