বাজেট নিয়ে অচলাবস্থায় রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় শাটডাউনে চলে গেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। বিবিসি লিখেছে, বাজেট নিয়ে অচলাবস্থার কারণে সরকারি কার্যক্রমে অর্থায়ন অক্টোবর এবং এরপর পর্যন্ত ব্যাহত হতে পারে। এতে দেশজুড়ে সাধারণ মানুষ তাদের জীবনযাত্রায় বিমানে ভ্রমণ করা থেকে শুরু করে চিড়িয়াখানা ভ্রমণ পর্যন্ত নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে পারে। রাজনৈতিক এই অচলাবস্থার কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় ৪০ শতাংশ কর্মী (প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার মানুষ) অবৈতনিক ছুটিতে চলে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এভাবেই অনুভূত হতে পারে শাটডাউনের প্রভাব। শাটডাউনে বিমানে ভ্রমণকারীরা নানাভাবে সমস্যায় পড়তে পারেন। তাদেরকে নিরাপত্তা চেকিংয়ের দীর্ঘ লাইনে পড়তে হতে পারে। আবার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ও পরিবহন নিরাপত্তা প্রশাসনের (টিএসএ) কর্মীরা বেতন না পাওয়ায় কাজে অনুপস্থিত থাকলে ফ্লাইট দেরি হতে পারে। এ ধরনের কর্মীদের ‘অপরিহার্য’ ধরা হয় বলে তারা হয়ত কাজে যাবেন। কিন্তু শাটডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা বেতন পাবেন না। ২০১৮–১৯ সালের শাটডাউনের সময় এই কর্মীদের অসুস্থতাজনিত ফোনকল বেড়ে গিয়েছিল এবং তাদের অনুপস্থিতির কারণে দেশজুড়ে ফ্লাইটে দেরি হয়েছিল। খবর বিডিনিউজের।
বিদেশ ভ্রমণের পরিকল্পনা যারা করেছেন তারাও সমস্যায় পড়তে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট সংস্থা বলেছে, ভ্রমণের কাজপত্র প্রক্রিয়াকরণ করতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে সময় বেশি লাগতে পারে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বেন কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীরা। শাটডাউন চলাকালে তারা কোনও বেতন পাবেন না। যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থার সদস্যরা কাজ চালিয়ে যাবেন। তবে তারাও বেতন পাবেন না।
বিবিসি’র গণমাধ্যম অংশীদার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সর্বাধিক বরখাস্তের শিকার হবে সরকারের ৫ টি বিভাগ– প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, পররাষ্ট্র ও নাসার কর্মীরা। কর্মীরা জীবিকার তাগিদে দ্বিতীয় আরেকটি চাকরি নিতে বাধ্য হতে পারেন, যেমনটি তারা অতীতে শাটডাউনের সময়ও করেছেন। যে কর্মীরা অপরিহার্য নন তারা বাড়িতে থাকতে বাধ্য হবেন। কিছু সংস্থা– যেমন : রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের (এনআইএইচ) কর্মী বরখাস্ত হওয়ায় চলমান গবেষণাকাজও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
শাটডাউনে কর্মী সংকট থাকায় ফেডারেল জমি, জাতীয় পার্ক ও জাতীয় উদ্যান বন্ধ হয়ে যেতে পারে। গতবার শাটডাউন চলাকালেও বিভিন্ন পার্ক ও উদ্যান দর্শণার্থীদের জন্য বন্ধ ছিল। কারণ, এসব স্থানে কাজ করা রেঞ্জার ও অন্যান্য কর্মীদেরকে বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছিল। এই কর্মীরা কাজে না থাকায় পার্ক ও উদ্যানগুলোতে ব্যাপক ভাঙচুর, চুরি ও পরিবেশের ক্ষতির মতো ঘটনা ঘটেছিল। ফলে এবারের শাটডাউনে এই স্থানগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার দাবি তুলেছেন পার্ককর্মী ও সংরক্ষণকর্মীরা।