চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জন্ম নেয়া বিরল প্রজাতির চারটি সাদা বাঘের শাবককে পদ্মা, মেঘনা, সাংগু এবং হালদা নামে ডাকা হবে। জন্মের দুদিনের মাথায় গতকাল এই নাম পেল বাঘের চার শাবক। চিড়িয়াখানা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান গতকাল বাঘের বাচ্চাগুলোকে পরিদর্শন শেষে এই নামকরণের কথা জানান।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার রাজ-পরী বাঘ দম্পতির ঘরে এ চারটি সাদা বাঘ শাবকের জন্ম হয় শনিবার। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, নতুন চারটি নিয়ে চিড়িয়াখানায় বাঘের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬টিতে, যার মধ্যে পাঁচটি সাদা। দেশের আর কোনো চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কে এত বাঘ নেই বলেও জানান তারা।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ও চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, শাবকগুলো এখনও মায়ের সাথে আছে। মা পরী কাউকে তার কাছ ঘেঁষতে দিচ্ছে না। বেশ তর্জন গর্জন করছে। তিনি বলেন, এই ধরনের প্রজননের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে মা বাচ্চাকে দুধ না খাওয়ানো। বিশেষ করে ক্যাপটিভ ব্রিডিংয়ের (চিড়িয়াখানা অথবা সাফারি পার্কে বাচ্চা দেওয়া) ক্ষেত্রে মা বেশ বৈরি আচরণ করে। বাচ্চাদের দুধ দেয় না। তবে পরী বেশ ভালো আচরণ করছে। জন্ম নেওয়া চার শাবককেই পরী দুধ খাওয়াচ্ছে। ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার মাধ্যমে খাঁচায় শাবকগুলোর ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এর আগে মায়ের কাছ থেকে দুধ না পাওয়ায় দুটি বাঘের বাচ্চাকে খাঁচার বাইরে এনে বড় করা হয়েছিল। ওই দুইটি বাচ্চা ইতোমধ্যে বেশ বড় হয়ে উঠেছে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দীর্ঘদিন বাঘ ছিল না। ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১১ ও ৯ মাস বয়েসী একটি বাঘ ও বাঘিনী কিনে আনা হয়েছিল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার জন্য। ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই ওই বাঘ দম্পতি তিনটি শাবকের জন্ম দিয়েছিল। একদিন পর একটি শাবক মারা গেলেও দুইটি বড় হয়ে উঠে। এই দুটি বাঘের একটি কমলা-কালো ডোরা কাটা, অন্যটি সাদা-কালো। শুভ্রা নামের সাদা-কালো বাঘটিই দেশের প্রথম সাদা বাঘ, যা পৃথিবীতে বিরল প্রজাতির বলে বলা হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ১৬টি বাঘ থাকার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।