রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে আঞ্চলিক দুই গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছেন। এসময় এক পথচারীসহ আরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার ১০মিনিটের দিকে উপজেলার দুই কিলোমিটার নামক স্থানে জেএসএস সন্তু লারমা দল ও গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ দলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, জেএসএস সন্তু লারমা দলের সেকশন কমান্ডার তজিম চাকমা (২৮) ও গণতন্ত্রিক ইউপিডিএফ বাঘাইছড়ির পরিচালক জানং চাকমা (৩৪ )। তজিম চাকমার বাড়ি বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের রাবার বাগান এলাকায় এবং জানং চাকমা বাড়ি বঙ্গলতলী ইউনিয়নে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আগে থেকে দুই কিলোমিটার নামক এলাকায় চায়ের দোকানের পাশে ঝাড়ু ফুলের বাগানে ওঁৎ পেতে অবস্থান নেয় জেএসএস সন্তু লারমা দলের সামরিক সদস্যরা। গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ পরিচালক জানং চাকমা চায়ের দোকানে প্রবেশ করে বসার সাথে সাথে শুরু হয় গোলাগুলি। এতে ঘটনাস্থলে জানং চাকমা নিহত হয়। পরে উভয় পক্ষের ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধে জেএসএস সন্তু লারমা দলের সেকশন কমান্ডার তজিম চাকমা নিহত হয়। এসময় জেএসএস সন্তু লারমা দলের সামরিক সদস্য সুজন চাকমা ও এক পথচারী মনু মিয়া হাঁটুতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। তাদের উদ্ধারের পর প্রথমে বাঘাইছড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাদের খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। বাঘাইছড়ি থানার এসআই সাঈদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুটি খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলার জেএসএস এমএন লারমা দলের সাধারণ সম্পাদক জোসি চাকমা বলেন, দুই কিলোমিটার নামক এলাকায় জেএসএস সন্তু লারমা দলের সশস্ত্র সদস্যরা এসে গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফ পরিচালক জানং চাকমাকে গুলি করে হত্যা করে। এবং তাদের গুলিতে জেএসএস সদস্য তজিম চাকমা নিহত হয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনে আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। এদিকে, জেএসএস সন্তু লারমা দলের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিপ চাকমা ওরপে দীপ বাবু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের দলে কোন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নেই। আমার চুক্তি বাস্তবায়নের কাজ করছি। আমরা মানুষের জন্য কাজ করছি। আমি এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।
এ ব্যাপারে বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা বাহিনী গিয়েছে। পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। এতে বেশ কয়েকজন হতাহতের খবর শোনা গেলেও সঠিক তথ্য এখনো জানা যায়নি। তবে ঘটনাস্থলে দুইজন নিহত হয়েছেন। রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল তাপস রঞ্জন ঘোষ আঞ্চলিক দুই গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।