জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হবে ভিন্ন আঙ্গিকে। সংসদ না থাকায় ২০২৫–২০২৬ অর্থবছরের বাজেট এবার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হবে। আগামী ২ জুন সোমবার বিকেল ৪টায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের বাজেট বক্তৃতা সম্প্রচার করা হবে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
সেখানে বলা হয়, আগামী ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জাতির উদ্দেশ্যে ২০২৫–২০২৬ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন। ঐদিন বিকাল ৪টায় ধারণকৃত বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত হবে।
এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে ‘ফিড’ নিয়ে অন্যান্য সব বেসরকারি টেলিভিশন ও বেতারে একই সময়ে জাতীয় বাজেট বক্তৃতা প্রচারের অনুরোধ করা হয়েছে তথ্য বিবরণীতে।
সবশেষ সংসদের বাইরে বাজেট দেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন ক্ষমতায় ছিল সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই বছরের ৯ জুন তখনকার অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ২০০৮–০৯ অর্থবছরের জন্য ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিলেন। সেদিনও ছিল সোমবার। বেলা ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হয়েছিল মির্জ্জা আজিজুল ইসলামের বাজেট বক্তৃতা। তারপর আওয়ামী লীগের চার মেয়াদে সাড়ে ১৫ বছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত টানা ১০ বার, আ হ ম মুস্তফা কামাল পাঁচবার এবং আবুল হাসান মাহমুদ আলী একবার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেন।
নির্বাচিত সরকারের আমলের এসব বাজেট জাতীয় সংসদেই উপস্থাপন করা হয়। পরে মাসজুড়ে সেই প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা হত সংসদে। জুন মাসের শেষ দিকে সংসদে পাস হত নতুন অর্থবছরের বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে তা কার্যকর করা হবে। তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এবার বাজেটের আকার সামান্য ছোট হবে বলে ধারণা দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। খসড়া অনুযায়ী বাজেটের আকার ঠিক হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার মত। ওই অংক চূড়ান্ত হলে স্বাধীনতার পর এই প্রথম বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় কমছে।