আজাদী : এলাকাবাসীর জন্য আপনার অবদান কী?
মো. গিয়াস উদ্দিন : আমার প্রথম চেষ্টা হলো বাগমনিরাম ওয়ার্ডকে একটি পরিকল্পিত ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তোলা। সেই উদ্দেশ্যে আমি এ ওয়ার্ডের ২৩টি ছোট-বড় আবাসিক এলাকায় কমিটি করে দিয়েছি। তারা ময়লা-আবর্জনা অপসারণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম সনদপত্র নেয়া পর্যন্ত আমার কাজে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে থাকে। নগরীকে ‘গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি’তে রূপ দেয়ার যে ধারণা সেটি আমি প্রথমবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে ২০০০ সালেই পরিকল্পিতভাবে ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করার ব্যবস্থার মাধ্যমে চালু করেছিলাম আমার বাগমনিরাম ওয়ার্ডে। আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কাউন্সিলর অফিসের যেকোনো সেবা পাওয়ার ব্যাপারে আমি ভোগান্তি দূর করেছি।
আজাদী : জলাবদ্ধতা নিরসন ও ওয়াকওয়ের ব্যাপারে কী ভাবছেন?
মো. গিয়াস উদ্দিন : জলাবদ্ধতার জন্য অনেকাংশে দায়ী আমরাই। সচেতনতার অভাবে অনেকে ময়লা-আবর্জনা নালায় ফেলে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। ফলে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আমি কখনও বলব না যে জলাবদ্ধতা শতভাগ দূর করা সম্ভব, কিন্তু মানুষ সচেতন হলে সেটি শতকরা ১০ ভাগে নামিয়ে আনা যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
মেহেদিবাগে বিকালে বা সন্ধ্যায় হাঁটার জন্য নান্দনিক ওয়াকওয়ে তৈরির চিন্তাভাবনা আছে আমার। নগরায়নের ফলে নগরীতে জায়গা সংকোচন হচ্ছে। তাই আমাদের যতটুকু জায়গা আছে তার মধ্যেই এসব ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব আমি।
আজাদী : প্রতিবন্ধীদের কীভাবে সহযোগিতা করেছেন?
মো. গিয়াস উদ্দিন : আমার এলাকাতে প্রতিবন্ধীদের একটি সংগঠন আছে। আমি তাদের কাউন্সেলিং সহ নানাভাবে সহযোগিতা করে থাকি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবন্ধীদের জন্য যে ভাতার ব্যবস্থা করেছেন আমি আমার ওয়ার্ডের প্রতিবন্ধীদের সেই ভাতা সঠিকভাবে পাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। অনেক প্রতিবন্ধীকে প্রণোদনা দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছি। তাদের পরনির্ভরশীলতা কমানোর চেষ্টা করছি। ফলে এখন অনেক প্রতিবন্ধী ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দিয়েছে।
আজাদী : মাদক ও সন্ত্রাস দূর করতে কী কী করেছেন?
মো. গিয়াস উদ্দিন : সন্ত্রাস ও কিশোরগ্যাংয়ের ব্যাপারে আমি কঠোর অবস্থান নিয়েছি। কেউ যদি কোনোরকম অপরাধে জড়ায় তাহলে সে যে দলেরই হোক না কেন আমি কোনো ছাড় দেই না। আমার এলাকায় হকারদের কাছ থেকে কেউ যদি চাঁদা চায়, সন্ত্রাস করে তখন আমি প্রশাসনকে সাথে নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিই। তরুণ-যুবকরা যাতে কিশোরগ্যাং-এর মতো কোনো অপরাধে জড়াতে না পারে সেজন্য আমি একটি ক্রিকেট একাডেমি তৈরি করার পরিকল্পনা করেছি। আমি এ উদ্দেশ্যে আউটার স্টেডিয়ামে প্রশিক্ষক সহ একটি ক্রিকেট পিচ তৈরি করে দিয়েছি। সেইসাথে বিভিন্ন সময় খেলাধুলার টুর্নামেন্টের আয়োজন করি। আমি মনে করি কিশোর-তরুণদের শিক্ষা ও ক্রীড়াক্ষেত্রে জড়িত করা গেলে মাদক, সন্ত্রাস অনেকটা কমে আসবে।
আজাদী : শিক্ষাক্ষেত্রে আপনার অবদান কী?
মো. গিয়াস উদ্দিন : আমার তত্ত্বাবধানে এ ওয়ার্ডে নিম্ন আয়ের মানুষের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য আবদুর রশীদ ও সৈয়দা খাতুন নামে দু’টি স্কুল আছে। স্কুল দু’টির একটির জন্য ছয়তলা একটি ভবন তৈরি করেছি। আরেকটির জন্য ছয়তলা ভবন প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। যারা স্কুলে বেতন-ভাতা দিতে পারে না তাদের সহযোগিতা করি আমি নিয়মিত। প্রতি বছর আমি নিম্ন আয়ের এক হাজার শিক্ষার্থীকে খাতা, কলম, পেন্সিল, স্কেল, রবার সহ বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী দিয়ে থাকি।
আজাদী : আবার নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী?
মো. গিয়াস উদ্দিন : আমি গত চারবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। আমার সাফল্যের অংশীদার আমার এলাকাবাসী আর ব্যর্থতার দায় আমার। আমি তাদের জন্য আন্তরিকভাবে যতটুকু করেছি তাতে আমি বিশ্বাস করি তারা আমাকে ঘুড়ি প্রতীকে ভোট দিয়ে পঞ্চমবারের মতো তাদের সহযোগিতা করার সুযোগ দেবেন।