বাংলাদেশী স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের মহান বিজয় দিবস উদযাপন

| সোমবার , ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ১:৪৬ অপরাহ্ণ

মহান বিজয় দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে, দেশপ্রেম ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রবুদ্ধ হয়ে নিউজিলান্ডের ক্যান্টারবেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশী স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন (বিএসএইউসি) আয়োজন করে এক আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

অনুষ্ঠানটিতে প্রধান আলোচ্য বিষয় হিসেবে পরিলক্ষিত হয় চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতার গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা, নিরীহ ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ এবং বিজয় অর্জন।
দর্শকদের কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসিত অনুষ্ঠানটির পরিচালনা ও পরিকল্পনা করেন ক্যান্টারবেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই ডঃ শারনালী অতশীতিসি এবং সঞ্চালনা করেন ডঃ এম. মেহেদী হাসান।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন সমিতির বর্তমান সভাপতি ও ক্যান্টারবেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার ডঃ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। তিনি তার জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা, শিক্ষানীতির দুর্বলতা এবং শিক্ষানীতি সংশোধন ও পরিমার্জনের সম্ভাব্য উপায় সমূহ নিয়ে আলোচনা করেন।

ডঃ চৌধুরী তার আলোচনায় বিশেষ করে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানদণ্ড অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগনীতি, শিক্ষকপদোন্নতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সকল ধরণের জাতীয় রাজনীতির প্রভাব স্থায়ীভাবে বন্ধের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানটিতে আরো বক্তব্য প্রদান করেন ক্যান্টারবে রিবিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ মেহেদী হাসান। ডঃ হাসান তার বক্তব্যে বাংলাদেশ পুনর্গঠনে, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলায়, নগর পরিকল্পনায় এবং পরিবেশের স্থায়ী উন্নয়নে বাংলাদেশের যুব সমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অথিতি মুক্তিযোদ্ধা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক গ্রন্থাগারিক খন্দকার ফজলুর রহমানের উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

তার মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা এবং মুক্তিযোদ্ধা হয়ে উঠার পেছনের ইতিহাস দর্শকদের আবেগআপ্লুত করে তোলে।
পরবর্তীতে, বিশেষভাবে সাজানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি”-সমবেত পরিবেশনার মাধ্যমে। এছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অন্তর্ভুক্ত ছিল দেশাত্মবোধক গান, কবিতা আবৃত্তি, একক এবং দলীয় সংগীত। মোঃ আওরঙ্গজেবের শ্রুতিমধুর কণ্ঠে গাওয়া, “মুক্তির মন্দির সোপান তলে, কত প্রাণ হলো বলিদান” গানটিতে ফুটে উঠেছে জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারানো নিরীহ ছাত্র-জনতার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান।

এছাড়াও মনালী আলম ও শম্পা পালমার-এর দৈত পরিবেশনায় “ওমাঝি নাও ছাইড়া দে” এবং ডঃ স্বর্ণালী অতসীতিসি, ইস্পাকুর সিদ্দিকী সৌরভ এবং টপ্পার কণ্ঠে দলীয়ভাবে পরিবেশিত “ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা”-দেশাত্মবোধক গান গুলো দর্শকদের মুগ্ধ করে। চা বিরতির পর ডঃ সাইফুল, রিয়াজ, এবং ডঃ মোহাম্মদ সাগর হোসেনের কবিতা আবৃতি দর্শকদের মন জয় করে।

অনুষ্ঠানের শেষ অংশে, বিএসএইউসি এর পক্ষ থেকে ২০২৪ সালে সদ্য পিএইচডি ডিগ্রী সম্পন্ন করা দুই ছাত্র, ডঃ মোহাম্মদ সাগর হোসেন এবং ডঃ সাঈদ আহমেদের বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠান শেষে সমিতির সভাপতি ডঃ চৌধুরী অনুষ্ঠানটির আয়োজক কমিটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং অনুষ্ঠানের সফল আয়োজনে তাদের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করেন। সবশেষে, সকল অংশগ্রহণকারী এবং অতিথিদের জন্য সমিতির পক্ষ থেকে এক নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়া পৌরসভা আ.লীগ নেতা সাইফুল্লাহ পলাশ গ্রেফতার
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলীতে আওয়ামী লীগ নেতা পেয়ার আহমেদ গ্রেফতার