বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ভারতও বুঝবে, আশা ফখরুলের

গণজাগরণ হলে বিদেশিরা এগিয়ে আসবে না

আজাদী ডেস্ক | রবিবার , ২০ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

সব দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে ভারত সমর্থন দেবে বলে আশা করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে ভারতসংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবর নিয়ে গতকাল এই প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।

বাংলাদেশের নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থান নিয়েছে, তার সঙ্গে নয়া দিল্লি একমত নয় বলে ভারতের সংবাদ মাধ্যমে খবর এসেছে। এক কূটনৈতিক পত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হয়ে পড়লে ভূরাজনৈতিক দিক থেকে তা ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষেই সুখকর হবে না। খবর বিডিনিউজের।

সাংবাদিকরা এই সংবাদ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, আমরা পত্রিকায় দেখলাম, আজকে ডয়েচে ভেলের বরাত দিয়ে পত্রিকায় রিপোর্ট করা হয়েছে। এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এজন্য যে, আজকে বাংলাদেশে যে সংকট, সেই সংকটের মূলে হচ্ছে এই অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার যে লক্ষ্য, সেই লক্ষ্যটাই। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের মানুষের ওপর যে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে রাষ্ট্রকে দিয়ে, বাংলাদেশে যে একটা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস গড়ে তোলা হয়েছে, বলা যেতে পারে যে, টোটালি একটা ডিপ স্টেট তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশ, যারা গণতন্ত্রের কথা বলে সবসময়, তাদের কাছে এটা অপ্রত্যাশিত, যদি এই নিউজটা সত্যি হয়ে থাকে।

ভারতের অবস্থান বাংলাদেশের জনগণের চাওয়ার বিপরীতে যাবে নাএই আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা নিশ্চয় এটা আশা করব, ভারত বাংলাদেশের মানুষের যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা, সেই আকাঙ্ক্ষাকে মর্যাদা দেবে। এই দেশে সত্যিকার অর্থেই সকল দলের অংশগ্রহণে, সকলের সদিচ্ছায় একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যাপারে তারা (ভারত) পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করবে।

স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সহযোগী সংগঠনটির নেতাদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই কথাটা আমরা কখনই বলতাম না, বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আমরা দেখতে পারছি যদি নিউজটা সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে বাংলাদেশে রাজনীতির অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তারা হস্তক্ষেপ করছে।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষের উপর আস্থা রাখি, তাদের শক্তির ওপর আস্থা রাখি। আমি মনে করি, ভারত দেখবে বাংলাদেশের মানুষ কী চায়? বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি তারা (ভারত) কোনো পদক্ষেপ নেয়, সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক এবং এই অঞ্চলের মানুষের জন্যও সেটা শুভ হবে না।

গণজাগরণ হলে বিদেশিরা এগিয়ে আসবে না : বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে বর্তমান সরকার টিকে আছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে গতকাল নয়া পল্টনে পথযাত্রাপূর্ব সমাবেশে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, আজকে জনগণ জেগে উঠেছে। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি, দেশের এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিঘ্ন সৃষ্টি করবেন না।

তিনি বলেন, আমরা জানি, এই দেশের সরকার বিদেশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে টিকে আছে। কোনো বিদেশি এগিয়ে আসবে না যখন জনগণের সেই উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে। অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, আমরা এই মিছিল (পদযাত্রা) থেকে আবারও এই বার্তা দিতে চাই, এখনো সময় আছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, যে সমস্ত মিথ্যা মামলায় আমাদের নেতাকর্মীদেরকে সাজা দিয়েছে, তাদের সকলকে মুক্তি দিতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের অসুস্থতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ডাক্তাররা বারবার বলেছে, তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হোক। এই সরকার তাদের কথায় কোনো কর্ণপাত করছে না। এজন্য করছে না তারা জানে যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বেরোলে তাদের মসনদ, তাদের সিংহাসন ঠিক থাকবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের কোনো নির্বাচনে ভারতের হস্তক্ষেপ দেখছেন না কাদের
পরবর্তী নিবন্ধক্ষমতার জন্য বিশ্বের অন্য কোথাও জীবন্ত মানুষ পোড়ানো হয়নি : তথ্যমন্ত্রী