বান্দরবানে চারদিন ধরে অবিরাম বর্ষণে বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধসে ঘরবাড়ি ও সড়ক বিধস্ত হয়েছে। পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থীরা। আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে দুর্গত পরিবার। এদিকে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সাতকানিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অর্ধ–লক্ষাধিক মানুষ। বন্যা কবলিত এলাকায় অভ্যন্তরীন সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কেরানীহাট–বান্দরবান সড়কের সাতকানিয়ার দস্তিদার হাটের পূর্ব পাশে সড়কের উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পাহাড়ি ঢলে বাজালিয়া–পুরানগড় সড়কের বৈতরনী এলাকার ব্রিজের এক পাশ ধসে গেছে। ফলে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শঙ্খ ও ডলুনদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। লোহাগাড়ার নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। এলাকার নদী, খাল ও ছড়ায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ডুবে গেছে মাছের খামার।
আমাদের চন্দনাইশ প্রতিনিধি জানান, পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় শঙ্খনদের পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় নদের পানি উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করার আশংকা রয়েছে। ফলে নদের উপকুলবর্তী দোহাজারী পৌরসভা, বৈলতলী, বরমা, বরকল, সাতবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভয়াবহ বন্যা আতংকে রয়েছে।
আমাদের বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, জেলার সাতটি উপজেলায় ১৯২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে তিন শতাধিকের মত লোকজন আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে পড়েছে জেলা সদরের ইসলামপুর, কাসেমপাড়া, লেমুঝিরি এলাকা, বালাঘাটা, কালাঘাটা, বনরুপা পাড়া, হাফেজঘোনা এলাকায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে বান্দরবান–কেরাণীহাট–চট্টগ্রাম মহাসড়ক, বান্দরবান–রাঙ্গামাটি সড়ক, লামা–সূয়ালক সড়ক, রোয়াংছড়ি–রুমা, থানচি অভ্যন্তরীণ সড়কের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে, কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে বান্দরবানে সাঙ্গু ও মাতামুহুরি দুটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী তীরবর্তী কয়েকশতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। পাহাড়ী ঢল ও বৃষ্টিতে আর্মীপাড়া, ইসলামপুর, শেরেবাংলা নগর এলাকার নিম্নাঞ্চলের শতশত ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। জলাবদ্ধতায় বালাঘাটা, কালাঘাটা, বনরুপা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থী।
লোহাগাড়া প্রতিনিধি জানান, ভারী বর্ষণে উপজেলার ডলু, টংকাবতী, হাঙ্গর, হাতিয়া, কুলপাগলি, বোয়ালিয়া খালসহ বিভিন্ন ছড়ার পানি বিপদ সীমান উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অনেক স্থানে খালের পানি গড়িয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের ক্ষেতখামার।
সাতকানিয়া প্রতিনিধি জানান, কয়েক দিনের প্রবল বর্ষন, সাঙ্গু, ডলুনদী ও হাঙ্গর খাল দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সাতকানিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে চরতি, কেঁওচিয়া, কালিয়াইশ, বাজালিয়া, পুরানগড়, ছদাহা, নলুয়া, আমিলাইষ ও ঢেমশাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের অর্ধ–লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার অভ্যন্তরীন সড়কের উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। চরতি এলাকার কিছু বসত ঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ফলে বন্যা কবলিত এলাকায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।












