বাজেটে সর্বজনীন পেনশন পরীক্ষামূলক শুরুর ঘোষণা আসছে

| মঙ্গলবার , ৩০ মে, ২০২৩ at ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

আগামী ২০২৩২৪ অর্থবছর থেকে সর্বজনীন পেনশনের পাইলট কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আসন্ন বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল পেনশন কার্যক্রমের বিষয় উল্লেখ করবেন। ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন।

গত ২৪ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন২০২৩’ পাস হয়। আইনের খসড়া বিধিও চূড়ান্ত পর্যায়ে। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আইনের আওতায় ছয় ধরনের প্রোডাক্ট স্কিম নিয়ে সর্বজনীন পেনশন আইনের বিধিমালা প্রণয়ন করেছে অর্থ বিভাগ। দেশের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী প্রায় ১০ কোটি নাগরিককে ৬টি শ্রেণি অনুযায়ী ভাগ করে এই স্কিম নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হলবেসরকারি প্রাতিষ্ঠানিক চাকরিজীবী পেনশনার, প্রবাসী/অনিবাসী পেনশনার, শ্রমিক শ্রেণি, অপ্রাতিষ্ঠানিক জনগোষ্ঠী, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিভুক্ত জনগোষ্ঠী ও শিক্ষার্থী। খবর বাংলানিউজের।

প্রতিটি স্কিম হবে স্বতন্ত্র। সব স্কিমে একটি ন্যূনতম চাঁদার হার নির্ধারিত থাকবে। কেউ চাইলে বেশিও জমা করতে পারবে। কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত তহবিলে সংশ্লিষ্ট প্রোডাক্ট স্কিমের হিসাবে যার যত বেশি চাঁদা জমা পড়বে, তার আর্থিক সুবিধা পাওয়ার হারও তত বেশি হবে।

চলতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠনের দাপ্তরিক আদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী মাসের মধ্যে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়েই তাদের দাপ্তরিক কার্যালয় স্থাপনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আগামী জুলাইয়ে আগ্রহী পেনশনারদের নিয়ে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। শুরুতে মডেল জেলা হিসেবে রাখা হতে পারে ঢাকা এবং দেশের অন্য যেকোনো একটি জেলাকে। পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মেয়াদ এক থেকে দুই বছর হতে পারে। এর সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে পরে তা সারাদেশে বিস্তৃত করা হবে। তবে শুরুর প্রক্রিয়াটি হবে সীমিত পরিসরে। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা সারাদেশে চালু হওয়ার পর অন্তত পাঁচ বছর তা ঐচ্ছিক রাখা হবে। পরে ২০৩০ সালের মধ্যে এটি সবার জন্য বাধ্যতামূলক করা হতে পারে।

এ সরকারের এ উদ্যোগকে যথাযথ মনে করছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত। তিনি বলেন, এটা জনগণের কল্যাণে করা। একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। প্রাথমিক পর্যায়ে পাইলট স্কিমেই শুরু করতে হবে। কারণ, এটা একটি বড় বিষয়। বড় অর্থনৈতিক সংশ্লিষ্ট বিষয়। বিষয়টিকে আমি স্বাগত জানাই। আমি মনে করি দেশের সার্বিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থে পদক্ষেপটা যথাযথ।

আইন অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে সর্বজনীন পেনশনের আওতায় ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী সব বাংলাদেশি নাগরিক অংশ নিতে পারবেন। বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরও পেনশন স্কিমের আওতায় রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মাসিক পেনশন সুবিধা পেতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর চাঁদা দাতাকে ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে। ১০ বছর চাঁদা দেওয়া শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন, সে বয়স থেকে আজীবন পেনশন পাবেন। চাঁদা দাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেওয়া হবে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরাও এতে অংশ নিতে পারবেন। চাঁদা দাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীমিত আয়ে সংসার চলে না, মধ্যবিত্তরা বিপাকে
পরবর্তী নিবন্ধআগুন লাগিয়ে মারা হয় গাছ তারপর কেটে সাবাড়