বাজেটে শিপ ব্রেকিং শিল্পের কর পুনর্বিবেচনার আহ্বান

| সোমবার , ২৩ জুন, ২০২৫ at ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ) ২০২৫২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে শিপ ব্রেকিং শিল্পের ওপর আরোপিত বিভিন্ন কর ও শুল্ক সংক্রান্ত পরিবর্তনের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, এসব পরিবর্তন বর্তমান বৈশ্বিক ও স্থানীয় শিল্প পরিস্থিতিতে অযৌক্তিক এবং বাংলাদেশের শিপ রিসাইক্লিং শিল্পকে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার দিক থেকে দুর্বল করে তুলবে। অ্যাসোসিয়েশন প্রস্তাবিত করের আলোকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর উপর গুরুত্ব আরোপ করতে সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে

প্রথমত, জাহাজ আমদানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি: H.S Code 8908.00.00এর অধীনে ‘Vessel and other floating structure for breaking up’ ক্যাটাগরিতে আমদানিকৃত জাহাজের ক্ষেত্রে এলডিটিভিত্তিক কাস্টমস ডিউটি ১৫০০/- টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮০০/- টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি শিল্পের জন্য বাড়তি চাপ তৈরি করবে বলে অ্যাসোসিয়েশনের দাবি।

দ্বিতীয়ত, শিপ প্লেটের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি: H.S Code ৭২.০৪এর অধীনে প্লেটের ওপর শুল্ক ১০০০/- টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০০/- টাকা করায় প্রতিটি প্লেটের ক্ষেত্রে ২০০/- টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে, যা শিল্পের খরচ বাড়িয়ে দেবে। তৃতীয়ত, যন্ত্রাংশ ও ফিটিংসের ওপর দ্বৈত কর: শিপ আমদানির পর যন্ত্রাংশ, মেশিনারি ও আউটফিটিং সামগ্রীর পৃথক ব্যবহার বা বিক্রয়ের সময় পুনরায় কর আরোপ করা হচ্ছে, যা দ্বৈত কর হিসেবে বিবেচিত। এগুলো মূলত জাহাজের অংশ হিসেবেই আমদানিকৃত এবং এলডিটি এর আওতায় বিবেচিত হওয়ায়, এসবের ওপর অতিরিক্ত কর কোনভাবেই সমীচীন নয়।

চতুর্থত, Lube Oil in Tankএর ওপর উচ্চ কর: জাহাজে বিদ্যমান Lube Oil in Tankএর ওপর প্রস্তাবিত ৪৫% কর শিল্পে প্রায় ১.৪৮ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় সৃষ্টি করছে। যেহেতু এই লুব অয়েল এর বিক্রয় মূল্য নেই, তাই এর ওপর কর আরোপ অনায্য।

প্রতিযোগিতা হ্রাস ও শিল্প স্থবিরতার আশঙ্কা: উপর্যুক্ত পরিবর্তনগুলো শিল্পকে অযথা চাপে ফেলবে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকে দুর্বল করবে। দেশের সংশ্লিষ্ট আইন ‘জাহাজ পূণঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ আইন ২০১৯’ ও আন্তর্জাতিক আইন হংকং কনভেনশন অনুযায়ী সমপ্রতি গ্রিন শিল্পে রূপান্তরিত হতে প্রতিটি শিপ রিসাইক্লিং ইয়ার্ড ৫০ থেকে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। এ ট্রানজিশনাল সময়ে এই শিল্পকে পৃষ্ঠপোষকতার পরিবর্তে যদি অতিরিক্ত করের বোঝা তুলে দেয়া অব্যাহত থাকে তাহলে এই শিল্পে বিনিয়োগ ঝুঁকি আরো বেড়ে যাবে।

বিএসবিআরএ’র সুপারিশ: এলডিটিভিত্তিক কর পূর্বের হার অনুযায়ী ১৫০০/- টাকায় পুনঃনির্ধারণ। H.S Code ৭২.০৪এর আওতাধীন প্লেটের শুল্ক পূর্বের ১০০০/- টাকায় ফিরিয়ে আনা। যন্ত্রাংশ, ফিটিংস ও আউটফিটিং সামগ্রীর ওপর দ্বৈত কর আরোপ বন্ধ। Lube Oil in Tankএর ওপর অযৌক্তিক শুল্ক ও কর প্রত্যাহার।

বিএসবিআরএ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি এসব সুপারিশ আমলে নিয়ে প্রস্তাবিত কর কাঠামো পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিচ্ছে, যাতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিপ ব্রেকিং শিল্প টিকে থাকতে পারে এবং টেকসইভাবে এগিয়ে যেতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন
পরবর্তী নিবন্ধমীর সাদেক অভির খুনিদের বিচার হবেই