আসন্ন ২০২৫–২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষিত হয়েছে গত সোমবার। এবার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বাজেট ঘোষণার পরদিন অর্থাৎ গতকাল নিত্যপণ্যের বাজারে কোনো ধরনের প্রভাব পড়েনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধরণত ভোগ্যপণ্যের বাজারে বাজেটের পর পর তেমন একটা প্রভাব পড়ে না। বাজেটের চেয়েও আন্তর্জাতিক বাজারে দরবৃদ্ধির প্রভাবই সবচেয়ে বেশি পড়ে। গতকাল নগরীর কয়েকটি মুদি দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ ৬০–৭০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫–৭০ টাকা, প্রতিকেজি চীনা আদা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা, চীনা রসুন ১৬০ টাকা, মসুর ডাল (চিকন) প্রতি কেজি ১৩৫ টাকা এবং মশুর ডাল (মোটা) বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা, মুগ ডাল ১৬০–১৭০ টাকা, খেসারির ডাল ১৩০–১৪০ টাকা, চিনি ১১৫ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন প্রতি লিটার ১৮০ টাকা এবং ৫ লিটার ৯১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চালের বাজারে মিনিকেট সিদ্ধ কেজি ৭৫–৮০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ ৮০–৮৫ টাকা, পাইজাম আতপ ৭০–৭৫ টাকা, মিনিকেট আতপ ৬৫–৭০ টাকা, কাটারিভোগ আতপ ৭৫–৮০ টাকা ও জিরাশাইল সিদ্ধ ৮২–৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দামপাড়া এলাকার খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ রানা বলেন, বাজেট ঘোষণার কোনো ধরনের প্রভাব মুদিবাজারে পড়েনি। প্রত্যেকটি পণ্যের দাম একপ্রকার স্থিতিশীল রয়েছে। এদিকে গতকাল বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০–১৬০ টাকা, প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০–২৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হজার ৪০০ টাকায়। অন্যদিকে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। মাংস বিক্রেতা ইসমাইল আলী বলেন, মাংস কেনাবেচা গত এক সপ্তাহ ধরে একটু কম। সামনে কোরবানির ঈদ তাই অনেকে এই মুহূর্তে মাংস কিনছেন না।
অপরদিকে সবজির বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০–৭০ টাকা, কাকরল ৭০–৭৫ টাকা, বরবটি ৬০–৬৫ টাকা, পটল ৫০–৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০–৬০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪০–৫০ টাকা, দেশি টমেটো ৪০–৫০ টাকা, গাজর ৬০–৭০ টাকা, মুলা ৫০–৬০ টাকা এবং শসা ৫০–৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে মিষ্টি কুমড়া ৩০–৪০ টাকা, পেপে ৪০–৫০ টাকা এবং কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। কাজীর দেউরি এলাকার সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আজম বলেন, সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। তাই গত এক সপ্তাহে সবজির দাম বাড়েনি। বাজেট ঘোষিত হয়েছে, তবে বাজেটের কোনো প্রভাব বাজারে নেই।
অপরদিকে মাছের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০–৪৫০ টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি শিং মাছ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০০–৬০০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০–৯০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০–৪০০ টাকা, পাঙাস ২২০–২৩০ টাকা, চিংড়ি ৭৫০–১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল ৬০০–৮০০ টাকা, কাতাল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০–৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০–২৫০ টাকা, কই ২২০–২৩০ টাকা, পোয়া ৩৫০–৪০০ টাকা, পাবদা ৪০০–৪৫০ টাকা এবং রূপচাঁদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৯০০– ১০০০ টাকায়। মাছ বিক্রেতা ইমাম হোসেন বলেন, বাজারে সামুদ্রিক মাছ কম আসলেও মিঠা পানির মাছ বেশি আসায় দাম বাড়েনি।
কনজুম্যারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, বাজেট ঘোষণার পর পর সুযোগ বুঝে কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করে। বাজেটে কোনো একটি পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলে দেখা যায়, সাথে সাথেই সেই দাম বেড়ে যায়। আবার উল্টোদিকে দাম কমানোর প্রস্তাব হলে সেগুলোর প্রভাব পড়ে অনেক দেরিতে। এসব বিষয় প্রশাসনকে নজরদারি করতে হবে।