বোলারদের দারুন নৈপুন্য ম্লান করে দিল ব্যাটাররা। আর তাতে একেবারে বাগে পেয়েও ভারতকে হারাতে পারলো না বাংলাদেশের মেয়েরা। শক্তিশালী ভারতকে একশ রানের নিচে আটকে দিয়েও ম্যাচটি হারতে হয়েছে ৮ রানে। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে টানা দুই ম্যাচে জিতে সিরিজ জিতে নিল ভারতের মেয়েরা। শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৯৫ রান করেছিল ভারত। এই সংস্করণে বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের সর্বনিম্ন স্কোর এটিই। ২০১৪ সালে কক্সবাজারে ১ উইকেটে ১০১ ছিল আগের সর্বনিম্ন। সে রান তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেট হাতে রেখে শেষ ৮ বলে বাংলাদেশের দরকার ছিল ১০ রান। এরপরই নিগার আউট হয়ে গেলে দলের আশাও প্রায় শেষ হয়ে যায়। শেষ ওভারে ৯ রানের সমীকরণে ৪ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকরা তুলতে পারে ১ রান। অল আউট হয় তারা ৮৭ রানে। নিগারের ৫৫ বলে ৩৮ রান ছাড়া দুই অঙ্কেও ঘরে যেতে পারেননি আর কেউ।
টসে জিতে ব্যাট করতে নামা ভারতের শুরুটা মন্দ হয়নি। পঞ্চম ওভারে ভারতের স্কোর ছিল বিনা উইকেটে ৩৩। এরপরই ৭ বলের মধ্যে কোনো রান না দিয়েই ৩ উইকেট নিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। স্মৃতি মান্ধানাকে ফিরিয়ে দলকে প্রথম উইকেট এনে দেন নাহিদা আক্তার। তিনি করেন ১৩ রান। পরের ওভারে পরপর দুই বলে শেফালি ও হারমানপ্রিত কৌরকে বিদায় করেন সুলতানা। শেফালি করেন ১৪ বলে ১৯ রান। অধিনায়ক হারমানপ্রিত রানের খাতাই খুলতে পারেনি। এরপর ফাহিমা খাতুন ফেরান ইয়াস্তিকা ভাটিয়াকে। ৪৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। জেমিমা রদ্রিগেসও পারেননি তেমন কিছু করে দেখাতে। ফিরেন ২১ বলে ৮ রান করে। শেষ দুই ওভারে উইকেট আসে আরও দুটি। আর তাতেই ভারত থামে ৯৫ রানে। ভারতের ৮ উইকেটের ৭টিই নেন বাংলাদেশের চার স্পিনার মিলে। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে ২১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সফলতম বোলার অফ স্পিনার সুলতানা খাতুন। লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুন নিয়েছেন ১৬ রানে ২টি।
স্বল্প রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাথী রানি ও শামীমা সুলতানার একটি করে চারে প্রথম ওভারে আসে ১০ রান। এরপর ছন্দ পতন। পরের দুই ওভারে বিদায় নেন দুই ওপেনারই। রান তোলার গতিও কমে যায় এতে। মুর্শিদা খাতুন বোল্ড হন ১৫ বলে ৪ রান করে। রিতু মনি দ্রুত এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন। অষ্টম ওভারে ৩০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর দলকে এগিয়ে নেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা ও স্বর্ণা। ১০ ওভারে শেষে বাংলাদেশের রান ছিল ৪ উইকেটে ৪১। বাকি ১০ ওভারে দরকার ৫৫। স্বর্ণা ১৭ বলে ৭ রান করে দীপ্তিকে ফিরতি ক্যাচ দিলে ভাঙে ইনিংস সেরা ৩৪ রানের জুটি। এরপর নাহিদাকে নিয়ে চেষ্টা করে যান নিগার। শেষ ৩ ওভারে দরকার ছিল ২১ রান। অষ্টাদশ ওভারে জেমিমাকে একটি চার মারার পর শেষ বলে ক্যাচ তুলে দেন নিগার। কিন্তু ক্যাচ নিতে পারেননি হারলিন। ৩৪ রানে জীবন পান নিগার। পরের ওভারে ডাবল নিতে গিয়ে ভারতীয় কিপারের ব্যর্থতায় রান আউট থেকেও বেঁচে যান নিগার। কিন্তু পরের বলে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় স্টাম্পড হন তিনি। এরপর শেষ ওভারে বাংলাদেশের ব্যাটারদের আসা–যাওয়ার মিছিলে যোগ হয় হারের হতাশা। ৮৭ রানে থামে বাংলাদেশের মেয়েরা। ভারতের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন শেফালি ও দীপ্তি। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ভারতের দীপ্তি শর্মা।