বাঙালি সংস্কৃতিতে নারীর মাথায় কাপড়

অনসূয়া যূথিকা | মঙ্গলবার , ২৩ মার্চ, ২০২১ at ৭:৫০ পূর্বাহ্ণ

মাথায় ওড়না বা স্কার্ফ জড়ানো এদেশে নতুন নয়, তবুও এ নিয়ে এতো আলোচনা কেন বুঝিনা। মিশনারি স্কুলে পড়েছি, সিস্টার মাদারদের মাথায় চুলঢাকা স্কার্ফ পরতে দেখেছি। হিজাবের সাদৃশ্য খুঁজতে গেলে কেবল ইসলাম না খ্রীস্টীয় সংস্কৃতি দেখতে হবে। তারও আগে ভারতীয় সংস্কৃতিতে নারীর খোলা মাথা রাখার ইতিহাস খুঁজে দেখেন প্রাজ্ঞ জনেরা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে কোন নারী তার ভাসুরের সামনে আসতো না, সূর্যকে পুরুষ জেনে তাকেও পর্দা করা হতো। অসূর্যম্পশ্যা শব্দটা তো এমনি এমনি আসেনি অভিধানে। এদেশের নারী যে পোশাকে ঘরের কাজ করেন তা বাইরে পরেন না। মাথায় স্কার্ফ জড়ালেই যারা হিজাব ভাবেন তাদের ভাবনার দীনতা ধরা পড়ে। যারা মাথায় কাপড় দিলে সেটা ইসলামি পোশাক বলে চেঁচায় তাদের কাণ্ড দেখে হাসি পায়। শীত এলেই আমি কান মাথায় স্কার্ফ জড়াই। তাছাড়া পেশার কারণে রোজ রাস্তায় বেরোতে হয় যে নারীদের ধুলোর খবর তারা জানেন। চুল বাঁচাতে, ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে তারা কেবল চুল না মুখও ঢাকেন প্রখর রোদ থেকে বাঁচতে। আবার এমন বহু অনুষ্ঠানে যেতে হয় যেখানে বাঙালি সংস্কৃতিতে নারীর মাথায় কাপড় থাকাটাই নিয়ম বা শোভন। একসাথে বহুজনকে নিয়ে চলতে হয় নারীকে এক জীবনে, পরিবারের সম্মান রক্ষার দায়ও বর্তায় ঘরের মেয়ে বউয়ের উপরে। শ্রাদ্ধ বা চেহলামে এক গা গহনা পরে সবার দৃষ্টি আকর্ষণের প্রয়োজন বোধ করিনা একদমই। সবচেয়ে বড় বিষয়, মাথায় ওড়না দিলেই সেটা হিজাব না, বোরকা না, পর্দাও না। আর এর সঙ্গে যারা আমার ধর্ম মিলাতে চায় বা প্রশ্ন করে তাদের জন্য স্রেফ করুণাই হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতুমি ভাবো – তুমি কী চাও?
পরবর্তী নিবন্ধজাতীয় খেলা ‘কাবাডি’ : পুস্তকে আছে, বাস্তবে নেই!