সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও তাদের স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চার বিষয়টি অভ্যন্তরীণ হিসেবে তুলে ধরে এ নিয়ে অন্য দেশের মন্তব্য সমীচীন নয় বলে ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির কাছে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেছেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন। দুই দেশের মধ্যে আস্থা ফেরাতে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধে ভারতের ভূমিকার প্রত্যাশার কথাও বলেন তিনি। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশে সবাই স্বাধীনভাবে ধর্ম চর্চা করে আসছে তুলে ধরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ বিষয়ে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি এবং অপপ্রচারের সুযোগ নেই। এ নিয়ে দেশে–বিদেশে সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চলার মধ্যে সরকার বাস্তব অবস্থা দেখতে ও পর্যবেক্ষণে বিদেশি সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সফরের আহ্বান জানিয়েছে বলেও তুলে ধরেন তিনি।
ভারতের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) শেষে বিফ্রিং করছিলেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন। তিনি এ বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় আসা বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে সচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তার সৌজন্য সাক্ষাতের আলোচনার বিষয়ে কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এদিন সন্ধ্যায় জসীম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে জুলাই–আগস্ট বিপ্লব এবং বিপ্লব–পরবর্তী সংখ্যালঘুদের প্রতি কথিত বৈরী আচরণ নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে অপপ্রচার, মিথ্যা তথ্য এবং বিভ্রান্তিকর বয়ান রয়েছে, সে বিষয়ে আমরা ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছি। সেই সাথে আমরা এও বলেছি যে, এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের মন্তব্য সমীচিন নয়। আমি এও স্মরণ করিয়ে দিয়েছি যে, বাংলাদেশ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য থেকে বিরত থাকে এবং অন্যান্য দেশেরও একই ধরনের শ্রদ্ধাবোধ আমাদের প্রতি দেখানো উচিত।
এ সময় সচিব পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফ্রি, ফ্রাংক ও ক্যান্ডিড তথা খোলা মনে আলোচনা হয় বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমরা বলেছি, বাংলাদেশের সবচেয়ে নিকটবর্তী প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের নিকট আমরা আমাদের দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সকল অনিষ্পন্ন বিষয়সমূহের দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য ভারতের সহযোগিতা কামনা করি এবং এই লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, আমি দুই দেশের সাধারণ জনগণের ভেতর আস্থা ও বিশ্বাস বিনির্মাণের গুরুত্বের বিষয়ে জোর দেই এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা রোধে ভারতের সক্রিয় ভূমিকা আশা করি।
