বাণিজ্যিক চাষাবাদে আসবে সমৃদ্ধি

পাহাড়ে বারি-২ জাতের কমলা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | সোমবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৭:০২ পূর্বাহ্ণ

বারি কমলা-২ আকারে ছোট ও গোলাকার। তিন বছর আগে খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণায় এই জাতের কমলা উদ্ভাবন করা হয়। তবে চাইনিজ ছোট জাতের এই কমলা পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়াও সিলেটের পাহাড়ি অঞ্চলে চাষাবাদের উপযোগী।
কমলা গাছে ঝুলছে গাঢ় হলুদ রঙের কমলা। গাছে পাতার চেয়ে যেন ফল বেশি। বাগান জুড়ে ছোট ছোট গাছের শাখায় শাখায় নতুন জাতের কমলা। নিয়মিত ফলদানকারী উচ্চ ফলনশীল চাইনিজ জাতের কমলা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদ করা গেলে পাহাড়ে কৃষি অর্থনীতি আরো সমৃদ্ধ হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। কেবল খেতেই সুস্বাদু নয়, দেখতেও বেশ সুন্দর। বারি-২ এর মিষ্টতার পরিমাণ প্রায় ৯ শতাংশ। খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মাতৃবাগানে এমন কমলার দৃশ্য চোখে পড়ে।
তবে কমলা জাতীয় ফলের গাছের ডাম্পিং, গ্রিনিং, গামোসিস রোগের সংক্রমণ বেশি। আক্রান্ত ফল সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে বা মাটির গভীরে পুঁতে ফেলতে হবে। তবে ফল পাকার সাথে সাথে ফল সংগ্রহ করতে হবে। এছাড়া বাগানে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে বাগানের পোকা দমন করা যায়। খাগড়াছড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের সূত্রে জানা যায়, পাহাড়ি কৃষি গবেষণার মাতৃবাগানে বারি কমলা-২ বা চাইনিজ কমলাগাছ রোপণ করা হয়েছে। বৈশাখ অর্থাৎ মে-জুনে রোপণের সময়। তবে পাহাড়ে নিয়মিত সেচের ব্যবস্থা করা গেলে বছরের অন্য সময়ও এই জাতের কমলার চারা রোপণ করা যায়। রোপণের ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। সঠিকভাবে যত্ন ও পরিচর্যা করলে প্রতিটি গাছ থেকে কমপক্ষে ৫০০-৬০০টি কমলা পাওয়া সম্ভব। গবেষণা কেন্দ্রে রোপণকৃত মাতৃবৃক্ষে বর্তমানে প্রচুর ফল ধরেছে।
মাতৃবাগানে পরিচর্যা করা মংসানই মারমা জানান, যত্ন সহকারে এই কমলা গাছের সেবা করতে হয়। যত বেশি পরিচর্যা করা যায় তত বেশি পরিমাণে ফল উৎপাদন করা সম্ভব। এই গাছগুলোতে নিয়ম অনুসারে ঔষধ প্রয়োগ করে পোকামুক্ত রাখতে হয়। সঠিকভাবে যত্ন নিলে এই কমলা খুব রসালো ও সুস্বাদু হয়।
খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুন্সী রাশীদ আহমদ জানান, খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র থেকে বারি-২ জাতের কমলা উদ্ভাবন করে। এটি বর্তমানে দেশে একটু একটু করে ছড়িয়ে পড়ছে। ইতিমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় বারি-২ কমলার চাষাবাদ হচ্ছে। ভবিষ্যতে কৃষকদের সামনে বারি-২ কমলার সম্ভাবনা তুলে ধরতে পারলে লাভজনক ফল ফসল হিসেবে পরিচিতি পাবে। বারি-২ কমলা সৌর্ন্দযবর্ধনকারী গাছ হিসেবেও বাড়ির আঙিনায় এবং ছাদে কমলার চাষাবাদ করা যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিয়ন্ত্রণ হারালো চালক, প্রাণ গেল ২ শিশুর
পরবর্তী নিবন্ধচকরিয়ায় ইয়াবাসহ একজন গ্রেপ্তার