চট্টগ্রামে বয়ে যাচ্ছে তাপদাহ। ফলে গরমজনিত নানা ধরনের রোগব্যাধি বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়া, জ্বর, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিউলাইটিস ও শ্বাসযন্ত্রের নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল এবং ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রোগীর চাপ বেড়েছে দেড় গুণ পর্যন্ত। এছাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগেও রয়েছে রোগীদের দীর্ঘ সারি। তীব্র গরমের এ সময়ে শিশু ও বয়স্কদের প্রতি আলাদা নজর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরমজনিত অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতে হলে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে বাইরের আখের রস কিংবা লেবুর শরবত টাইপের পানীয় পান করা যাবে না। তীব্র গরমে শরীর থেকে প্রচুর লবণ বের হয়ে যায়। তাই ওরস্যালাইন ও ডাব খেতে হবে। অনেকে বাইরের রোদ থেকে বাসায় গিয়ে ফ্রিজের পানি পান করে কিংবা ঠান্ডা পানিতে গোসল করে। এটি কখনোই করা যাবে না। বাসায় পৌঁছে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল কিংবা পানি পান করতে হবে। না হলে মাথা ব্যথা, সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গরমের সাথে মানানসই কাপড় পরতে হবে। বাইরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই ছাতা নিতে হবে। চমেক হাসপাতালে আসা রাউজানের বাসিন্দা হাসিনা বেগম বলেন, বাচ্চার জ্বর কমছিল না, তাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ডাক্তাররা নানা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে দেখেছেন। গতকাল সরেজমিনে চমেক হাসপাতালের মেডিসিন ও শিশু স্বাস্থ্য ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট বেডের বাইরে মেঝেতেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গরমের কারণে অনেক শিশুকে কান্নাকাটি করতে দেখা যায়। চমেক হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের কয়েকজন চিকিৎসক জানান, গরমজনিত রোগে বয়স্করা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। এছাড়া ওয়ার্ডে জ্বর নিয়ে প্রচুর রোগী ভর্তি হচ্ছে। চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী বলেন, গরমের সময় শিশুরা বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকিতে থাকে। এ সময় সাধারণ সর্দি, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিউলাইটিস এবং ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থাকে। শিশু ওয়ার্ডে কদিন ধরে এ ধরনের রোগীর চাপ অনেক বেড়েছে।
ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশীদ আজাদীকে বলেন, গরমজনিত কারণে আমাদের হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে। তাপদাহ এভাবে চলতে থাকলে ডায়ারিয়া রোগীর পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। এছাড়া জ্বরের রোগী বেড়েছে প্রচুর। তবে আমরা ডেঙ্গু বাড়ার আশঙ্কা করেছিলাম, সেটি বাড়েনি। অপরদিকে শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া বাড়ছে।
চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সেঁজুতি সরকার বলেন, গরমের প্রভাবে হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোর দুই জায়গাতে রোগীর চাপ বেড়েছে। আমরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছি।