বান্দরবানের সাইরু রিজোর্টের ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ

বান্দরবান প্রতিনিধি | সোমবার , ৩০ নভেম্বর, ২০২০ at ৮:৪৩ অপরাহ্ণ

বান্দরবানে বিলাসবহুল পর্যটন কেন্দ্র সাইরু রিজোর্টে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে ভ্যাট গোয়েন্দারা অভিযান চালিয়েছে। এসময় ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ মিলেছে। আজ সোমবার (৩০ নভেম্বর) ভ্যাট গোয়েন্দাদের একটি টিম এ অভিযান চালায়।
ভ্যাট গোয়েন্দা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভ্যাট গোয়েন্দার একটা দল আজ সোমবার বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় এলাকায় গড়ে তোলা বিলাসবহুল রিজোর্ট সাইরুতে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে। এতে প্রাথমিকভাবে ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির অনিয়ম পাওয়া গেছে।
পাহাড়ের এই রিজোর্টটি বান্দরবন শহর থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক রোডে অবস্থিত। এর মূসক নিবন্ধন নম্বর ০০১৫৭৭০৯৪-০৫০১। ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের একটি বিশেষ দল সাইরু রিজোর্টে অভিযানটি পরিচালনা করে।
সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দীন বান্দরবনের সাইরু রিজোর্ট প্রাঙ্গণে অভিযানটিতে নেতৃত্ব দেন।
পাশাপাশি ভ্যাট গোয়েন্দার আরেকটি দল সাইরু রিজোর্টের রাজধানীর বনানীস্থ হেডঅফিসেও অভিযান চালায়। কামাল আতাতুর্ক
এভিনিউর সফুরা টাওয়ারের ১৪ তলায় এর হেড অফিস। এতে উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
অভিযানে প্রাথমিকভাবে দু’টি অভিযানে ভ্যাট গোয়েন্দার দল ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে। গোয়েন্দারা ২০১৮ থেকে রিজোর্টের প্রকৃত বিক্রয় তথ্য উদ্ধার এবং কম্পিউটার থেকে তথ্যাদি জব্দ করেছে।
এতে দেখা যায়, স্থানীয় বান্দরবান ভ্যাট সার্কেলে রিজোর্ট কর্তৃপক্ষ প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে। যেমন সদ্যসমাপ্ত অক্টোবর ২০২০ কর মেয়াদের রিটার্নে (যা নভেম্বর ১৫ তারিখে দাখিলকৃত) তাদের হোটেলে সেবা বিক্রয় প্রদর্শন করেছে ১১.৩৯ লক্ষ টাকা, যার ওপর ১৫% হিসেবে আদর্শ হারে পরিশোধিত মূসক ১.৭০ লক্ষ টাকা এবং আদর্শ হার ব্যতীত বিক্রয় ৪ লক্ষ টাকা যার ওপর ৭.৫% হারে পরিশোধিত মূসক ৩০ হাজার টাকা। উদ্ধার করা বিক্রয় তথ্য অনুসারে, ভ্যাট গোয়েন্দার দল দেখতে পায় যে ঐ মাসে বিক্রয় হয় ১.২৯ কোটি টাকা যার ওপর ১৫% হারে প্রদেয় মূসক ১৯.৪৭ লক্ষ টাকা অর্থাৎ মূসকসহ মোট বিক্রয় ১.৪৮ কোটি টাকা।
এই হিসাব অনুসারে, শুধু অক্টোবর ২০২০ মাসে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে প্রায় ১৭.৪৭ লক্ষ টাকা।
ভ্যাট গোয়েন্দারা অন্যান্য মাসেও অনুরূপ ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছেন।
উদ্ধারকৃত তথ্যমতে, সাইরু রিজোর্ট গড়ে প্রতি মাসে ভ্যাট দিয়েছে প্রায় ১ লক্ষ টাকা কিন্তু প্রকৃত বিক্রয় অনুসারে ভ্যাট প্রযোজ্য হয় মাসে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।
সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দীন ও উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদ জানান, অভিযানে ভ্যাট গোয়েন্দার দলের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে সাইরু কর্তৃপক্ষ ক্রেতাদের কাছ হতে ভ্যাট আদায় করলেও তা যথাযথভাবে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। জব্দকৃত কাগজপত্র যাচাই ও আরো তদন্ত শেষে সাইরু রিজোর্টের বিরুদ্ধ ভ্যাট আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
সাইরু রিজোর্টের সত্ত্বাধিকারী রাংলাই ম্রো জানান, ভ্যাট গোয়েন্দা সংস্থার একটি দল হঠাৎ সাইরু রিজোর্ট ভিজিট করে বিভিন্ন কাগজপত্র দেখেছেন। ভ্যাটে অসঙ্গতির অভিযোগে ভ্যাটের কিছু কাগজপত্রও তারা নিয়ে গেছেন। তাৎক্ষণিক কোনো অসঙ্গতি তারা পাননি। কোনো ধরনের জরিমানাও করা হয়নি।
সাইরু রিজোর্ট সংশ্লিষ্ট ওয়াহিদ বাবুল বলেন, “ভ্যাট গোয়েন্দা সংস্থার একটি টিম সাইরু পরিদর্শন করেছে। পরিদর্শনের সময় বিভিন্ন কাগজপত্র তারা দেখেন। প্রায় সময় ভ্যাট গোয়েন্দারা ঝটিকা পরিদর্শন করেন।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধশতভাগ শততার মাধ্যমে বরকল সেতুর কাজ করার আহ্বান এমপির
পরবর্তী নিবন্ধনগর ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা আগুন দিয়েছে নাসিমন ভবনে