দেশ–বিদেশে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এই শুভ নববর্ষের প্রাক্কালে আমাদের প্রার্থনা এই যে, আমরা যেন সমস্ত অন্ধকার ও বাধা বিপত্তি দূর করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারি। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত এক সংক্ষিপ্ত ভিডিও বার্তায় তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, নানা ধরনের বাধা বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে দেশ আরও একটি বছর পার করেছে। খবর বিডিনিউজের।
এ দিন এক বাণীতে তিনি বলেছেন, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, উগ্রবাদ তথা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ তথা সুখী–সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবারের বৈশাখ হবে আমাদের জন্য বিপুল প্রেরণাদায়ী। পহেলা বৈশাখকে বাঙালির সমপ্রীতির দিন, বাঙালির মহামিলনের দিন বর্ণনা করে সরকার প্রধান বলেন, এ দিন ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণে নব–অঙ্গীকারে। সারা বছরের দুঃখ–জরা, মলিনতা ও ব্যর্থতাকে ভুলে সবাইকে আজ নব–আনন্দে জেগে ওঠার উদাত্ত আহ্বান জানাই।
শেখ হাসিনা বলেন, মোগল সম্রাট আকবর ‘ফসলি সন’ হিসেবে বাংলা সন গণনার যে সূচনা করেন, তা সময়ের পরিক্রমায় আজ সমগ্র বাঙালির কাছে অসামপ্রদায়িক চেতনার এক স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে। বাঙালির আত্মপরিচয় ও শেকড়ের সন্ধান মেলে এর উদ্যাপনের মধ্য দিয়ে। পহেলা বৈশাখের দিকে তাকালে বাঙালি তার মুখচ্ছবি দেখতে পায়। বৈশাখ আমাদের নিয়ে যায় অবারিতভাবে বেড়ে ওঠার বাতায়নে, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধিতে, অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। পাকিস্তান আমলে ঔপনিবেশিক শক্তি বাঙালির ঐতিহ্যকে নস্যাৎ করতে চেয়েছে। বাঙালিরা দুর্বার প্রতিরোধে আত্মপরিচয় ও স্বীয় সংস্কৃতির শক্তিতে তা প্রতিহত করেছে। সেই শক্তিকে ধারণ করে শামিল হয়েছে মুক্তির সংগ্রামে। সংস্কৃতি ও রাজনীতির মিলিত স্রোত স্বাধিকার ও স্বাধীনতার লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এভাবেই বিশ্বের বুকে অভ্যুদয় ঘটেছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। এরই ধারাবাহিকতায় ইউনেস্কো কর্তৃক পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা ২০১৬ সালে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। নববর্ষের–এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিঃসন্দেহে বিরাট অর্জন। এই পথ বেয়ে বিশ্বসমাজে বাঙালি হয়ে উঠবে শ্রেষ্ঠ জাতি।