বাজেটের প্রভাব নেই নিত্যপণ্যের বাজারে

জাহেদুল কবির | বুধবার , ৪ জুন, ২০২৫ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

আসন্ন ২০২৫২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষিত হয়েছে গত সোমবার। এবার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বাজেট ঘোষণার পরদিন অর্থাৎ গতকাল নিত্যপণ্যের বাজারে কোনো ধরনের প্রভাব পড়েনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধরণত ভোগ্যপণ্যের বাজারে বাজেটের পর পর তেমন একটা প্রভাব পড়ে না। বাজেটের চেয়েও আন্তর্জাতিক বাজারে দরবৃদ্ধির প্রভাবই সবচেয়ে বেশি পড়ে। গতকাল নগরীর কয়েকটি মুদি দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ ৬০৭০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫৭০ টাকা, প্রতিকেজি চীনা আদা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা, চীনা রসুন ১৬০ টাকা, মসুর ডাল (চিকন) প্রতি কেজি ১৩৫ টাকা এবং মশুর ডাল (মোটা) বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা, মুগ ডাল ১৬০১৭০ টাকা, খেসারির ডাল ১৩০১৪০ টাকা, চিনি ১১৫ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন প্রতি লিটার ১৮০ টাকা এবং ৫ লিটার ৯১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চালের বাজারে মিনিকেট সিদ্ধ কেজি ৭৫৮০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ ৮০৮৫ টাকা, পাইজাম আতপ ৭০৭৫ টাকা, মিনিকেট আতপ ৬৫৭০ টাকা, কাটারিভোগ আতপ ৭৫৮০ টাকা ও জিরাশাইল সিদ্ধ ৮২৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দামপাড়া এলাকার খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ রানা বলেন, বাজেট ঘোষণার কোনো ধরনের প্রভাব মুদিবাজারে পড়েনি। প্রত্যেকটি পণ্যের দাম একপ্রকার স্থিতিশীল রয়েছে। এদিকে গতকাল বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০১৬০ টাকা, প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০২৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হজার ৪০০ টাকায়। অন্যদিকে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। মাংস বিক্রেতা ইসমাইল আলী বলেন, মাংস কেনাবেচা গত এক সপ্তাহ ধরে একটু কম। সামনে কোরবানির ঈদ তাই অনেকে এই মুহূর্তে মাংস কিনছেন না।

অপরদিকে সবজির বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০৭০ টাকা, কাকরল ৭০৭৫ টাকা, বরবটি ৬০৬৫ টাকা, পটল ৫০৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০৬০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪০৫০ টাকা, দেশি টমেটো ৪০৫০ টাকা, গাজর ৬০৭০ টাকা, মুলা ৫০৬০ টাকা এবং শসা ৫০৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে মিষ্টি কুমড়া ৩০৪০ টাকা, পেপে ৪০৫০ টাকা এবং কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। কাজীর দেউরি এলাকার সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আজম বলেন, সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। তাই গত এক সপ্তাহে সবজির দাম বাড়েনি। বাজেট ঘোষিত হয়েছে, তবে বাজেটের কোনো প্রভাব বাজারে নেই।

অপরদিকে মাছের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০৪৫০ টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি শিং মাছ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০০৬০০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০৯০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০৪০০ টাকা, পাঙাস ২২০২৩০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০৮০০ টাকা, কাতাল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০২৫০ টাকা, কই ২২০২৩০ টাকা, পোয়া ৩৫০৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০৪৫০ টাকা এবং রূপচাঁদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৯০০১০০০ টাকায়। মাছ বিক্রেতা ইমাম হোসেন বলেন, বাজারে সামুদ্রিক মাছ কম আসলেও মিঠা পানির মাছ বেশি আসায় দাম বাড়েনি।

কনজুম্যারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, বাজেট ঘোষণার পর পর সুযোগ বুঝে কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করে। বাজেটে কোনো একটি পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলে দেখা যায়, সাথে সাথেই সেই দাম বেড়ে যায়। আবার উল্টোদিকে দাম কমানোর প্রস্তাব হলে সেগুলোর প্রভাব পড়ে অনেক দেরিতে। এসব বিষয় প্রশাসনকে নজরদারি করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুলাই থেকেই বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা
পরবর্তী নিবন্ধপবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু আজ