‘বাংলার সমৃদ্ধি’ মেরামত করে বহরে আনার ভাবনা বিএসসির

| শুক্রবার , ৩ জুন, ২০২২ at ৪:১৮ পূর্বাহ্ণ

রাশিয়াইউক্রেইন যুদ্ধে গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ মেরামত করে বহরে যুক্ত করার ভাবনার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)। গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি এ পরিকল্পনার কথা জানায়। এদিকে সংসদীয় কমিটি এই জাহাজে হামলার বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিতে একজন মেরিটাইম আইনজীবী নিয়োগ এবং জাহাজটিকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে। খবর বিডিনিউজের।

ইউক্রেইনের ওলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা অবস্থায় গত ২ মার্চ গোলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’, নিহত হন জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান। ৩ মার্চ জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নাবিকদের নামিয়ে একটি শেল্টার হাউজের বাংকারে নেওয়া হয়। হাদিসুরের মরদেহও রাখা হয়েছিল বাংকারের ফ্রিজারে। উদ্ধার পাওয়ার পর জীবিত ২৮ নাবিক রোমানিয়া হয়ে ৯ মার্চ দেশে পৌঁছান। সবশেষ ১৪ মার্চ হাদিসুরের মরদেহ দেশে পৌঁছায়।

বৃহস্পতিবার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ইউক্রেইনে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে জাহাজটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থান করে বিএসসি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নিয়ম অনুসারে জাহাজকে পরিত্যক্ত করে কন্সট্রাক্টিভ টোটাল লস (সিটিএল) কার্যকর করতে হলে স্যালভেজ (উদ্ধার) ও মেরামত খরচ বীমা মূল্যের ৮০ শতাংশের বেশি হতে হয়। বাংলার সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে (বীমা মূল্য ২২ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার) সিটিএল কার্যকর করতে উদ্ধার ও মেরামত খরচ ১৭ দশমিক ৯৮ মিলিয়ন ডলারের বেশি হতে হবে। এর কম হলে সেটি আংশিক ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত হবে এবং এর উদ্ধার ও মেরামত খরচ বীমাকারী (সাধারণ বীমা কর্পোরেশন) থেকে আদায়যোগ্য হবে। সেক্ষেত্রে জাহাজ পরিত্যক্ত না হয়ে উদ্ধার ও মেরামত শেষে বিএসসির বহরে যুক্ত হবে।

কমিটির সদস্য সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল বলেন, বীমা প্রতিষ্ঠান থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করার জন্য আমরা জোর দিয়েছি। জাহাজ পরিত্যক্ত ঘোষণা কিংবা উদ্ধার ও মেরামত যেটা আমাদের জন্য ভালো হবেতা নির্ণয়ে দক্ষ পরামর্শক নিয়োগের কথা বলেছি। আমাদের জন্য যেটা সব থেকে ভালো হয়, সেই উদ্যোগ নিতে বলেছি। এক্ষেত্রে আমরা কূটনৈতিক তৎপরতার ওপর জোর দিতে বলেছি।

বাংলার সমৃদ্ধি’র উদ্ধার ও মেরামত খরচ জানতে মেরিন সার্ভে/ কস্ট এস্টিমেটের কাজে পারদর্শী সিঙ্গাপুর ভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান একুয়ালিস ব্রেমার এলওসি (এবিএল) নিয়োগ দেওয়ার কথা জানিয়ে বিএসসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে জাহাজে সরাসরি উপস্থিত হয়ে সার্ভে করে মেরামত খরচ নির্ণয় করা সম্ভব না হওয়ায় জাহাজের বিভিন্ন তথ্য, ড্যামেজের ছবি, ভিডিও ফুটেজ ইত্যাদি পর্যালোচনা করে রিমোট অ্যাসেসমেন্টের (দূরে বসে ক্ষতি নিরূপণ) মাধ্যমে আনুমানিক মেরামত খরচ নির্ণয় করে এবিএল প্রতিবেদন দিয়েছে। এবিএলের প্রতিবেদনের বরাতে বিএসসি বলছে, জাহাজের আনুমানিক মেরামত খরচ তিন মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং উদ্ধার খরচ শূন্য দশমিক তিন মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তার মানে উদ্ধার ও মেরামতের আনুমানিক মোট খরচ তিন দশমিক ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅভিযানের প্রভাব চালের বাজারে
পরবর্তী নিবন্ধপাওয়ার আশায় নয়, মানুষের জন্য কাজ করতে হবে নিঃস্বার্থভাবে