চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে গতকাল মঙ্গলবার চতুর্থ দিনের মতো ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তবে গতকাল তারা আগের মতো বোর্ড ভবনে প্রবেশ করতে পারেনি। প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে শিক্ষার্থীরা মূল ফটকের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে এবং দাবি জানাতে থাকে।
শিক্ষার্থীরা যখন গেটের বাইরে বিক্ষোভ করছিল তখন বোর্ডের মূল ফটকের ভিতরে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সর্বস্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরির দাবিতে মানববন্ধন করেন। মানববন্ধনে বক্তৃতাকালে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, বারবার শিক্ষার্থীরা এসে শিক্ষাবোর্ড ঘেরাও করছে। অনেক কর্মচারীকে হেনস্তা করেছে। আমি বারবার তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা তাদের অযৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। অভিভাবকদের অনুরোধ করছি, আপনাদের ছেলেমেয়েদের বোঝান। তাদেরকে ঘরে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, এখানে অনেক রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র রয়েছে। আন্দোলনকারীদের মধ্যেও অনেক দুষ্কৃতকারী থাকতে পারে। তারা এ আন্দোলনকে অন্য দিকে নিয়ে যেতে পারে। সেজন্য শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকতে হবে।
বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, ১৫ অক্টোবর ২০২৪ সালের এইচএসসির ফল প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে আমরা ফলাফল দিয়েছি। এ বছরও গত বছরের কাছাকাছি ফলাফল হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অনুরোধে আমরা পরীক্ষাও পিছিয়েছি বারবার। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে পরীক্ষার কিছু অংশও বাতিল করেছি। মাত্র ৭টি বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেসব পরীক্ষা হয়নি সেসব বিষয়ে এসএসসির নম্বরের ভিত্তিতে ফলাফল দিয়েছি। এখানে মনে রাখতে হবে, একটা পরীক্ষা যখন অনুষ্ঠিত হয় সেখানে কেউ ফেল করবে আবার কেউ পাস করবে। এটি একটি বিচারিক কার্যক্রম। দেশের প্রচলিত একটি কাঠামোর মধ্য দিয়ে ফলাফল তৈরি এবং প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে বাংলাদেশের সকল শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবি জানান। এ সময় বোর্ডের সচিব অধ্যাপক আমিরুল মোস্তফা, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এ এম এম মুজিবুর রহমান, কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক জাহেদুল হক, উপ–সচিব বেলাল হোসেন, উপ–কলেজ পরিদর্শক বিজয় ভৌমিক বক্তব্য দেন।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মানববন্ধন হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা বোর্ডের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। দুপুর ২টা পর্যন্ত তারা বোর্ডের মূল ফটকের বাইরে অবস্থান করে বিক্ষোভ করে। ফলাফলে বৈষম্য করা হয়েছে অভিযোগ করে ১৭ অক্টোবর থেকে বোর্ড ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করে এইচএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার বাদ দিয়ে রোববার থেকে ফের আন্দোলন শুরু করে তারা। এ নিয়ে টানা চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।