বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে কর্মকর্তাদের অর্থ–সম্পদ জমা রাখার ব্যক্তিগত সব লকার সাময়িকভাবে অবরুদ্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদক। ওই সব বিশেষ লকারে বিপুল পরিমাণ অপ্রদর্শিত অর্থ–সম্পদ জমা থাকতে পারে বলে দুদক মনে করছে। গতকাল মঙ্গলবার দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে ওই চিঠি পাঠানো হয় গত রোববার।
চিঠিতে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি টিম গত ২৬ জানুয়ারি আদালতের অনুমতি নিয়ে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে রক্ষিত সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরীর সেইফ ডিপোজিট তল্লাশি করে। সেখানে তিনটি সিলগালা কৌটা খুলে ৫৫ হাজার ইউরো, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, ১০০৫.৪ গ্রাম স্বর্ণ এবং ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া যায়। তল্লাশিকালে রেজিস্ট্রার পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরো কিছু কর্মকর্তাও সিলগালা করে সেইফ ডিপোজিট রেখেছেন। এসব সিলগালা কৌটাতেও অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকার অবকাশ রয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান চলমান থাকার কথা তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়, গত ৩০ জানুয়ারি বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত সম্পদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ওই ভল্টে রক্ষিত সম্পদ সাময়িকভাবে ফ্রিজের সম্মতি দিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে রক্ষিত কর্মকর্তাদের সেইফ ডিপোজিট সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত (ফ্রিজ) করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, কেউ যেন লকার খুলে রক্ষিত মালামাল নিতে না পারে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই সব লকার খোলা ও লকারে থাকা অর্থ–সম্পদের তালিকা তৈরির অনুমতির জন্য গত সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজের কাছে একটি আবেদন করে দুদক। আদালতের আদেশ পাওয়ার পর ওই সব লকার খোলা, অর্থ–সম্পদ গণনা ও তালিকা তৈরির জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করে দুদক।