দেশের মোট জনসংখ্যার দুই–তৃতীয়াংশ কর্মক্ষম বলে তথ্য দিয়েছে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল– ইউএনএফপিএ। সংস্থাটির হিসাব বলছে, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৫৭ লাখ। এর মধ্যে ১১ কোটি ৫ লাখই কর্মক্ষম বয়সের অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের সামনে জনসংখ্যার এ লভ্যাংশ (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) কাজে লাগানোর সুযোগ থাকার কথা বলছে সংস্থাটি।
গতকাল সোমবার ঢাকার জাতিসংঘ কার্যালয়ে ‘বিশ্ব জনসংখ্যা পরিস্থিতি রিপোর্ট ২০২৫’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরেন ইউএনএফপিএ’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি ক্যাথরিন ব্রিন কামকং। কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর বিপরীতে বয়স্কদের বিষয়ে নজর দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জনসংখ্যার ৭ শতাংশ (১ কোটি ২ লাখ) ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সি, যা আবার জনসংখ্যার বার্ধক্যের সূচনাও নির্দেশ করে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার ১৯ শতাংশ বা ৩ কোটি ৩০ লাখের মতো কিশোর–কিশোরী। আবার ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সি যুবগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি, অর্থাৎ ২৮ শতাংশ। খবর বিডিনিউজের।
ইউএনএফপিএ প্রতিনিধি বলেন, প্রতিবেদনটি ইউএনএফপিএর একটি বৈশ্বিক সমীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে, যা অ্যাকাডেমিক গবেষণা এবং কমিউনিটির বাস্তব অভিজ্ঞতার মাধ্যমে পরিপূর্ণতা পেয়েছে। প্রতিবেদনটি ফার্টিলিটি ও প্রজনন বিষয়ে নিজস্ব কর্তৃত্বের ওপর একটি সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময় দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরছে।
২০২৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ৮২০ কোটি হওয়ার তথ্য ইউএনএফপিএ’র প্রতিবেদনে উঠে আসার তথ্য দেন তিনি। নতুন প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী জন্মহারের ক্ষেত্রে ব্যাপক বৈপরীত্য উঠে আসার তথ্য দিয়ে ক্যাথরিন কামকং বলেন, আমরা এমন একটি বৈশ্বিক জনসংখ্যাগত বৈপরীত্যের সাক্ষী হতে যাচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো উচ্চ আয়ের দেশগুলিতে ফার্টিলিটি তলানিতে নেমে এসেছে। বিশ্বব্যাপী সর্বনিম্ন সংখ্যা নিয়ে সেখানে এই হার প্রতি নারীর মাত্র শূন্য দশমিক ৮ জন সন্তান। বিপরীতে, আফ্রিকার কিছু দেশে উচ্চ জন্মহার অব্যাহত রয়েছে। যেমন, নারী প্রতি ৫ দশমিক ৮ জন সন্তান নিয়ে নাইজেরিয়া মোট জন্মহারে (টিএফআর) সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। আর নারী প্রতি ২ দশমিক ১ জন নিয়ে মোট জন্মহারের দিক থেকে বাংলাদেশ মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে।
বাল্যবিবাহ, গর্ভনিরোধের সীমিত সুযোগ, যৌনশিক্ষা ও জ্ঞানের অভাবে বাংলাদেশে কৈশোরকালীন জন্মহার বেশি হওয়ার তথ্য দেন ইউএনএফপিএ প্রতিনিধি।