প্রথমবারের মতো বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার জন্য মনোনীত হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) তিন শিক্ষার্থী। গতকাল শুক্রবার ঢাকার বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ পার্কে সকাল সাতটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত টানা ৪ ঘণ্টা সাঁতার কাটার পর চূড়ান্ত পর্বের জন্য মনোনীত হন তারা। এর আগে বাছাই পর্বে দুই দফায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হতে হয়েছে তাদের।
মনোনীতরা হলেন ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সালাহ উদ্দিন, একই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শফিউল হাসান ও পালি বিভাগের ১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের উজ্জ্বল চৌধুরী। তিনজনই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সুইমিং এবং ওয়াটারপোলো টিমের সদস্য। আগামী ২০ ডিসেম্বর মনোনীতদের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ থেকে সেন্টমার্টিন (বাংলা চ্যানেল) পর্যন্ত ১৬.১ কিলোমিটার সাঁতার কেটে পাড়ি দিতে হবে মনোনীতদের।
২০০৬ সাল থেকে ষড়জ এডভেঞ্চার নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার এ আয়োজন করে আসছেন। এ ব্যাপারে ষড়জ এডভেঞ্চারের নির্বাহী পরিচালক লিপটন সরকার আজাদীকে বলেন, ২০০৬ সাল থেকে আমরা বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার এ আয়োজন করে আসছি। গত বছর ৪৩ জন এ আয়োজনে অংশ নিয়ে ৩৯ জন সফলভাবে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছে। এবারে কতজন অংশ নিবে সেটা আগামী রোববার প্রকাশ করা হবে। নিরাপত্তার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করা হবে।
কথা হয় মনোনীত হওয়া সালাহ উদ্দিনের সাথে। তিনি আজাদীকে বলেন, আমি ছোট বেলা থেকেই কাপ্তাই লেকে সাঁতার কেটে বড় হয়েছি। স্কুল পর্যায় থেকেই সাঁতার কেটে অসংখ্য পুরস্কারের ভাগিদার হয়েছি। ২০১৭ সাল থেকেই স্বপ্ন ছিল একদিন বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিব। সেই লক্ষে পাঁচ বছর ধরে নিজেকে প্রস্তুত করেছি। আনন্দ প্রকাশ করে শফিউল হাসান বলেন, আমার বাড়ি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট। পাশে ছিল গোমতি নদী। ছোট থেকেই নদীতে সাঁতার কাটতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পরও সাঁতার কাটা বন্ধ করিনি। বিশ্ববিদ্যালয় সুইমিং এবং ওয়াটারপোলো টিমের সদস্য হিসেবে সাঁতার কেটেছি এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছি। এখন চ্যালেঞ্জ হলো বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়া। উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, স্কুল থেকেই সাঁতারের প্রতি ঝোঁক ছিল। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে প্রতিযোগিতা করেছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রীয় স্পোর্টস প্রতিযোগিতায় সাঁতার নেই। এটা যুক্ত করা দরকার মনে করি।
ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সায়েন্সের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর আজাদীকে বলেন, খবরটি শুনে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি। এটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গর্বের। তাদের সর্বাঙ্গীন সফলতা কামনা করছি।