বাইপাস ও ভাইয়ার দিঘি এলাকায় কেন এত দুর্ঘটনা

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক

পটিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২১ জুলাই, ২০২২ at ৭:২৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার ভাইয়ার দিঘি এলাকা ও বাইপাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি যেন নিয়মিত ও স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত আট দিনের ব্যবধানে কেবল ভাইয়ার দিঘি এলাকায় ঝরলো ৮ তাজা প্রাণ। গত ১১ জুলাই পটিয়া উপজেলার কচুয়াই ইউনিয়নের ভাইয়ার দিঘি এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় সিএনজি টেক্সির যাত্রী স্বামী-স্ত্রীসহ ৬ জন নিহতের রক্তের দাগ না শুকাতেই গত মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) লাশ হল আরো দুই তরুণ। মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টায় পদ্মা অয়েল কোম্পানির তেলবাহী ভাউচার চাপায় ঘটনাস্থলে নিহত হয় লোহাগাড়া মোস্তাফিজুর রহমান কলেজের বিবিএর ছাত্র মো. মামুন (২০) ও মো. ইমন (২১)।

বাইপাস সড়কে গত ১৪ জুলাই সকাল ১০টায় দুই যাত্রীবাহী বাসের প্রতিযোগিতায় অন্য বাসের ধাক্কায় নিয়ন্ত্রণ হারায় সুগন্ধা পরিবহনের একটি বাস। এতে বাসের ৬ যাত্রী আহত হয়। এর আগে ৬ জুলাই কক্সবাজারমুখী শ্যামলী পরিবহনের একটি দ্রুতগামী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ডিভাইডারে উঠে যায়। এতে গাড়ির ১০ যাত্রী গুরুতর আহত হয়। এছাড়া বাইপাস সড়কে উল্টো পথে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে প্রাণহানি, অঙ্গহানিসহ নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন অনেক মানুষ।

মহাসড়কের পটিয়ার ইন্দ্রপুল বাইপাস সড়ক থেকে মহাসড়কের খরনা রাস্তার মাথা পর্যন্ত বারবার সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনায় যাত্রী-পথচারী ও স্থানীয়দের ভাবিয়ে তুলছে। পাশাপাশি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে সচেতন মহলে। মাত্র ৯ কিলোমিটার সড়কে কেন বার বার এত প্রাণহানি? এ প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে।

জানতে চাইলে দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, মহাসড়কে নিরাপদ যাত্রা ও চালক-যাত্রীদের সচেতন করতে সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে জেব্রা ক্রসিং, রোড মার্কিং, সাইন সিগন্যালসহ রোড সেপটির সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এরপরও চালকদের বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো; মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল ও সিএনজি টেক্সির মত গাড়িগুলো মহাসড়কে অসতর্কভাবে চলাচলের কারণেই ঘটছে এসব দুর্ঘটনা। পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার ওসি মোজাফফর হোসেন জানান, বারবার সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির জন্য মহাসড়কে সরকার নিষিদ্ধ অটোরিকশা, সিএনজিসহ বিভিন্ন ছোট যানবাহন চলাচল অন্যতম কারণ। আমরা বারবার চেষ্টা করেও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের তদবিরের কারণে পেরে উঠতে পারছি না। তাছাড়া চালকদের অদক্ষতা ও অসচেতনতাই অনেকটা দায়ী দুর্ঘটনার জন্য। নিজের জীবন রক্ষায় নিজে সচেতন না হলে কারো তো কিছু করার থাকে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মোহাম্মদ ইয়াছিন জানান, লাইসেন্স বিহীন ও অদক্ষ চালকদের কারণে এ দুর্ঘটনা। তাছাড়া মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ব্যাটারি রিকশা, টমটম ও সিএনজি টেঙি বন্ধ করতে পারলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় কচুয়াই ইউপি চেয়ারম্যান ইনজামুল হক জসিম বলেন, চট্টগ্রাম-কঙবাজার মহাসড়কের ভাইয়ার দিঘি এলাকায় রাস্তা প্রশস্ত হওয়ায় গাড়িগুলো বেশ দ্রুত গতিতে চলে। এতে অনেক সময় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। যার কারণে বাইপাস হয়ে ভাইয়ের দিঘি এলাকার জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন ও গতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য জার্মানির চেয়ে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি কম : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬