মৌসুমী ফল কালীপুরের রসালো লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। বর্তমানে বাঁশখালীর কালীপুর, উপজেলা ও পৌরসদর জলদী, বৈলছড়ি, চাম্বল, নাপোড়ায় হাট-বাজারে প্রচুর পরিমাণ লিচু উঠতে শুরু করেছে। তার উপর পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কালীপুরসহ অন্যান্য স্থানে ভিড় জমাচ্ছে লিচু কেনার জন্য। তবে মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় চাষিরা কিছুটা হতাশ। তাদের অভিমত এসময় যত বেশি বৃষ্টি হয় লিচু তত বেশি রসালো হয়। তবে ফলন ভাল হওয়াতে চাষিরা খুশি।
বাঁশখালী উপজেলার কালিপুর লিচুর জন্য বিখ্যাত যুগ যুগ ধরে। তাছাড়া সাধনপুর, পুকুরিয়া, বৈলছড়ি, গুণাগরি, জঙ্গল জলদি, জঙ্গল চাম্বল, পুইছড়িসহ প্রতিটি ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা ও সমতলে বাণিজ্যিক কিংবা ঘরোয়াভাবে লিচুর চাষ হয়ে আসছে বহুকাল থেকে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এবার বাঁশখালীতে সাড়ে ৭শ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে, তার মধ্যে কেবল কালিপুরেই চাষ হয়েছে ৩০০ হেক্টর জায়গায়। কালিপুরে স্থানীয় জাত ছাড়াও রাজশাহী বোম্বে, বারি-১, ২, ৩ ও ৪ এবং চায়না-৩ জাতের লিচুর বাগান রয়েছে। এখানকার লিচু আকারে একটু ছোট হলেও কিন্তু স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়। তাই চট্টগ্রামসহ সারাদেশের মানুষের কাছে কালীপুরের লিচু বেশ সমাদৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে।
উপজেলার লিচু বাগানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, গাছে থোকায় থোকায় পাকা লিচু ঝুলছে। উপজেলার পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালিপুর, পৌরসভা সদর জলদী হয়ে বৈলছড়িসহ বিভিন্নস্থানে পাহাড়ি এলাকাজুড়ে সড়কের পাশে, বাড়ির আঙ্গিনায়, পাহাড় ও লোকালয়ের বাগানে কেবল লিচু আর লিচু।
কালিপুরের লিচু বাগান মালিক শাহ আলম জানান, লিচুর ভাল ফলন হয়েছে। তবে আরেকটু বৃষ্টি বেশি হলে লিচুগুলো আরো বেশি রসালো ও মিষ্টি হতো। বর্তমানে খুচরা বাজারে শ প্রতি লিচু বিক্রি হচ্ছে ২০০, ২৫০ বা ক্ষেত্র বিশেষে ৩০০ টাকা। হাজার প্রতি লিচু পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৮শ থেকে ২৫শ টাকায়।
কালীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ ন ম শাহাদত আলম বলেন, বাঁশখালীর অধিকাংশ লিচু কালীপুর ইউনিয়নে উৎপাদিত হয়। এখানকার লিচু রসালো ও সুস্বাদু, তাই দূর-দূরান্ত থেকে অনেক ব্যবসায়ী ও ক্রেতা এখান থেকে লিচু নিয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু ছালেক জানান, এবার চলতি মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে আগাম চাষিদের লিচু বাজারে আসতে শুরু করেছে। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি বাজারে আসবে।