স্বাধীন বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট উত্থাপন হতে যাচ্ছে আজ। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আগামী অর্থবছরের জন্য (২০২৩–২৪) প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন। এটি হবে তার পঞ্চম বাজেট ঘোষণা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের শেষ বাজেট। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় তিনি প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এবারের বাজেটের মূল দর্শন হলো ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী–সমৃদ্ধ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। গত দেড় দশকে বর্তমান সরকার বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি করে দিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় স্মার্ট বাংলাদেশ চারটি মূল স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত হবে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি এবং স্মার্ট ইকোনমি। ২০২৩–২৪ অর্থবছরের বাজেটটি হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে প্রথম বাজেট। এবারের বাজেটে সঙ্গত কারণেই স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অর্থবছরের পুরো সময় জুড়েই থাকবে সরকারের নানা ধরনের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং বাড়ানো হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা। আশা করা হচ্ছে, অর্থমন্ত্রী আগামী অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করবেন।
সংসদে ২০২৩–২৪ অর্থ বছরের বাজেট নিয়ে আলোচনার জন্য ৪০ ঘণ্টা সময় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বুধবার সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরুর আগে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এই সময় বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়। তবে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী চাইলে আলোচনার সময় বাড়াতে পারবেন। বৈঠক থেকে তাকে সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলে সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে। ৪ জুন থেকে ২৪ জুন ২০২৩ পর্যন্ত মোট ৪০ ঘণ্টা বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। ২৫ জুন অর্থবিল পাস ও ২৬ জুন বাজেট পাস হবে মর্মে সিদ্ধান্ত হয়। এরপর, ঈদ–উল–আযহার জন্য সংসদ অধিবেশন মুলতবি হয়ে ২ জুলাই আবার অধিবেশন শুরু হবে মর্মে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।
বাংলানিউজ জানায় : অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী বছরে জনগণকে তুষ্ট করার রূপরেখা থাকবে আসন্ন বাজেটে। এ লক্ষ্যে ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শিরোনামে এবারের বাজেটে প্রস্তুত করেছে সরকারের অর্জন এবং বর্তমান পরিস্থিতির সমন্বয়ে। সঙ্গত কারণেই বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ভর্তুকি, ঋণ পরিশোধ, রাজস্ব আয় বাড়ানোসহ বেশ কিছু খাতকে। মূল্যস্ফীতি গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ জন্য বাজেটে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের কথা বলা হয়েছে। চ্যালেঞ্জ গুলো হলো– মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, তেল, গ্যাস ও সারের ভর্তুকির জন্য অর্থের সংস্থান, ঋণ পরিশোধ, বেসরকারি বিনিয়োগ, রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বাড়ানো ও বাজেট ঘাটতি কমিয়ে আনা এবং সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বাড়ানো।
বাজেটের আকার : আগামী ২০২৩–২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার চূড়ান্ত করা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরে ছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। নতুন বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা। মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫.৬ শতাংশ।
নতুন বাজেটে জিডিপির উচ্চাশা বহাল : ভোটের বছরে যতটা সম্ভব জনগণের সন্তুষ্টি পূরণ করে আগামী এক বছর সরকারি উন্নয়ন ও অনুন্নয়নের দায় মেটাতে তিনি এই বিশাল ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। একই সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সীমাহীন অনিশ্চয়তার মধ্যেই আগামী অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার ৭ দশমিক ৫ অর্জন করতে চান অর্থমন্ত্রী। আর সেই লক্ষ্য অনুযায়ী এবার জিডিপির মোট আকার নির্ধারণ করা হচ্ছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা।
বাজেটের আয় : সরকার আয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওপর। নতুন অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ কোটি টাকা ধরা হতে পারে। এর মধ্যে কর বাবদ ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত ৫০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে। কর বাবদ যে রাজস্ব আসবে তার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত কর ২০ হাজার কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজাটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত ৪৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। কর বাবদ যে রাজস্ব আয় ধরা হয় তার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত কর ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত কর ১৮ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটের ব্যয় : আগামী অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী পরিচালন ব্যয় বাবদ ৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৮১ কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখান থেকে বিভিন্ন সরকারের সময় নেওয়া ঋণের সুদ পরিশোধ খাতে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন বাজেটের ১২ দশমিক ৩৮ শতাংশ বা ৯৪ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা। সুদ পরিশোধ খাতগুলোর মধ্যে সরকারের যে অভ্যন্তরীণ ঋণে রয়েছে, তার সুদ পরিশোধে ব্যয় করা হবে ৮২ হাজার কোটি টাকা। বাকি ১২ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা ব্যয় করবেন বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে। অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধের খাতগুলোর মধ্যে সঞ্চয়পত্র খাতে ব্যয় হবে ৪২ হাজার কোটি টাকা। সরকারের বিভিন্ন মেয়াদি বিল–বন্ডের সুদে যাবে ৩২ হাজার কোটি টাকা এবং সরকারি চাকরিজীবীদের জিপিএফ খাতের সুদ পরিশোধে ব্যয় করা হবে ৮ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন–ভাতা পরিশোধে ব্যয় নির্ধারণ করা হচ্ছে ৮০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর এ খাতে ব্যয়ের পরিমাণ রাখা হয় ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) : উন্নয়ন ব্যয় ধরা হতে পারে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাবদ ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে। বিভিন্ন স্কিম বাবদ রাখা হতে পারে ৩ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা। এডিপি বহির্ভূত বিশেষ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হতে পারে ৭ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা। এছাড়া কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিতে (এডিপি বহির্ভূত) ২ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে।
বাজেটের ঘাটতি : সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ব্যতীত) ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ২০ শতাংশের সমান। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ৫০৭ টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ১০ শতাংশ। আর অনুদানসহ আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হতে পারে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২৪ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা।
ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। বিপরীতে ২৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে। তাতে নিট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ধরা হতে পারে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বৈদেশিক অনুদান ধরা হয় ৩ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা।
অভ্যন্তরীণ ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ধরা হতে পারে। এর মধ্যে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেয়া হবে। যার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ৮৬ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা এবং স্বল্পমেয়াদি ঋণ ৪৫ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংক বহির্ভূত ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ২৩ হাজার কোটি টাকা ধরা হতে পারে। সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হতে পারে এবং অন্যান্য খাত থেকে ৫ হাজার টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে।
চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি : মূল্যস্ফীতির সীমাহীন চাপে নাভিশ্বাস অবস্থা সাধারণ মানুষের। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান বাদে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি এখন সর্বোচ্চ। যেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও গ্যাস, সার, খাদ্যশস্য, ভোজ্যতেলের যে দাম, তার তুলনায় দেশের বাজারমূল্য অনেক বেশি। যখন সরকারের বাজার ব্যবস্থাপনার নানা ত্রুটি, অনুৎপাদনশীল খাতে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি, ঘাটতি বাজেট পূরণে সরকারের দেশি–বিদেশি ঋণ গ্রহণের বিপরীতে মোটা অঙ্কের সুদ পরিশোধ এবং অভ্যন্তরীণ চোরাচালান ও মজুদদারির কারণে ঊর্ধ্বগতির মূল্যস্ফীতি তৈরি হচ্ছে। গত (নভেম্বর ২০২২–এপ্রিল ২০২৩) ৬ মাসের সাধারণ মূল্যস্ফীতির গড় হার ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ দাঁড়িয়েছে, তখন আগামী ২০২৩–২৪ অর্থবছর এই মূল্যস্ফীতিকে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরে ছিল ৫.৬ শতাংশ।
বেসরকারি বিনিয়োগ : মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যখন মুদ্রানীতির মাধ্যমে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ কমানোর পথে সরকার, তখন অর্থমন্ত্রী আগামী অর্থবছরের মোট বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রা ধরতে যাচ্ছেন জিডিপির ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ। যদিও অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তব্যের স্বপক্ষে বলেছেন, অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান আকার এবং বর্তমান চাহিদা বিবেচনায় কম আয়ে বেশি ব্যয়ের এই বাজেট বাস্তবায়ন করে সব লক্ষ্যই অর্জন করা সম্ভব।
ভর্তুকিতে রেকর্ড : আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি খাতে সরকার ব্যয় করবে মোট ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। এই ভর্তুকির বড় অংশ ব্যয় করা হবে বিদ্যুতে, যার পরিমাণ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া কৃষিতে যাবে ১৭ হাজার কোটি, রপ্তানি ভর্তুকিতে যাবে ৭ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা এবং প্রণোদনায় ব্যয় হবে ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য খাতের ভর্তুকিতে ব্যয় হবে আরও ২৫ হাজার কোটি টাকা।
অন্যান্য বছরের ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থবছরও সরকারের ব্যয়ের বড় অংশ যাবে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির খাতগুলোর ব্যয়ে। আগামী অর্থবছর সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হচ্ছে ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। এটা মোট বাজেট ব্যয়ের ১৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। একইভাবে জিডিপির ২ দশমিক ৫২ শতাংশের সমান। চলতি অর্থবছর এ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার লাখ কোটি টাকা বাড়লেও, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (এডিপি বহির্ভূত) খাতে বরাদ্দ কমানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (এডিপি বহির্ভূত) খাতে বরাদ্দ রাখা হতে পারে ২ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয় ২ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। পরবর্তীতে সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ধরা হয় ২ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় নতুন অর্থবছরের বাজেটে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (এডিপি বহির্ভূত) খাতে ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ কম রাখা হচ্ছে।