বাকলিয়া থানা পুলিশের ওপর ক্ষোভ মেয়রের

ছাত্রদল কর্মী নিহতের ঘটনায় যা বললেন

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ at ৭:৪৫ পূর্বাহ্ণ

যুবদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. সাজ্জাদ নামে এক ছাত্রদল কর্মী নিহতের ঘটনায় বাকলিয়া থানা পুলিশের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এ ঘটনার জন্য তিনি পুলিশসহ ছাত্রলীগযুবলীগকে দোষারোপ করেন। সাজ্জাদ হত্যায় জড়িত হিসেবে যাদের নাম আসছে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য সপ্তাহখানেক আগে বাকলিয়া থানা পুলিশকে জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন মেয়র।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। হাসপাতালে তিনি ছাত্রদল কর্মীর মরদেহ দেখতে আসেন। এ সময় নিহতের স্বজনদের সান্ত্বনা দেন।

ডা. শাহাদাত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিষয়ে বলেন, এরা সন্ত্রাসী গ্রুপ, এরা আগে ছাত্রলীগযুবলীগ করত। তারা আজকে এখানে এসে কারো না কারো শেল্টারে আছে। আমি ইতোমধ্যে বাকলিয়া থানার ওসিকে বলেছি, বোরহান এবং সোহেল, ছেলেগুলোকে গ্রেপ্তার করার জন্য আমি এক সপ্তাহ আগে বলেছি। এক সপ্তাহ কিংবা দশ দিন আগে বলেছি। আমি পোস্টারব্যানার নামিয়ে ফেলার কথা আগেও বলেছি। শুধু এটা না, তাদের গ্রেপ্তার করার জন্য আমি পুলিশ কমিশনার সাহেবকে বলেছি। আমি একদম আপনাদের সামনে বলছি, পুলিশ কমিশনার সাহেব ওসিকে বলেছেন।

মেয়র বলেন, আমি বলেছি, যদি আমার দলেরও কেউ তাদের শেল্টার দিয়ে থাকে, দরকার হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন, তাকেও গ্রেপ্তার করেন। এটা কিন্তু ওসিকে আমি বলেছি। এই ছেলেগুলোর বিষয়ে আমি স্পষ্ট বলেছি তাদের গ্রেপ্তার করতে। নাম ধরে বলেছি। আজ আমি মিডিয়ার সামনে বলছি।

তিনি বলেন, কিন্তু ওসি কেন জানি তাদের গ্রেপ্তার করছেন না। আমার মনে হচ্ছে বাকলিয়া থানার যারা দায়িত্বে আছেন এবং ওসিসহ যারা আছেন তাদের গতিবিধির ব্যাপারে আমার যথেষ্ট প্রশ্ন আছে। তারা আদৌ এখানে ভালো কোনো কাজ করছে কিনা। আমার মনে হচ্ছে, তারা আওয়ামী লীগের কোনো না কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরামর্শে এ থানা চালাচ্ছে।

মেয়র বলেন, আমি বাকলিয়া থানাকে দোষ দিচ্ছি, আমি সম্পূর্ণ বাকলিয়া থানাকে দোষ দেব। তারা যদি সুনির্দিষ্ট এই ছেলেগুলোকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসতে পারত, মামলা দিয়ে যদি জেলের মধ্যে রাখতে পারত, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।

শাহাদাত বলেন, আজ যদি তাদের গ্রেপ্তার করা হতো, আজ থেকে ১০১২ দিন আগে তারা একটা ঘটনা ঘটিয়েছিল, একটা বাসে তারা আমাদেরই যুবদলের কিছু ছেলেকে অ্যাটাক করেছিল। তারা পিকনিকে যাচ্ছিল, তখন তাদের ধরে থানায় দেয়া হয়েছে। পরে তারা জামিন পেয়ে গেছে। কিন্তু এই যে ছেলেগুলোর কথা এসেছে, বোরহান, আমি বলেছি অনতিবিলম্বে ছেলেগুলোকে গ্রেপ্তার করা উচিত এবং আমাদের যদি কেউ থেকে থাকে তাকেও গ্রেপ্তারের আওতায় আনা উচিত।

মেয়র বলেন, এখানে সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই। আমি বারবার বলছি, আমি এই শহরটাকে নিরাপদ শহর হিসেবে দেখতে চাই। আমি চাই না এই শহর সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হোক, চাঁদাবাজদের অভয়ারণ্যে পরিণত হোক।

শাহাদাত বলেন, এখানে যুবলীগছাত্রলীগের যেসব ক্রিমিনাল, এখানে একসময় ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক ছিল, আমাদের ছেলেদের অনেক অত্যাচার করেছে। তার কিছু ছেলেপেলে এখানে আছে এবং দক্ষিণ জেলার কিছু ছেলেপেলে এখানে দেখতে পাচ্ছি। তারা এখানে এসে একটা গাট বেঁধেছে।

মেয়র বলেন, এক্সেস রোডে আগেও একটা ঘটনা ঘটেছিল। মার্ডার হয়েছে। আজকেও একটা হয়েছে। কিছু ছেলে আমার কাছে এসেছিল। তারা বলেছিল এখানে একটা ঘটনা হতে পারে, এখানে খুবই উত্তেজিত পরিবেশ। আমি পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছি ফোন করে, এক্সেস রোডের ব্যাপারটা এবং এই ছেলেপেলেগুলোর বিষয়ে, ঘটনার মনে হয় ঘণ্টাখানেক আগে বলেছি। কাজেই আমি মনে করি যে, এই ছেলেগুলোকে অবশ্যই গ্রেপ্তার করা উচিত ছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধট্যাংকে ক্যালিব্রেশনে গোলমাল করে এক লাখ লিটার তেল গায়েব
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের আজ টিকে থাকার লড়াই