বান্দরবানের থানচিতে নদী-ঝিরি-ঝর্ণা পথে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

আলাউদ্দিন শাহরিয়ার, বান্দরবান | মঙ্গলবার , ৬ অক্টোবর, ২০২০ at ৬:২৩ অপরাহ্ণ

বান্দরবানের থানচিতে সাঙ্গু নদী এবং ঝিরি-ঝর্ণা পথে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে প্রশাসন।
বৃষ্টিতে সাঙ্গু নদীর পানি বেড়ে উজানে নৌচলাচল বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে থানচি উপজেলার দর্শনীয় স্থান নাফাকুম ঝর্ণা, অমিয়কুম ঝর্ণা, সাতভাইকুম ঝর্ণা, রেমাক্রী জলপ্রপাত, বড়পাথর, দেবতা পাহাড় এবং তীন্দু, বড়মদক এলাকাগুলো।
দুর্ঘটনায় প্রাণহানি এড়াতে আজ মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) থেকে থানচি উপজেলায় সাঙ্গু নদী, ঝিরি-ঝর্ণা পথে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন তবে থানচি উপজেলা সদর সহ জেলার অন্যান্য এলাকাগুলোতে দর্শনীয় পর্যটন স্পট এবং দৃষ্টিনন্দন ঝর্ণাগুলো ভ্রমণে কোনো ধরনের বাধা নেই। সবগুলো পর্যটন স্পটই খোলা রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. দাউদুল ইসলাম বলেন, “বৃষ্টিতে সাঙ্গু নদীতে পানি বেড়ে উজানে নৌচলাচল বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে থানচি উপজেলার নদী এবং ঝিরি-ঝর্ণা পথে নাফাকুম ঝর্ণা, অমিয়কুম ঝর্ণা, রেমাক্রী জলপ্রপাত সহ আশপাশের এলাকাগুলো। দুর্ঘটনা এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ স্পটগুলোতে পর্যটকদের যাতায়াত সাময়িক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও খুলে দেয়া হবে। তবে জেলার অন্য কোনো দর্শনীয় স্থান ভ্রমণে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই প্রশাসনের।”
এদিকে রবিবারও একটি দুর্ঘটনায় জাকারুল ইসলাম কানন (৩৫) নামে ঢাকার এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।
ইতিমধ্যে নাফাকুম ঝর্ণা, রেমাক্রী জলপ্রপাত, বড়পাথর, রুমা উপজেলার তিনাফ সাইতার ঝর্ণা, রিজুক ঝর্ণা, বগালেক, জাদিপাই ঝর্ণা, সদর উপজেলার শৈলপ্রপাত ঝর্ণা, রুপালী ঝর্ণা, আলীকদম উপজেলার দামতুয়া ঝর্ণা, করুকপাড়া ঝর্ণা, রোয়াংছড়ি উপজেলার দেবতাকুম সহ দর্শনীয় স্থানগুলোতে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অসংখ্য পর্যটকের।
তবে নাফাকুম ঝর্ণা সহ বিপজ্জনক দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণে বিশেষ বিশেষ জায়গায় প্রশাসনের নেই কোনো সতর্ক চিহ্ন।
স্থানীয় প্রশাসন এবং পর্যটন করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের দিকনির্দেশনা বা সতর্কতামূলক চিহ্ন সংযুক্ত কোনো সাইনবোর্ড না থাকায় ভ্রমণকারী পর্যটকেরা দিকবেদিক ছোটাছুটি বা চলাচল করতে গিয়ে হতাহতের ঘটনাগুলো ঘটছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় দর্শনীয় স্থানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার কোনো অগ্রগতিও নেই।
ভ্রমণকারী পর্যটক সাজ্জাতউল করীম, শারমীন নাজনীন, সাব্বির রহমান অভিযোগ করে বলেন, “প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বান্দরবান জেলায়। পাহাড়, আকাশ, নদী এবং ঝর্ণা এখানে মিলেমিশে একাকার। তবে অনুন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা, নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে ঘটছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। পর্যটন সমৃদ্ধ জেলা বান্দরবান ভ্রমণ পর্যটকদের নিরাপদ এবং ঝুঁকিমুক্ত করতে স্থানীয় প্রশাসন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নজর দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী অনুপম মারমা বলেন, “থানচি উপজেলায় এখনও পর্যটকের উপস্থিতি রয়েছে। নদী ও ঝিরি-ঝর্ণা পথে পর্যটকদের যেতে দেয়া হচ্ছে না তবে থানচি উপজেলা সদর এবং বান্দরবান-থানচি সড়কের দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণ করতে পারছেন পর্যটকরা।”
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল হক মৃদুল জানান, বৃষ্টিতে দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণ বিপজ্জনক হয়ে ওঠায় নদী ও ঝিরি-ঝর্ণা পথে পর্যটকদের ভ্রমণ বন্ধ রাখা হয়েছে তবে থানচি সদরের নীলদিগন্ত, সীমান্ত অবকাশ সহ আশপাশের এলাকাগুলো ভ্রমণে কোনো বাধা নেই। পর্যটকদের নিরাপত্তায় দুর্ঘটনা এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধনয় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করেছে র‌্যাব
পরবর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা