বাংলাদেশের কোনো নির্বাচনে ভারতের হস্তক্ষেপ দেখছেন না কাদের

ডেঙ্গুর সঙ্গে বিএনপির তুলনা

আজাদী ডেস্ক | রবিবার , ২০ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

ভারত কখনোই বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেনি বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রতিবেশী দেশটি তাদের ধারণ করা গণতন্ত্রের চেতনা ও মতাদর্শ বজায় রেখেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা কোনো ইলেকশনে আমাদের একটা কথাও বলেনি; বাংলাদেশের নির্বাচন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রেও। এখানে ইন্টারভেনশন (হস্তক্ষেপ) কেন? আর ভারত কোথায় ইন্টারভেনশন করেছে?

গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবসের আলোচনা সভায় বক্তৃতা করছিলেন ওবায়দুল কাদের। বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারতের বার্তা পাঠানোর বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব আমরা এখান থেকে জানি না। এটা অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের বিষয়, এখানে বাংলাদেশের কী করার আছে? পঁচাত্তরে কি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ভারত এসে আমাদেরকে গদিতে বসিয়ে দিয়েছে? তারপরে আসেন, জোর করে আমাদের হারানো হয়েছে ২০০১ সালে। অস্বাভাবিক সরকারের মাধ্যমে, তখন কি ভারত এসে ইন্টারফেয়ার করেছে? খবর বিডিনিউজের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারাও তো রাতের বেলায় গিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারের বাসা থেকে ডিনার খেয়ে এসেছেন, আমরা টেলিভিশন নিয়ে যাইনি, বাইরে দেখি আপনারা বাংলাদেশের সব টেলিভিশন খবর দিয়েই গেছেন। ভারতের সঙ্গে মিত্রতা করতেছি, সেই মিত্রতা হলো না, কোনো আওয়াজও হলো না। আমাদের তিনজনকে দাওয়াত দিয়েছে, তিনজনই গেছি, কথাবার্তা বলেছি, নির্বাচন নিয়ে কোনো কথাই বলতে দেয়নি। কীভাবে ইলেকশন হবে কথা প্রসঙ্গে হয়ত কথা এসেছে।

তিনি বলেন, এতদিন আমেরিকার দিকে আটলান্টিকের ওপারে তাকাতে তাকাতে বিএনপি নেতাদের দৃষ্টি শক্তি ঝাপসা হয়ে গেছে। খবর আসে না, ভিসা নীতি আসে না, এল না কেন? শেখ হাসিনা যায় না কেন, ক্ষমতা থেকে উঠে যায় না কেন, এসব নিয়ে তাদের রাতের ঘুম হারাম। এখন আবার কী একটা বার্তা দিয়েছে, এটা আমেরিকা আর ভারতের ব্যাপার, উই আর নট ইন্টারেস্ট। সেখানে কমেন্ট করে, অবস্থাটা এমন, ভীতিভয়ে হাত পা মনে হয় গুটিয়ে ফেলেছে নেতারা। ভারত ভীতিতে সারা রাতে কয়বার যে জাগন হয়, ঘুম ভেঙে যায়। আরে ফখরুল সাহেব, এ দেশের জণগণ আমাদের ভোট দেবে। আমাদের কাজ দিয়ে আমরা ভোট চাই, আমাদের উন্নয়ন দিয়ে আমরা ভোট চাই।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ, কিছু হয়ে গেলে সব দায় সরকারেরবিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাদের বলেন, আসলে আমরা একটা বিষয় লক্ষ্য করছি, বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি নেতাদের যতটা না উদ্বেগ, তার চেয়ে বেশি রাজনীতি করে তারা বেগম জিয়ার স্বাস্থ্যকে কেন্দ্র করে। নোংরা পলিটিঙ করছে, বেগম জিয়া এখন যে বাসায়, আপন ঘরে, সেটাও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এখন তিনি কষ্ট পাচ্ছেন, বয়সও হয়েছে, তিনি আরোগ্য লাভ করুক, আমরা চাই, কিন্তু আইনের কাঠামোর বাইরে তো আমরা কিছু করতে পারি না। জোর করে শেখ হাসিনা তাকে ঘরে বসিয়ে রাখছেনএটা তো এমন নয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন ফখরুল সাহেবদের সুবিধাই হলো। একটু অস্বস্তি বা অসুস্থ হলে ওই হইচই শুরু হয়। তাকে মরার আগে মেরে ফেলছে। সে এখন মৃত্যু শয্যায়, এটা সে বলছে, কত বছর আগে থেকে বলেই যাচ্ছে। আরে আল্লাহ না মারলে তোমরা মারতে পারবা? আর সেটাকে কেন্দ্র করে রাজনীতি। এই রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান, মানবিক কারণে তার জন্য যা করার আমরা করছি।

ডেঙ্গুর সঙ্গে বিএনপির তুলনা : ঢাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে এই রোগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করে দলটির বিষয়ে জনগণকে সতর্ক করেছেন ওবায়দুল কাদের। দেশে ডেঙ্গু ভয়ানক রূপ নেওয়ায় এ বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করতে গতকাল ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে সচেতনতামূলক সভা করে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ কমিটি।

সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেওয়া কাদের বক্তৃতায় বলেন, আজকে চার দিক থেকেই বিপদ, নানা রকম বিপদ। আজকে ডেঙ্গু থেকে সাবধান। ডেঙ্গুর মতো ভয়ঙ্কর বিএনপি থেকেও সাবধান। আজকে দেশের প্রধান দুই শত্রু, এক শত্রু বিএনপি, আরেক শত্রু ডেঙ্গু। আসুন আমরা সম্মিলিতভাবে এই শত্রু প্রতিরোধ করি।

বিএনপি নেতাদের কথার জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিদেশে ‘পাচার করা’ অর্থের চিন্তায় নাকি আমরা বিভোর। বিদেশে অর্থ পাচার কারা করেছে? সেটা ধরা পড়ে গেছে এফবিআইয়ের সাক্ষ্যে। তাদের নেতা বিদেশে পালিয়ে গেছে। কথায় কথায় পলায়নের কথা বলেন ফখরুল এবং মির্জা আব্বাস। লজ্জা করে না? আপনাদের দলের এখন যিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান, তিনি তো দণ্ডিত পলাতক। আমরা পালাব কেন? পালিয়েছেন তো আপনারা।

কাদের বলেন, তারেক রহমানের কেন সৎ সাহস নেই দেশে এসে আন্দোলনে করে আপনাদের এক দফার বাণী প্রচার করতে? এই কাপুরুষ, এই ভীরু, পলাতক নেতার নেতৃত্বে রিমোট কন্ট্রোলে আন্দোলন বাস্তবায়িত হয়নি, রিমোট কন্ট্রোল আন্দোলন বাংলাদেশে হয় না।

ডেঙ্গু প্রতিরোধের এই কর্মসূচি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হয়। আমাদের বাঁচতে হলে ডেঙ্গু বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। শুধু রাজনীতি করলে হবে না। আজকে মানুষকে বাঁচানোর রাজনীতি সবার আগে। এ ব্যাপারে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমশা নিধনের নামে তামাশা চলছে : কীটতত্ত্ববিদ মনজুর
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ভারতও বুঝবে, আশা ফখরুলের