গ্রুপ পর্বে শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল আফগানিস্তানের জন্য ডু অর ডাই। আর সে ম্যাচে ১৭০ রানের লক্ষ্য দিয়েও ম্যাচ হারার হতাশা আছে আফগানদের। বোলারদের পারফরম্যান্স ভালো না হওয়ার অতৃপ্তি আছে। তবে রাশিদ খানের মতে, বড় সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে আগের ম্যাচেই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে এশিয়া কাপ থেকে বাদ পড়ে আফগানিস্তানের অধিনায়ক বললেন বাংলাদেশের বিপক্ষে জিততে না পেরেই মূল সর্বনাশ হয়ে গেছে তাদের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গত বৃহস্পতিবার ৬ উইকেটে হেরে এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে আফগানিস্তান। ম্যাচটি জিতলেই তারা উঠে যেত সুপার ফোর পর্বে। আফগানরা হেরে যাওয়ায় পরের ধাপে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ। আবুধাবিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানরা দীর্ঘসময় ধরেই ধুঁকছিল। ১৮ ওভার শেষে তাদের রান ছিল ৭ উইকেটে ১২০। তবে পরের দুই ওভারে তাণ্ডব চালান মোহাম্মাদ নাবি। ১৯তম ওভারে দুশমান্থা চামিরার বলে টানা তিনটি চার মারেন তিনি। শেষ ওভারে টানা পাঁচটি ছক্কায় বিধ্বস্ত করেন বাঁহাতি স্পিনার দুনিথ ওয়েলালাগেকে। শেষ দুই ওভারে ৪৯ রান তুলে ১৬৯ রানে পৌঁছায় আফগানরা, এই মাঠের জন্য যা বেশ ভালো স্কোর। তবে সেই স্কোর টপকে শ্রীলঙ্কা ৮ বল বাকি থাকতেই জিতে যায় বেশ সহজে।
আফগানদের মূল শক্তি বোলিং। ম্যাচের পর সেই বোলিংকেই হারের দায় দিলেন রাশিদ খান। যেভাবে আমরা ইনিংস শেষ করেছি তা স্পেশাল ছিল । আমরা জানতাম স্পিনারের একটি ওভার বাকি আছে এবং উপযুক্ত একজন ব্যাটসম্যান ক্রিজে থাকলে সর্বোচ্চ সুযোগ থাকবে কাজে লাগানোর। যতটা ভালো বল করা উচিত ছিল ততটা পারিনি আমরা এবং এজন্যই ম্যাচ হেরেছি। এই ধরনের উইকেটে অবশ্য কাজটা কঠিন। প্রথাগত স্পিনিং উইকেট নয় এটি। বলা যায় দুবাইয়ের চেয়ে আলাদা। তার পরও ভালো ক্রিকেটীয় শট খেললে এখানে ১৭০–১৮০ রান তাড়া করা যায়। গত মঙ্গলবার এই মাঠেই বাংলাদেশের বিপক্ষে এর চেয়ে কম রান তাড়ায় জিততে পারেনি আফগানরা। সেদিন প্রথম ১০ ওভারে ৮৭ রান করা বাংলাদেশকে পরে ১৫৪ রানেই আটকে রাখে আফগান বোলাররা। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় পরে তারা হেরে যায় ৮ রানে। বাদ পড়ার পর সেই ম্যাচ নিয়েই আফসোস ফুটে উঠল আফগান অধিনায়কের কণ্ঠে।
রশিদ খান বলেন আমাদের দারুণ সুযোগ ছিল আগের ম্যাচটিতে। কিন্তু সেদিন ১৫৫ রান তাড়া করতে পারিনি। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে অবশ্য এমন হয়েই থাকে। টি–টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে এখন বেশ প্রতিষ্ঠিত শক্তিই বলা যায়। গত বিশ্বকাপে তারা সেমি–ফাইনাল খেলেছে। গত এশিয়া কাপ টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে টপকে তারা খেলেছিল সুপার ফোর পর্বে। এবার গ্রুপ থেকেই বাড় পড়ায় রাশিদ প্রচণ্ড হতাশ। তবে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়ও শোনালেন আফগান অধিনায়ক। তিনি বলেন আমাদেরকে সামনে তাকাতে হবে এবং ভুলের পুনরাবৃত্তি করা যাবে না। গত তিন বছরে আইসিসি ইভেন্ট ও এশিয়া কাপে অনেক ম্যাচ খেলেছি আমরা। প্রতিটির জন্যই ভালো প্রস্তুতি ছিল। এবারও ছেলেদের কাছে আরও অনেক বেশি প্রত্যাশা ছিল আমার। এত দ্রুত বাদ পড়ার আশা করিনি। গত টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমি–ফাইনালে খেলেছি আমরা। এখানেও আশা ছিল অন্তত পরের রাউন্ডে যাওয়ার। আমরা এটা নিয়ে ভাবব, বিশ্লেষণ করব এবং দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াব। আফগানিস্তানের পরের সিরিজ বাংলাদেশের বিপক্ষেই। এশিয়া কাপের ঠিক পর সংযুক্ত আরব আমিরাতেই তিন ম্যাচের টি–টোয়েন্টি ও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলবে দুই দল। সিরিজটি শুরু ২ অক্টোবর।