দেশকে ভালোবাসা মানেই বাংলা ভাষাকে ভালোবাসা। আবার বাংলা ভাষার অর্থই হলো দেশকে ভালোবাসা। এই ভাষার দাবীতে প্রাণ দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। শহীদ, জব্বার, বরকত, সালাম, রফিক বুকের তাজা রক্তের বদলে প্রতিষ্ঠা করে গেছে আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলা ভাষার অধিকারকে। আরো বহুজনের ত্যাগ–তিতিক্ষা সংগ্রামের ইতিহাস আছে এই ভাষার পিছনে। এই ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়েই একদিন আমরা স্বাধীকার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। আজ আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অধিবাসী। এখন আমাদের ভাষার উপর প্রভুত্ব করার কেউ নেই। কারো রক্ত চক্ষুর ভয় নেই। তবু কেন যে আমরা এখনো আমাদের জাতীয় জীবনের সর্বস্তরের বাংলা ভাষা চালু করতে পারছি না। অথচ একুশ এলেই নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলা ভাষার জন্য মায়া কান্না শুরু করে দেই। জীবনের সর্বক্ষেত্রে বাংলা চালু করার পরামর্শ দিয়ে টেবিল চাপড়িয়ে বক্তৃতা দিই। সেমিনার করি। শপথ নিই। কিন্তু একুশে রাত পেরোতেই সব প্রতিশ্রুতি ভুলে গিয়ে ইংরেজির পুজায় আত্মনিয়োগ করি। আমরা শহীদের আত্মার সাথে বেঈমানি করছি। মাতৃভাষার প্রতি আমাদের অবজ্ঞা–অবহেলার জন্য ভবিষ্যৎ বংশধররা আমাদের ক্ষমা করবে না। তাই চাই সমাজ ও জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার মর্যাদাপূর্ণ অধিষ্ঠান।
এম. এ. গফুর
বলুয়ার দীঘির দক্ষিণ–পশ্চিম পাড়,
কোরবানীগঞ্জ, চট্টগ্রাম।