বাংলা একাডেমি পুরস্কার গ্রহণ করলেন চট্টগ্রামের তিনজন

পর্দা উঠল বইমেলার, এক মাস চালানোর কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এ বছরও পক্ষকাল দেরিতে একুশের বইমেলা শুরু হলেও তা বরাবরের মতো মাসব্যাপী চালানোর পক্ষে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ‘অমর একুশে বইমেলা-২০২২’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যদিয়ে বাঙালির প্রাণের মেলার ৩৮তম আসর শুরু হলো। গতকাল বাংলা একাডেমি পুরস্কার গ্রহণ করেছেন চট্টগ্রামের তিন কথাসাহিত্যিক ও কবি। খবর বিডিনিউজের।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপটে এ বছরের শুরুতে দেশে রোগীর সংখ্যা আবার বাড়তে থাকায় বইমেলা শুরুও পিছিয়ে দেওয়া হয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সংক্রমণের হার এখন কমে যাওয়ায় মেলা এক মাস চালাতে চাইছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ।
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রদান : কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২১ পেয়েছেন ১৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। গতকাল বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব পুরস্কার প্রদান করা হয়। বাংলা একাডেমি প্রান্তে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হাতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কার তুলে দেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। পুরস্কার বিজয়ী প্রত্যেকে ৩ লাখ টাকার চেক ও ক্রেস্ট লাভ করেন। এবার বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন চট্টগ্রামের তিনজন। এর মধ্যে কবিতায় পেয়েছেন আসাদ মান্নান ও বিমল গুহ। কথাসাহিত্যে বিশ্বজিৎ চৌধুরী। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। বিমল গুহের বাড়ি সাতকানিয়ার বাজালিয়া গ্রামে। আসাদ মান্নানের বাড়ি সন্দ্বীপে।
মেলার সময় বাড়ানো : মেলা উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রকাশকদের পক্ষ থেকেও একটা দাবি এসেছে যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন যে ১৭ই মার্চ, সে হিসেবে মার্চ মাস পর্যন্ত এটা চালাতে পারে। আমি মনে করি যে বই মেলাটা আমরা এক মাস চালাতে পারি। তবে সেটা আপনারা নিজেরাও দেখবেন ভেবে। কারণ আমি একা তো আর কিছু বলতে পারব না। এটা আপনাদেরই…কতটুকু করতে পারবেন। একুশের বইমেলা যে শুধু বইয়ের মেলা নয়, সকলের মিলনমেলা, সেদিক বিবেচনায় মেলার সময়ের ব্যপ্তি বাড়ানোর কথা বলেন সরকার প্রধান। বইমেলায় আসার ক্ষেত্রে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি।
সরকারের টিকা কার্যক্রম নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে টিকা দিচ্ছি। বুস্টার ডোজও দেওয়া হচ্ছে। যারা নেন নাই অবশ্যই তাদেরকে টিকা এবং বুস্টার ডোজটা নিয়ে নিতে হবে।
মহামারীর কারণে সশরীরে মেলায় উপস্থিত থাকতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমার দুঃখ হলো যে করোনার কারণে আমি ঘরবন্দি। ভাগ্যিস ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছিলাম তাই অন্তত এই ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হচ্ছে।
বাংলা একাডেমিকে তাগিদ : সাহিত্য সম্মেলন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো আয়োজন দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে বাংলা একাডেমিকে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেক জেলায় বা মহকুমায় অতীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত, সাহিত্য চর্চা হত, সাহিত্য সম্মেলন হত, সাহিত্য নিয়ে আলোচনা হত। এই চর্চাটা অনেকটা কমে গেছে। এটাকে আবার একটু চালু করা দরকার। আমাদের শিল্পকলা একাডেমি প্রায় প্রত্যেকটা জেলায়, এখন উপজেলা পর্যন্ত করে যাচ্ছি। পাশাপাশি আমাদের এই বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকেও যদি আপনারা একটু উদ্যোগ নেন, তাহলে বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনেক মেধাবী কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী আমরা পাব।
আওয়ামী লীগের দেশ পরিচালনায় দেশের উন্নয়নের গতি বাড়ার পর এখন মানুষের মনের খোরাক দেওয়ার ওপর জোর দেন শেখ হাসিনা। মানুষের হৃদয়ের খোরাকটাও তো দরকার। বিদেশি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে আপত্তি না থাকলেও নিজেদের শেকড় মজবুত করতে বাংলা চর্চার ওপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকোস্ট গার্ডকে আরো সক্ষম ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলছে সরকার : প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধমীরসরাই ইকোনমিক জোনে অধিক জাপানি বিনিয়োগের প্রত্যাশা