জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেজ ২০২২ সালে ঘোষণা করেছিলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’। কিন্তু, উন্নয়নের ধুয়া তুলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সাড়ে পনেরো বছর ধরে গেড়ে বসা শেখ হাসিনাকে স্বৈরশাসক অভিহিত করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঐতিহাসিক গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত করেছে ছাত্র–জনতার অভূতপূর্ব সংগ্রাম। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের তিনটি সংসদীয় নির্বাচনকে একতরফা নির্বাচন বানিয়ে এবং জালিয়াতির মাধ্যমে বরবাদ করে দিয়ে গণ–অভ্যুত্থানকে ডেকে এনেছেন শেখ হাসিনাই। তাঁর পতন ও লজ্জাজনক পলায়ন আবারো প্রমাণ করলো যে বাংলাদেশের জনগণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দোহাই দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী স্বৈরশাসনকে বেশিদিন বরদাশত করে না। বক্ষ্যমাণ নিবন্ধে আজ আমি বলতে চাই যে বাংলাদেশের প্রধান সামুদ্রিক বন্দর এবং একমাত্র স্বাভাবিক পোতাশ্রয় চট্টগ্রাম দেশের অর্থনীতির লাইফলাইনের অন্যতম প্রধান ধারক হওয়া সত্ত্বেও দুঃখজনকভাবে বরাবরই শেখ হাসিনার অবহেলা ও সুপরিকল্পিত বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছিল। ইতিহাস ও প্রকৃতি–নির্দিষ্ট প্রধান সামুদ্রিক বন্দরের যৌক্তিক অবস্থান সত্ত্বেও চট্টগ্রামের এই ভূমিকা পালনে রাজনীতি–সৃষ্ট বাধা পথ আগলে দাঁড়াচ্ছিল দশকের পর দশক ধরে। তাত্ত্বিকভাবে বলতে হবে, একটি নব্য–ঔপনিবেশিক ধাঁচের আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাষ্ট্র্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার ক্রম–কেন্দ্রিকরণের বিষময় ফল হিসেবে উন্নয়ন প্রয়াসের ঢাকা–কেন্দ্রিকতা চট্টগ্রামকে বিমাতাসুলভ বৈষম্যের শিকারে পরিণত করেছে। তাই রাজধানী ঢাকার চাকচিক্য ও জৌলুসপূর্ণ বিকাশের তুলনায় চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক গতি প্রকৃতিকে ওয়াকিবহাল মহল হতাশাজনক বলে অভিহিত করছেন এবং সমস্যার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে রাষ্ট্রীয় নীতি–প্রণেতাদের অবহেলা ও বৈরিতাকেই চিহ্নিত করছেন। একইসাথে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অগ্রাধিকার নির্ধারণে দক্ষিণ–পশ্চিম বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রয়োজন যেভাবে প্রতিফলিত হয়ে থাকতো সে তুলনায় চট্টগ্রাম বন্দরকে সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের আবশ্যকতা যে যথাযথ গুরুত্ব পাচ্ছিল না সেটাকেও দুঃখজনক অভিহিত করা উচিত মনে করি।
২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশ ঘোষণা করার কথা থাকলেও করোনা ভাইরাস মহামারির বিপর্যয়ের ফলে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের প্রাপ্য সুবিধাগুলো ২০২৬ সাল পর্যন্ত চালু রাখার আহ্বান জানিয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের মোট আমদানি পণ্যের প্রায় ৮৫–৯০ শতাংশ এবং রপ্তানি পণ্যের ৮৫ শতাংশ পরিবাহিত হয়ে থাকে। এই প্রাকৃতিক পোতাশ্রয়টি কর্ণফুলী নদী ও বঙ্গোপসাগরের সংযোগস্থল থেকে মাত্র ৯ নটিক্যাল মাইল অভ্যন্তরে অবস্থিত হওয়ায় নদীপথের নাব্যতা সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণ এবং মালামাল উঠানামা করানো বেশ সুবিধেজনক বিধায় বৃটিশ ভারতের উত্তর–পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলীয় বিশাল অর্থনৈতিক পশ্চাদ্ভূমির সহজতম সামুদ্রিক করিডর হিসেবে চট্টগ্রাম ক্রমবর্ধমান ভূমিকা পালন করছিল। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে বর্তমান ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ রাজ্যগুলো কিংবা নেপাল ও ভুটানের বৈদেশিক বাণিজ্যের ট্রাফিক আজো চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে পারছে না। একটি আঞ্চলিক আমদানি–রপ্তানি কেন্দ্র হিসেবে চট্টগ্রাম গড়ে উঠতে পারলে একটি বিশাল পশ্চাদ্্ভূমির সুবিধা পুনরুদ্ধারের ব্যাপারটি দেশের পুরো অর্থনীতির জন্য সুফল বয়ে আনবে। দেশের প্রধান বন্দর–নগরী হওয়ার সুবাদে চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্পাঞ্চল হিসেবেও গড়ে উঠেছে। রপ্তানি–চালিত শিল্পায়নকে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান কৌশল হিসেবে গুরুত্ব প্রদানের ফলে চট্টগ্রামের এতদ্সম্পর্কীয় ভূমিকার গুরুত্বও দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। গার্মেন্টস শিল্প, চিংড়ি ও অন্যান্য সামুদ্রিক মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, রাসায়নিক সার শিল্প, বিশেষায়িত বস্ত্র শিল্প প্রভৃতি ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের তুলনামূলক সুবিধা প্রশ্নাতীত হলেও বেশিরভাগ শিল্প ঢাকায় কেন্দ্রীভূত হয়ে গেছে। বাংলাদেশের প্রথম শতভাগ রফতানিমুখী পোষাক শিল্প কারখানা ‘দেশ গার্মেন্টস’ ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল চট্টগ্রামেই, কিন্তু গত ৪৬ বছরে গার্মেন্টস শিল্প চলে গেছে ঢাকায় ও নারায়নগঞ্জে। বাংলাদেশের প্রথম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল চট্টগ্রামেই। সম্প্রতি মিরসরাইয়ে দেশের সবচেয়ে বড় শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠার কাজও দ্রুত এগিয়ে চলেছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত টানেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীকে কর্ণফুলী নদীর উত্তর ও দক্ষিণ উভয় তীরে সম্প্রসারিত করার সম্ভাবনা সৃষ্টির ফলে শিল্পায়ন ও নগরায়নে ভবিষ্যতে প্রভূত গতিসঞ্চার হবে সন্দেহ নেই। ইতোমধ্যেই কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে আনোয়ারা থানায় কোরিয়ান ইপিজেড স্থাপিত হয়েছে, এবং চাইনীজ ইপিজেড স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৩০ মাইল দীর্ঘ প্রস্তাবিত মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মিরসরাই থেকে কর্ণফুলী টানেল হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত প্রায় ১৮০ মাইল দীর্ঘ বঙ্গোপসাগর–উপকূল জুড়ে শিল্পাঞ্চল, পর্যটন কেন্দ্র এবং নতুন নতুন বন্দর ও শহর গড়ে ওঠার অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।
কিন্তু, সম্ভাবনা ও বাস্তবের মধ্যে যে বিরাট ফারাক্ সেটা সত্যিই দুঃখজনক। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৯০ শতাংশের মত আমদানী ও ৮৫ শতাংশ রফতানী পণ্য পরিবাহিত হলেও এই স্বাভাবিক পোতাশ্রয়টি যে ইতোমধ্যেই একটি ‘লাইটারেজ পোর্টে’ পরিণত হয়ে গেছে তা হয়তো অনেকেরই জানা নেই। মানে, সাড়ে ৯ মিটারের বেশি ড্রাফটের কোন মালবাহী জাহাজ এখন চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে প্রবেশ করতে পারে না। ওগুলোকে হয়তো বন্দরের বাইরে বঙ্গোপসাগরের আউটার এনকরেজে নয়তো কুতুবদিয়ার কাছাকাছি সাগরে নোঙর করতে হয়, যেখান থেকে লাইটারেজ ভ্যাসেল বা কোস্টারে করে মালামাল খালাস করে বন্দরের জেটিতে নিয়ে আসতে হয়। অথবা, আরো বড় মাদার ভ্যাসেলগুলো থেকে সিঙ্গাপুরে বা কলম্বো বন্দরে মালামালের কন্টেনারগুলো আনলোড করে ‘কন্টেনারবাহী জাহাজের’ মাধ্যমে আমদানীকৃত মালামাল চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে নিয়ে আসতে হয়। অপরদিকে, রফতানী পণ্যেরও বেশিরভাগ কন্টেনার জাহাজে ভরে ঐ দুই বন্দরের মাদার ভ্যাসেলগুলোতে তুলে দিতে হয়। এসব কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানী পণ্য পরিবহনের খরচ প্রতিবেশী দেশগুলোর বন্দরের তুলনায় ২০–২৫ শতাংশ বেশি পড়ছে, সময়ও লাগছে অনেক বেশি। এর মানে দাঁড়াচ্ছে, চট্টগ্রাম বন্দর এখন একটি প্রতিবন্ধী বা পঙ্গু বন্দরে পরিণত হয়েছে। অথচ, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ সম্পর্কে প্রযুক্তি–জ্ঞানের অভাব না থাকলেও স্রেফ সরকারের অবহেলা ও অমনোযোগের কারণে সমস্যা–সমাধান করা যাচ্ছে না। চট্টগ্রাম বন্দর ইতোমধ্যেই একটি ‘লাইটারেজ পোর্টে’ পরিণত হলেও সরকার বন্দরের এই সীমাবদ্ধতা নিরসনের জন্য প্রস্তাবিত ‘বে–টার্মিনাল’ নির্মাণকে যথাযথ অগ্রাধিকার দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। প্রায় তের মিটার ড্রাফটের জাহাজ বে–টার্মিনালে প্রবেশ করে মালামাল খালাস করতে পারবে বলে প্রকল্প–প্রস্তাবে দাবি করা হলেও গত পাঁচ বছর ধরে রহস্যজনক কারণে বে–টার্মিনাল নির্মাণ কাজ অত্যন্ত ধীর গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। (কিছুদিন আগে অবশ্য এ–সম্পর্কীত অর্থায়নের বিষয়টিতে নতুন করে গতি সঞ্চারিত হয়েছে)।
চট্টগ্রামের অর্থনীতিতে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স প্রায় সাড়ে চার দশক যাবত উল্লেখযোগ্য গতিশীলতা সৃষ্টি করে চলেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কর্মরত বাংলাদেশীদের বড় অংশই চট্টগ্রামের বাসিন্দা। প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে প্রবাসীদের উপার্জিত বৈদেশিক আয়ের যে বিশাল প্রবাহ চট্টগ্রামের অর্থনীতিতে প্রবেশ করছে, এর ফলে চট্টগ্রামের গ্রামীণ ও শহুরে বিনিয়োগ খাতগুলোতে ব্যক্তিগত পুঁজির যোগান উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু, গৃহনির্মাণ, দোকানদারি, বাণিজ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, পরিবহন ইত্যাদি কয়েকটি খাত ছাড়া অন্যত্র বিনিয়োগে অপ্রাতিষ্ঠানিক চ্যানেলে আসা রেমিট্যান্সকে সহজে আকৃষ্ট করা যাচ্ছে না। আরো দুঃখজনক হলো, হুন্ডি ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রেরিত রেমিট্যান্সের একটা অংশ ব্যবỊত হচ্ছে বিদেশে পুঁজি পাচারের প্রয়োজনে এবং মানি লন্ডারিং কিংবা চোরাচালান অর্থায়নে। নানা ধরনের অপচয়মূলক ভোগকেও উৎসাহিত করছে রেমিট্যান্স। চট্টগ্রামের অর্থনীতিতে কিছুটা স্থানীয় মুদ্রাস্ফীতি সমস্যাও সৃষ্টি করছে রেমিট্যান্সের এই অতিরিক্ত ভোগ–প্রবণতা। অতএব, এক্ষেত্রেও সমস্যার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে একটা বিপুল সম্ভাবনা। চট্টগ্রামের অর্থনীতির সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে চোরাচালানও গুরুত্বের দাবিদার হবে নিঃসন্দেহে। দেশের অর্থনীতির জন্যও চোরাচালান একটি গুরুতর সমস্যা। গণচীন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর উৎপাদিত পণ্য এদেশে অবৈধ প্রবেশের অন্যতম প্রধান করিডর হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম। এসব পণ্যের একাংশ আবার অবৈধ পথে ভারতেও পাচার হয়ে যায়, বিশেষত ‘সেভেন সিস্টার্স’ রাজ্যগুলোতে। চট্টগ্রামের বণিক–পুঁজির একটা উল্লেখযোগ্য অংশ যে চোরাচালান থেকে মুনাফা আহরণে বিনিয়োজিত রয়েছে, সে সম্পর্কে কারো সন্দেহ থাকা উচিত নয়। অতএব, এক্ষণে করণীয় হলো এই পুঁজিকে উৎপাদনশীল বিনিয়োগে ফেরানোর জন্য উপযুক্ত নীতি–নির্ধারণ।
বৃটিশ–ভারতে আসাম–বেঙ্গল রেলওয়ের হেডকোয়ার্টার্স ছিলো চট্টগ্রাম। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী এক দশক পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়ের সদর দফতরও ছিলো চট্টগ্রামেই, কিন্তু এখন তা ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়েছে। ফলে, চট্টগ্রাম শহরের যে বিশাল এলাকা জুড়ে রেলওয়ের সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল তা অনেকটুকুই অব্যবহৃত বা অর্ধ–ব্যবহৃত স্থাপনা হয়ে পড়েছে বলা চলে। ক্রমাগত লোকসানের দরিয়ায় হাবুডুবু খাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঢাকা থেকে নারায়নগঞ্জ ও লাকসাম (বা কুমিল্লা) হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ‘কর্ডলাইন’ রেলপথ স্থাপনের কাজটি কোন অজ্ঞাত কারণে ঝুলে রয়েছে। অবশ্য, সম্প্রতি চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের কাজটি শেষ হওয়ায় ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন–চলাচল শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামের অর্থনীতির সম্ভাবনার আরেকটি দিক নিহিত রয়েছে পর্যটন খাতের পরিকল্পিত সম্প্রসারণে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বাংলাদেশের মধ্যে চট্টগ্রামের খ্যাতি সুবিদিত। কিন্তু, এক্ষেত্রেও নীতি প্রণেতাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন প্রয়োজন হবে। এখনো বিদেশী পর্যটককে বাংলাদেশে সহজে আকৃষ্ট করা যাচ্ছে না। তাই, দেশীয় মধ্যবিত্ত পর্যটকদের উপযুক্ত সুবিধা গড়ে তোলার দিকে নজর ফেরানো প্রয়োজন। একই সাথে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, মিয়ানমার বা দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর পর্যটকদেরকে আকর্ষণ করার চেষ্টা চালানো উচিত। সম্প্রতি পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত আধুনিকীকরণের ফলে সেখানে পর্যটকদের যে বিপুল সমাবেশ হচ্ছে তা থেকে বোঝা যায় পর্যটন প্রকল্পগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে সম্পন্ন করা হলে চট্টগ্রামের আকর্ষণ দ্রুত বাড়বে। এতদুদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে সত্যিকারভাবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সঠিক প্রণোদনার মাধ্যমে চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলোর উন্নয়নে ব্যক্তি উদ্যোগকে আমন্ত্রণ জানালে যথোপযুক্ত সাড়া পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা যায়।
বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় চট্টগ্রামের জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থা কম দুর্দশা–প্রপীড়িত মনে করা হয়। (বাংলাদেশে গড় মাথাপিছু আয়ের তুলনায় চট্টগ্রামের জনগণের মাথাপিছু আয় ৪০ শতাংশ বেশি হলেও স্থানীয় মুদ্রাস্ফীতির তারতম্য বিবেচনায় নিলে জীবনযাত্রার মানে হেরফের অনেকখানি কমে যাবে)। কিন্তু, দেশের নীতি প্রণেতারা যখন রাষ্ট্রীয় সম্পদ বন্টনের আঞ্চলিক বরাদ্দ নির্ধারণ করেন, তখন চট্টগ্রামের আপেক্ষিক বরাদ্দ নির্ধারণের সময় চট্টগ্রামের আপেক্ষিক সমৃদ্ধির চিত্রটাই হয়তো তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিকে খানিকটা আচ্ছন্ন করে ফেলে। এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন দেখা যাবে চট্টগ্রামের ভৌত অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক–সামাজিক ‘ওভারহেড ক্যাপিটাল’ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের আপেক্ষিক বঞ্চনার ব্যাপারটিতে। বিদ্যুৎ, টেলিফোন, রাস্তাঘাট, পুল–কালভার্ট, খালখনন কিংবা পানি নিষ্কাশন ও জলাবদ্ধতা নিরসন প্রতিটি ব্যাপারেই চট্টগ্রামের ন্যায্য হিস্যা পাওয়া যাচ্ছে না। আরো দুঃখজনক হলো, পটুয়াখালীতে পায়রা সমুদ্র–বন্দর নির্মাণের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের ফান্ড থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অবশ্য, সাম্প্রতিককালে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কয়েকটি ফ্লাইওভার সহ নগরীর সড়কগুলোর উন্নয়ন সম্পন্ন করায় অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন ও পানি নিষ্কাশন প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতার সমস্যাটির আগামী দু’বছরের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম শহরের বিদ্যুতের লোডশেডিং, নাগরিক বিনোদন ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততা, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রতি সরকারি অবহেলা, উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব – এগুলো ইদানীং চট্টগ্রামের আঞ্চলিক বঞ্চনার ইস্যু হিসেবে সামনের কাতারে চলে এসেছে। ইস্যুগুলো প্রামাণ্য হয়ে দাঁড়ায় ঢাকার সাথে চট্টগ্রামকে তুলনা করলে। নীতি–প্রণেতাদের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এসব ইস্যু সৃষ্টি হয়েছে বলেই সমাধানও আসতে হবে ঐ দৃষ্টিভঙ্গির আশু পরিবর্তনের মাধ্যমে। চট্টগ্রামকে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীর মর্যাদা প্রদানের ঘোষণাটি যদি প্রতারণামূলক না হয়, তাহলে আর দেরি না করে ঘোষণাটি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করলে এই আঞ্চলিক বৈষ্যমের ইস্যুটি বিপজ্জনক পর্যায়ে উপনীত হতে পারবে না। বাংলাদেশের মতো একটি নব্য–ঔপনিবেশিক অর্থনীতির বাস্তবতা হলো, এখানকার সমাজ ও অর্থনীতির বিভিন্ন স্তরের মধ্যে এক ধরনের কেন্দ্র–প্রান্ত সম্পর্ক কার্যকর থাকার কারণে উদ্বৃত্ত–পাচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়ে গেছে। এ সম্পর্কের কারণেই গ্রাম থেকে শহরে উদ্বৃত্ত পাচার জোরদার হয়; ছোট শহর থেকে বড় শহরে সম্পদ পাচার হয়ে যায়; দেশের যাবতীয় অঞ্চল থেকে রাজধানীতে উদ্বৃত্ত পুঞ্জীভূত হতে থাকে। এ ধরনের অর্থনীতিতে তাই আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসন খুবই জটিল ইস্যু হয়ে দাঁড়াতে বাধ্য। তাই দেশের একটি অঞ্চল হিসেবে যখন চট্টগ্রামের সমস্যা ও সম্ভাবনাকে আলাদাভাবে বিবেচনা করতে চাইবো, তখন দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির এই উল্লিখিত বাস্তবতাটুকুও আমাদেরকে মনে রাখতে হবে। বিশেষত, চট্টগ্রাম বন্দরকে বঞ্চিত করে কিংবা চট্টগ্রাম বন্দরের ফান্ড স্থানান্তর করে পায়রা বন্দর নির্মাণ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে পায়রা বন্দরকে ‘গভীর সমুদ্রবন্দর’ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কয়েক’শ কোটি টাকা ব্যয় করার খামখেয়ালি সিদ্ধান্ত প্রমাণ করেছে যে পুরো ব্যাপারটি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একক ইচ্ছায় ঘটেছিল, এর পেছনে কোন ভাল ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি’ ছিল না। এভাবে পায়রা বন্দরকে জবরদস্তিমূলকভাবে ‘গভীর সমুদ্রবন্দর’ হিসেবে গড়ে তোলার খামখেয়ালীপনা শাসক মহলের চট্টগ্রাম–বৈরী মানসিকতার প্রতিফলন কিনা ভেবে দেখা প্রয়োজন। চট্টগ্রাম বন্দরের পঙ্গুত্ব সমস্যার সর্বোৎকৃষ্ট সমাধান পাওয়া যেতো যদি কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্রবন্দরটি পরিত্যক্ত না হতো। এখন বিকল্প হিসেবে মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে জাপানের সহযোগিতায় যে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে ঐ কাজ ২০২৫ সালে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। আর একটি ভাল বিকল্প হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বঙ্গোপসাগরের তীরে আধুনিক বে–টার্মিনাল, যেখানে প্রায় ১৩ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়তে পারবে। সম্প্রতি বে–টার্মিনাল নির্মাণ কাজে কিছুটা গতি সঞ্চার হয়েছে।
এমতবস্থায়, উন্নয়ন নীতিসমূহের ক্রমবর্ধমান ঢাকা–কেন্দ্রিকতার ফলে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার কেন্দ্রিকরণ চট্টগ্রামের সহজাত সুবিধেগুলোর গুরুত্বকেই লঘুকরণে যেখানে অবদান রেখে চলেছে সেখানে ২০০৩ সালে ঘোষিত ‘বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম’ নিয়ে মাতামাতি অনেকটাই বেফজুল। ইতোমধ্যেই বলেছি, বৃটিশ–ভারতে আসাম–বেঙ্গল রেলওয়ের হেডকোয়ার্টার্স ছিল চট্টগ্রামে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী এক দশক পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়ের সদর দফতরও ছিল চট্টগ্রামেই, কিন্তু এখন তা স্থানান্তরিত হয়েছে ঢাকায়। বাংলাদেশে ৬১ টি বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে, তার একটিরও সদর দফতর কি চট্টগ্রামে স্থাপিত হয়েছে? বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের হেড কোয়ার্টার্স নামকাওয়াস্তে চট্টগ্রামে থাকলেও ঐ প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরা মাসে কতদিন ঢাকায় থাকেন আর কতদিন চট্টগ্রামে থাকেন তার হিসেব নিলে দেখা যাবে প্রকৃতপক্ষে ঢাকার অফিস থেকেই প্রতিষ্ঠানটি চালানো হচ্ছে। কিছুদিন আগেও চা রফতানির একমাত্র নিলাম হতো চট্টগ্রামে, এখন দ্বিতীয় নিলাম হচ্ছে শ্রীমঙ্গলে। চট্টগ্রামের প্রথম সারির ব্যবসায়ী–শিল্পপতিরা চট্টগ্রামে থেকে কি ব্যবসা ঠিকমত পরিচালনা করতে পারছেন? চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এদ্দিনেও একটা ব্যস্ত পুরাদস্তুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে পারল না কেন? বিএনপি–জামায়াত সরকারের সময় যখন চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী ঘোষণা করা হয়েছিল তখনই আমি ২০০৩ সালের মে মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে ঐ ঘোষণা বাস্তবায়িত না হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছিলাম, এবং সত্যিসত্যিই বাস্তবায়ন চাইলে ধারাবাহিকভাবে যেসব পরিবর্তন প্রয়োজন হবে তার জন্যে নিচে উল্লিখিত তালিকাটি প্রদান করেছিলাম:
১) সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সদর দফতর চট্টগ্রামে স্থানান্তর;
২) একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক এবং কমপক্ষে পাঁচটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সদর দফতর চট্টগ্রামে স্থানান্তর;
৩) সকল রাষ্ট্রায়ত্ত ও প্রাইভেট ব্যাংকের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক দফতরকে একজন ডিএমডি’র অধীনে ন্যস্ত করে উচ্চ–ক্ষমতায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ;
৪) সরকারের রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সদর দফতর চট্টগ্রামে স্থানান্তর;
৫) পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রামকে একটি ফ্রি পোর্টে রূপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ;
৬) বন মন্ত্রণালয়, মৎস্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সদর দফতর চট্টগ্রামে স্থানান্তর;
৭) চট্টগ্রামে একটি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ স্থাপন;
৮) বাণিজ্য–সম্পর্কিত মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষমতা দিয়ে চট্টগ্রামে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপন;
৯) প্রস্তাবিত ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামে স্থাপন;
১০) চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে জোরারগঞ্জ পর্যন্ত সমুদ্র–উপকূল দিয়ে চার লেনের একটি বিকল্প মহাসড়ক নির্মাণ;
১১) ঢাকার জয়দেবপুর থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেলপথকে ডুয়াল গ্যাজে রূপান্তর;
১২) কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ;
১৩) চট্টগ্রামের টাইগার পাস থেকে ভাটিয়ারী গলফ ক্লাব পর্যন্ত পর্যটন কমপ্লেক্স নির্মাণ;
১৪) আনোয়ারার পারকীতে সী–বিচ, থীম পার্ক ও হোটেল সহ বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা;
১৫) বাংলাদেশের বাণিজ্য সহযোগী দেশসমূহের ভিসা প্রাপ্তি সহজ করার জন্যে চট্টগ্রামে ঐসব দেশের কনস্যুলেটের ক্ষমতায়ন;
১৬) চট্টগ্রাম বন্দরকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান;
১৭) চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে পরিবাহিত সকল আমদানির ওপর এক শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ অর্থায়নের ব্যবস্থা করা; এবং
১৮) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে ‘সিটি গভর্নমেন্টে’ রূপান্তর।
গত ২১ বছরে ওপরের তালিকার কয়েকটি সুপারিশ বাস্তবায়িত হলেও বেশিরভাগ পরিবর্তন কি অদূর ভবিষ্যতে আদৌ বিবেচিত হবে? কর্ণফুলী নদীর টানেল নির্মাণের পাশাপাশি মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের প্রস্তাবিত প্রকল্প ও তদ্প্রসূত শিল্পায়ন কার্যক্রম চট্টগ্রামকে এতদঞ্চলের দ্বিতীয় সিঙ্গাপুরে পরিণত করায় অবদান রাখবে। কিন্তু, ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়েও এই মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ প্রকল্পটি ঝুলে রয়েছে। ফলে, কর্ণফুলী টানেল ২০২৩ সালে চালু হলেও টানেলের সড়কপথটি বহু বছর স্বল্প–ব্যবỊত থেকে যাবে। এর মানে, চালু হওয়ার পর কয়েক বছর যাবত এই টানেলের আয় থেকে প্রকল্পের জন্য গৃহীত ঋণের কিস্তি পরিশোধ সম্ভব হবে না। আরো দুঃখজনক হলো, জাইকার অর্থায়নে চট্টগ্রাম নগরীর চারপাশে যে চার লেনের ‘রিং রোড’ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে সে প্রকল্পটির কাজও স্থবির হয়ে রয়েছে। অথচ, এই রিং রোডটি চট্টগ্রাম নগরীর যানজট সমস্যার অনেকখানি সমাধান দিতে পারবে। সবশেষে বলব, চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা এবং অমাবশ্যা–পূর্ণিমায় জোয়ারের পানিতে শহরের একাংশ নিয়মিতভাবে ডুবে যাওয়ার সমস্যাটি নিরসনের জন্য যে ড্রেনেজ–কাম–স্লুইজ গেট নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছিল সে প্রকল্পটির কাজও গত কয়েক মাস ধরে স্তিমিত হয়ে রয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার যে চট্টগ্রাম নগরীর সমস্যাগুলো সমাধানে আন্তরিক ছিল না তারই প্রমাণ কি বহন করছে না উপরে উল্লিখিত ব্যর্থতাগুলো? হাসিনার পতনের পর গত ৮ আগস্ট ২০২৪ তারিখে প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। প্রফেসর ইউনূস চট্টগ্রামের সন্তান, চট্টগ্রামের তুলনামূলক বঞ্চনা সম্পর্কে একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ হিসেবে তিনি পুরোপুরি ওয়াকিবহাল। তাই, আমার দৃঢ় আশাবাদ সৃষ্টি হয়েছে যে অদূর ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম তার ন্যায্য হিস্যা ফিরে পাবে।
লেখক : সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়