চট্টগ্রাম বন্দর ও নগরের সুবিধা কাজে লাগিয়ে নেপাল বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে অনেক বেশি প্রসারিত করতে পারে বলে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারিকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। আর নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি বলেন, নেপালের সাথে বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সহজেই ১০০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছানো সম্ভব।
গতকাল টাইগারপাস নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন ঘনশ্যাম ভান্ডারি। এ সময় বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে উভয়ের মধ্যে কথা হয়। নেপালের নিজস্ব সমুদ্রবন্দর না থাকার ঘাটতি নেপাল চাইলে চট্টগ্রামের মাধ্যমে পূরণ করতে পারে বলে ঘনশ্যাম ভান্ডারিকে জানান মেয়র।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নেপাল আমাদের মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে সামরিক ও বেসামরিকভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিল, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তা আমরা চিরকাল শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করব। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও যখন অনেক দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে গড়িমসি করছিল তখন নেপাল স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই ১৯৭২ সালের ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় এবং স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছেন। তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে চট্টগ্রামের অবকাঠামো ঢেলে সাজানো হচ্ছে। আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের অবকাঠামোর উন্নয়নে চসিকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছেন। এছাড়া আরো বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প চলমান আছে। এসব প্রকল্পের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম কেবল বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ারও প্রধান বাণিজ্যিক এলাকায় পরিণত হবে।
রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি বলেন, বাংলাদেশে দ্রুত হারে শিল্পায়ন হচ্ছে। তার জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি পেতে নেপালের সবুজ জ্বালানি উৎপাদনের সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে পারে। যৌথ বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আমরা চট্টগ্রামের সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ও নেপাল উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চাই।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে বিপুল পরিমাণ নেপালি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। আমি তাদের সাথে কথা বলে এবং চট্টগ্রামে ঘুরে যে আন্তরিক ভালোবাসা পেয়েছি তাতে মুগ্ধ। আমি নিজেও বাংলা ভাষা শিখছি। আশা করি, মেয়রের সাথে পরবর্তী সাক্ষাৎকারে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু, শৈবাল দাশ সুমন, সলিম উল্লাহ বাচ্চু, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী ও নেপালের বাংলাদেশ দূতাবাসের থার্ড সেক্রেটারি সুভাশ মাগার।