বান্দরবানের রুমা উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে পাঁচ বন্ধু মিলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গতকাল বুধবার ভোরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ৫ জনের মধ্যে ৩ জনকে আটক করেছে। আটকরা হলেন– রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের আলেচু পাড়ার বাসিন্দা ক্যহ্লাওয়াং মারমা (৩০), উহাইসিং মারমা (২২) ও ক্যসাইওয়াং মারমা (২৩)। অভিযুক্ত অন্য দুইজন হলেন চহাই মার্মা (২০) ও ক্যওয়াংসাই মার্মা (২০)।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানান, রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে গত একমাস ধরে ওই পাড়ার পাঁচ যুবক ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্রমাগত ধর্ষণ করে আসছিল। প্রথমে একজন ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি অন্য বন্ধুদের জানালে পরে ওই পাঁচ বন্ধু মিলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করতে থাকে। পরে ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে সে তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়।
এদিকে গত মঙ্গলবার ঘটনাটি নিয়ে ওই পাড়ায় সামাজিক বিচার বসলে সেখানে পাইন্দু মৌজার হেডম্যান মংচউ মারমা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা গংবাসে মারমা অভিযুক্ত পাঁচ যুবককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেন। ঘটনাটি রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় জনগণ এ বিচার প্রত্যাহার করে এবং অভিযুক্তদের আটক করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠে। পুলিশ খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা শৈহ্লাচিং মারমা বলেন, ধর্ষকরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও হেডম্যানের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় ভুক্তভোগীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থদণ্ডের মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় বেআইনি বিচার–সালিশকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল করিম জানান, বিষয়টি নজরে আসার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে আটক করেছে। অভিযুক্ত অন্যদের আটকে অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
