যতই বলা হোক না কেন এখন বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছেন না। কিন্তু সত্যি কথা হচ্ছে আয়ারল্যান্ড নারী দলের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে অবশ্যই বাংলাদেশ দলের চিন্তা সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করা। আর সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দল আজ মাঠে নামছে আয়ারল্যান্ড নারী দলের বিপক্ষে। আজ থেকে মাঠে গড়াচ্ছে সিরিজ। বাংলাদেশের জন্য সিরিজটির গুরুত্ব একটু বেশিই। আগামী বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার জন্য তিন ম্যাচের এই সিরিজ থেকে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট পাওয়া খুবই জরুরি নিগারদের জন্য। সেই অভিযানে প্রথম ম্যাচটি আজ বুধবার। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু সকাল ১০টায়। আইসিসি উইমেন‘স চ্যাম্পিয়নশিপে এখন পর্যন্ত ১৮ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে দশ দলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। বিশ্বকাপে সরাসরি সুযোগ পাবে স্বাগতিক ভারত ও অন্য শীর্ষ ছয় দল। আয়ারল্যান্ডের পর আগামী জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে আরও তিন ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। সেরা ছয়ে থাকার জন্য এই দুই সিরিজে নিগারদের দরকার অন্তত ৮ পয়েন্ট। তাতেও নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে না। তবে পূর্ণ ১২ পয়েন্ট নিতে পারলে মিলবে নিশ্চয়তা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি ম্যাচ জেতাও হবে খুব কঠিন। নিগার অবশ্য এখনই দুই সিরিজ নিয়ে ভাবতে চান না। আইরিশদের বিপক্ষে নামার আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, একটি করে ম্যাচ ধরে এগোতে চান তারা। বিশ্বকাপের চিন্তা অনেক পরে। এখন আমাদের এক–একটি ম্যাচ ধরে মনোযোগ দেওয়া উচিত। আমাদের হাতে এটাসহ দুটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আছে। এখান থেকে পয়েন্ট নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সিরিজ ধরে যদি চিন্তা করি, সেটা ভালো হবে। তাই এই পয়েন্টগুলো নেওয়ার দিকে মনোযোগ থাকবে বেশি। শক্তি–সামর্থ্য, ঘরের মাঠের কন্ডিশন কিংবা দুই দলের মুখোমুখি পরিসংখ্যানের বিচারে এই সিরিজে পরিষ্কার ফেভারিট বাংলাদেশ। দুই দলের আগের ছয় লড়াইয়ে তিনটিতে জয়ী বাংলাদশ। আয়ারল্যান্ড জিতেছে একটি। ফল আসেনি বাকি দুই ম্যাচে। তবে সাত বছরের মধ্যে মুখোমুখি হয়নি দুই দল। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ তারা খেলবে এবারই প্রথম। সামপ্রতিক সময়ে আইরিশদের পারফরম্যান্সে উন্নতির ছাপ আছে স্পষ্ট। সবশেষ ছয় ম্যাচের মধ্যে তারা দুইবার হারিয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। একবার জিতেছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে নিগার মনে করিয়ে দিলেন, আইরিশদের ওই সাফল্য ছিল তাদের ঘরের মাঠে। মিরপুরের বাস্তবতা অন্যরকম। আয়ারল্যান্ড যেসব ম্যাচ জিতেছে, সবগুলো ঘরের মাঠের কন্ডিশনে জিতেছে। এখানে ওদের তেমন ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই। জেতার হার অনেক কম। ওদের সঙ্গে যতবার খেলেছি, আমাদের জয়ের হার অনেক বেশি। সামপ্রতিক সিরিজগুলো যদি দেখেন, অস্ট্রেলিয়া ছাড়া আমরা ভালোই খেলেছি। আর তাদের রেকর্ডটা তাদের মাঠেই। তবে প্রতিপক্ষকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু আমাদের ৬ পয়েন্ট নিতে হবে, খুব গুরুত্বপূর্ণ সিরিজটা। প্রতিটা ম্যাচ মূল্যবান। আমরা চেষ্টা করব দাপট দেখিয়ে খেলতে। আয়ারল্যান্ড আমাদের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে নিচে। যদি আমরা তাদের বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে খেলতে না পারি, তাহলে বড় দলগুলোর বিপক্ষে কীভাবে চোখে চোখ রেখে লড়াই করব। সামপ্রতিক সময়ে অবশ্য ওয়ানডের চেয়ে টি–টোয়েন্টিই বেশি খেলেছে বাংলাদেশ। গত মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর এবারই প্রথম এই সংস্করণে খেলবে বাংলাদেশ। মাঝের সময়ে শুধু টি–টোয়েন্টি খেললেও বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতার ঘাটতি ছিল প্রকট। পাশাপাশি প্রতি ম্যাচেই ফিল্ডিংয়ের কারণে ভুগতে হয়েছে তাদের। সমস্যা কাটিয়ে উঠতে আয়ারল্যান্ড সিরিজের আনুষ্ঠানিক অনুশীলন শুরুর আগে থেকেই বেশ লম্বা প্রাক–প্রস্তুতি ক্যাম্প করেছে বাংলাদেশ দল। সেখানে নিজেদের মধ্যে কিছু প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছেন নিগার, ফারজানা হক, মুর্শিদা খাতুনরা। বাংলাদেশ অধিনায়কের বিশ্বাস, ওসব ম্যাচে ভালো করা ব্যাটাররা সামনের সিরিজেও নিজেদের মেলে ধরবেন।