কক্সবাজারের চকরিয়ায় সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে সর্বস্ব লুট করে নিয়েছে আরোহী সাবেক সেনা সদস্যের স্ত্রীর। এর আগে গতিরোধ করে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়। এ সময় দুর্বৃত্তরা স্ত্রীকে টানাহেঁচড়া করার সময় বাধা দিলে এলোপাতাড়ি ধারালো দায়ের কোপে গুরুতর আহত হন সেনা সদস্য। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে চকরিয়ার চিরিঙ্গা–বেতুয়া বাজার সড়কের বেতুয়া ব্রিজের পূর্বাংশে পৌরসভার আমাইন্যারচর এলাকার নির্জন স্থানে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী আহত ওই সাবেক সেনাসদস্যের নাম রবিউল হাসান (৩৮)। ঘটনার সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী কমরুন্নেছা (২৫)। রবিউল চকরিয়া উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজপাড়া গ্রামের নুরুচ্ছমদ মুন্সীর পুত্র। স্ত্রীর বরাত দিয়ে প্রতিবেশী প্রকৌশলী এস এম রাকিবুল হুদা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে চেপে রবিউল ডুলাহাজারায় যান নিকটাত্মীয়ের বিয়েতে। সেখান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন চিরিঙ্গা–বেতুয়া বাজার সড়ক দিয়ে। কিন্তু পথিমধ্যে মোটরসাইকেলটি বেতুয়া বাজারস্থ মাতামুহুরী সেতুর পূর্বাংশে পৌরসভার আমানইন্যারচর এলাকায় পৌঁছলে অগ্রভাগে থাকা একটি সিএনজি অটোরিকশা থেকে চালকসহ চারজন সশস্ত্র দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলটির গতিরোধ করে। এরপর পরই এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। সেই মুহূর্তে সাবেক সেনা সদস্য রবিউল হাসানের স্ত্রীর পরনে থাকা অন্তত ৮ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও চারটি মোবাইল সেট কেড়ে নেয়।
রাকিবুল হুদা আরো জানান, যে স্থানে এই ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তা ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং নির্জন। প্রথমে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ার পর স্ত্রীর গায়ে থাকা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে নেয়। কিন্তু পরক্ষণে স্ত্রী কমরুন্নেছাকে যখন টানা–হেঁচড়া করছিল তখন রবিউল বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এই অবস্থায় ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি শরীরের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা সিএনজি অটোতে উঠে চলে যায়। পরিবার সূত্র জানায়, লুণ্ঠিত মালামালের মধ্যে রয়েছে ৮টি আংটি, হাতের বালা, কানের দুল, গলার হার, নাকফুল, চারটি মোবাইল ও নগদ টাকা।
ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীসাধারণের অভিযোগ, পৌরসভার আমাইন্যারচর ও বেতুয়া বাজার সংযোগ সেতুর পূর্বাংশটি হচ্ছে একটি ডাকাতির স্পট। সেখানে ইতোপূর্বে প্রতি রাতে পুলিশের টহল দেখা যেত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে পুলিশের কোনো টহল ব্যবস্থা ছিল না। যার কারণে নতুন করে সেই স্পটে এই ঘটনা সংঘটিত করেছে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের চকরিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তফিকুল আলম, চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. আবদুল জব্বারসহ পুলিশের একটি দল।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার অপারেশন অফিসার রাজীব কুমার সরকার দৈনিক আজাদীকে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এটি ডাকাতি নাকি পূর্ব বিরোধের জেরে পরিকল্পিত ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের ধরতে এবং লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তিসাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।












