বাংলাদেশের জাহাজভাঙা শিল্পকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা চায় নরওয়ে

| বৃহস্পতিবার , ১১ মে, ২০২৩ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ (জাহাজভাঙা) শিল্পকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছে নরওয়ের প্রতিনিধি দল। গত ৯ মে রেডিসন ব্লু বেভিউতে বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে নরওয়ের প্রতিনিধিরা এই সহযোগিতা কামনা করেন। নরওয়ের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আসন্ন হংকং কনভেনশনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প আরও একধাপ এগিয়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নরওয়ে সরকারের স্টেট সেক্রেটারি (ডেপুটি মিনিস্টার) রেঙহিলড এসজনিয়ের সারস্তাদ বলেন, ‘আমরা সীতাকুণ্ডে জাহাজভাঙা শিল্প পরিদর্শন করেছি। জাহাজভাঙা শিল্পের পরিবেশ সুরক্ষা এবং কর্মরত শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। আশা করছি বাংলাদেশ সরকার জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প সংক্রান্ত হংকং কনভেনশন (এইচকেসি) রেটিফাই করবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত ইস্পেন রিক্তার সেভেন্ডসেন বলেন, ‘আমি ৯ বছর ধরে বাংলাদেশে আছি। বেশ কয়েকবার চট্টগ্রামে এসেছি। তবে আজ শিপ ব্রেকিং এবং রিসাইক্লিং ইয়ার্ড পরিদর্শন করে এতটুকু বলতে পারি এই শিল্প বাংলাদেশের সমৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। অনেকটা পরিবেশসম্মতভাবে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। আসন্ন হংকং কনভেনশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এই শিল্পকে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আমরা অধীর আগ্রহের সাথে এর জন্য অপেক্ষা করছি।’

পিএইচপি শিপ ব্রেকিং রিসাইক্লিং ইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহুরুল ইসলাম রিংকু বলেন, ‘আমরা জাহাজভাঙা শিল্পের পরিবেশ সুরক্ষা এবং কর্মরত শ্রমিকদের পেশাগত স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি। এ শিল্পের সার্বিক উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের গাইডলাইন অনুযায়ী নরওয়ে সরকারের অর্থ সহায়তায় নিরাপদ এবং পরিবেশগতভাবে শিপ রিসাইক্লিং প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তাছাড়া হংকং কনভেনশনের গাইডলাইন অনুযায়ী জাহাজভাঙা শিল্প ক্রমান্বয়ে গ্রিন শিপ ব্রেকিং এবং রিসাইক্লিংয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’

বর্তমানে ৩টি ইয়ার্ড গ্রিন শিপ ব্রেকিং এবং রিসাইক্লিং ইয়ার্ডে উন্নীত হয়েছে। ইয়ার্ডগুলো গ্রিন শিপ ব্রেকিং এবং রিসাইক্লিং ইয়ার্ড হিসেবে ক্লাসএনকে’র সনদ পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরকালে গত ২৬ এপ্রিল জাপান সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে শিপ রিসাইক্লিং সংক্রান্ত একটি সহযোগিতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়েছে।’ ‘এ অবস্থায় বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স এসোসিয়েশনকে কমলা থেকে লাল শ্রেণীভুক্ত করায় হংকং কনভেনশন রেটিফিকেশনার উদ্যোগে নেতিবাচক প্রভাবের আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থার অবসান এবং পূর্বের নিয়মে সহজে শিপ রিসাইক্লিং কার্যক্রম পরিচালনা করাই আমাদের দাবি।’

বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র উপদেষ্টা অ্যানি গ্ল্যাড ফ্যাডরিখসেন, নরওয়েজিয়ান জাহাজ মালিক সমিতির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হ্যারাল্ড সলবার্গ। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসবিআরএ’র উপদেষ্টা ক্যাপ্টেন (অব.) এনাম চৌধুরী, সিনিয়র সদস্য শওকত আলী চৌধুরী, ভাইস প্রেসিডেন্ট জহুরুল ইসলাম রিংকু, ইসি সদস্য করিম উদ্দিন, সদস্য শওকত আলী চৌধুরী, মো. তসলিম উদ্দিন প্রমুখ। এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে নরওয়ের স্টেট সেক্রেটারি (ডেপুটি মিনিস্টার), নরওয়ের রাষ্ট্রদূত, নরওয়ের বৈদেশিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র এডভাইজারসহ একটি প্রতিনিধিদল সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড পরিদর্শন করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্মক্ষেত্রে শুদ্ধাচার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
পরবর্তী নিবন্ধ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ