শাপলা আমাদের জাতীয় ফুল । বর্ষার জল টইটম্বুর খাল, বিল, পুকুর, ডোবাতে যখন ভোরে শাপলা ফুটে তখন এক চমৎকার দৃশ্যের অবতারণা হয় । শাপলা একটি জলজ ফুল । অর্থাৎ পানিতেই এ ফুল জন্মে। শাপলা গাছের মূল বা কন্দ থাকে পানির নিচে। পদ্মফুলের সাথে মিল আছে। রাতের স্নিগ্ধতায় সাদা শাপলা ফোটে, দিনের আলোয় আস্তে–আস্তে বুজে যায় । এ জন্য এর অন্য নাম ‘কুমুদ’। শাপলার নল ৮–১০ ফুট লম্বা হয়। পাতার গোড়ার দিক হৃদপিণ্ডের আকৃতি, ধার ঢেউ খেলানো, ব্যাস সাধারণতঃ ৮–১০ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। এদেশের অনেক অঞ্চলেই শাপলা উপাদেয় খাবার। ফল হয় স্পঞ্জের মতো। এর বীজ রোদে শুকিয়ে খৈ ভাজা যায়। বাংলা–বিহার–উডিষ্যার বিশেষ অঞ্চলের আদিবাসিরা এর খৈ এ নাডু তৈরি করে খায় ও বিক্রি করে । শাপলা ফুলের কলি বেরিয়ে আসে পাতার মতো লম্বা বোঁটা নিয়ে। লম্বাটে সরু মাথা ডিমের মতো হয়। কলি ঘেরা থাকে সবুজ বৃতিতে । ফুল যখন ফোটে তখন সাদা পাপড়িগুলো ছড়িয়ে যায়। মাঝখানে হলুদ কেশর । গন্ধ হালকা । শাপলা–সাদা, হালকা গোলাপি, লাল ও ফিকে লাল ইত্যাদি রঙের চোখে পড়ে। তবে সাদা শাপলাই আমাদের জাতীয় ফুল। শাপলা ফুলের একটা আজব অভ্যেস আছে। এ ফুল একবার ফুটলে দিন সাতেক থাকে । কিন্তু সব সময় ফোটা অবস্থায় নয়। প্রতিদিনই কিছু সময়ের জন্যে সে বন্ধ থাকে । একদিন যে সময়ে পাপড়ি মেলে, পরের দিন মেলে ঠিক তার এক ঘণ্টা পরে। পরদিন বন্ধ হয় তার এক ঘণ্টা আগে । শাপলার নল পানির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে। শাপলার কচিফল শিশুরা মজা করে খায়। শাপলার গোড়ায় থাকে শালুক। এ শালুক নানা রকম কবিরাজি ঔষুধে কাজে লাগানো হয়৷ শাপলা পানিতে জন্মে। বর্ষায় প্রচুর পরিমাণে জন্মে। ফুলে রঙ সাদা, নীল ও লাল হয়। ‘মাঝখানের ঘিয়ে রঙা বৃত্তটি বেশ আকর্ষণীয়। ফুলে সুমিষ্ট গন্ধ রয়েছে। শাপলা ফুলের ইংরেজি নাম ডধঃবৎ খরষু ৩